পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিশোরগঞ্জ শ্ৰীভূপেন্দ্রচন্দ্র লাহিড়ী পাবনার পর ঢাকা, ঢাকাব পর ময়মনসিংহ । বাংল। দেশের একশ্রেণীর মুসলমানদের তীব্র হিন্দুবিদ্বেষ কিশোরগঞ্জে লুণ্ঠন, পীড়ন, নিৰ্ম্মম অত্যাচার এবং আমাতৃযিক বৰ্ব্বরতার মধ্য দিয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছে । ময়মনসিংহের মহকুমাগুলির মধ্যে কিশোরগঞ্জ অন্যতম । ইহার লোকসংগ্য ৮,৬৭,৪২৯ , তাহার মধ্যে হিন্দুর সংপ্যা ১৩১,০৭২, মুসলমানের সংখ্যা ৬৩৫,২১১ । স্বাস্থ্য সমুদ্ধিতে কিশোরগঞ্জের গ্রামগুলি বাংল। দেশের মধ্যে অতুলুনীয় বলিলেও চলে। - কিশোরগঞ্জ হইতে আরম্ভ করিয়া মঠপল। পৰ্য্যন্থ প্রায় পচিশ মাইল দীঘ একটি রাস্ত গিয়াছে । এই রাস্তাকে কেন্দ্র ধরিয়া উভয় পাশ্বে প্রায় দ4 মাইল ব্যাসাদ্ধের মধ্যের সমস্ত গ্রাম গত ১০ই জুলাই হইতে ১৬ই জলষ্টি পৰ্য্যন্ত মুসলমানদের অত্যাচারের লীলাভূমি হইয়াছিল। এই রাস্তায় অগ্রসর হইলে বাংলা দেশের চিরাভ্যস্ত পল্লীদৃশু গুলি চোখে পড়ে । উচ্চ, উৰ্ব্বর জমি, কোন ও কোন ও স্থামে রাস্ত দুই পাশের জমির সমতা অভিন্ন । এই জমিতে আট দশ হাত উচু পাট এবং সুপুষ্ট আপ জন্মিয়াছে। কিছু দূর দূরই রাস্তার পাশে একট বৃহং বট কি অশ্বখ গাছের তলায় ছোট কয়েকখানা কুটার ; এখানে সপ্তাহে এক কি দুই দিন করিয়া হাট বসে । আর একটু ব্যবধানে, হয়ত আট দশ মাইল দূরে দরে এক একটি করিয়া বড় বাজার । এই সকল বাজারে বড় বড় মহাজনের গদী এবং দোকান-পাট । মহাজনের প্রায়ই হিন্দু, পুরুষানুক্রমে সঞ্চয় ও মিতবায়িতার ফলে বৃহং বৃহৎ ব্যবসা গড়িয়া তুলিয়াছে। তাহার আশেপাশের গ্রামের সর্বপ্রকার ব্যবহার্য্য দ্রব্য, দূর দরাস্তরের মোকাম হইতে আনিয়া সরবরাহ করে, আবার গ্রামের কৃষকদের উৎপন্নদ্রব্য বাহিরে চালান দেয় । তাহীদের মধ্য দিয়াই বাংলার অসংখ্য অখ্যাত গ্রামের সঙ্গে এবঃ কলিকাত, ডাণ্ডী, লণ্ডন ও সমস্ত বহির্জগতের সোগসূত্র গড়িয় উঠিয়াছে । এই সকল বাজারকে কেন্দ্র করিয়া চারিদিকে অজস্র ঘনসন্নিবিষ্ট গ্রাম। গ্রামের অধিবাসীরা হিন্দু ও মুসলমান, পুরুষাঙ্গক্রমে নানা স্বগ দুঃখের মধ্য দিয়া বাস করিয়া আসিতেছে। তাহীদের মধ্যে ভেদ, বিরোধ, ঈৰ্ষা, কলহ ছিল না, এমন নহে . কিন্তু তাত। ব্যক্তির সঠিত ব্যক্তির, সম্প্রদায়ের সহিত সম্প্রদায়ের নহে । সম্প্রদায়ের এই দুই প্রতিবেশীর স্নেহপ্রীতি এবং ব্যবস বাণিজ্যের অজস্ব আদানপ্রদানের অস্তরালে এমন সাম্প্রদায়িক আগ্নেয়গিরি উদ্যত হইয়াছিল, তাহ। আগে কে ভাবিয়াছিল ? কি করিয়া হঠাৎ অতকিতভাবে আ গুন জলিয়া উঠিল, তাহার কারণ সঙ্গন্ধে মতভেদ আছে । কেহ বলেন ইহার কারণ শ্রেণীবিদ্বেষ, কেই বলেন ইহা সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক, কেহ বা বলেন ইহার মূল ক্লষকের আর্থিক দুরবস্থায় নিহিত আছে । এই সাম্প্রদায়িক কারণ সস্বন্ধে মতভেদ থাকিলেও এক বিষয়ে সকলেই একমত । এই ব্যাপারের পিছনে অনেক দিনের প্রচার এবং আয়োজন চলিয়াছে এবং তাহার বিষময় ফলের এপন - শেম হয় নাহ ; আরম্ভের কচন দেথা দিয়াছে মাত্র । কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে কিশোরগঞ্জ শহরে "ইয়ং কমরে ৬ লীগ’ নামক একটি কমুনিষ্ট প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হইয়াছিল। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রচারকের ধনী মহাজন ও জমিদারের বিরুদ্ধে প্রকাগু এক প্রচারকার্য্যের স্বচনা করিয়াছিল । বৰ্ত্তমান আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে এই লীগের কার্য্যকারিত। খুব বাড়িয় উঠে । গ্রামে গ্রামে মুসলমান কৃষকদের খুব বড় বড় সভা এই লীগের দ্বারা আহত হয় । তাহাতে বক্তারা তীব্রভাষায় ধনী, জমিদার ও মহাজনের বিরুদ্ধে শ্রোতৃবর্গকে উত্তেজিত করেন। হিন্দুর ইহাতে স্বরাজ আন্দোলনের সহায়তা হইতেছে মনে