পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

しア(rb" ് ബാ করিয়া, কোথাও বা ভয় দেথাইয়া দলিলপত্র বাহির করিয়া লইতে লাগিল । সঙ্গে সঙ্গে লুটতরাজ চলিতে লাগিল । এইরূপে সেদিন কাটিয়া গেল। সে রাত্রে আর সেঅঞ্চলের কাহার ৪ চোখে ঘুম রহিল ন । হিন্দুরা ভয়সন্ধস্ত হইয়া জাগিয়া কাটাইল । মুসলমানরা গ্রামে গ্রামে দলে দলে একত্র হইয় পর দিনের জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিল। রাত্রি শেষ হইতেই তাহীদের ঘন ঘন ‘আল্লা হে আকবর’ এবং কয়েক জন নামজাদ মুসলমানের জয়ধ্বনিতে গ্রামের আকাশ মুখরিত হইয় উঠিল । আগের দিনের সাফল্যে তাহীদের উৎসাহ এবং নিষ্ঠুরত। বড়িয়া গিয়াছে । সকাল হইতেই তাহার দলে দলে হিন্দুদের বাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইতে লাগিল । আজ তাহাদের মূৰ্ত্তি বদলাইয়। গিয়াছে । তাহাদের হাতে লাঠি, সড়কি, দা প্রভৃতি সাঙ্ঘাতিক অস্ত্র, চোপে হিংস্র দৃষ্টি । ভোর হইতেই গ্রামের পর গ্রাম লুষ্ঠিত হইতে লাগিল । হিন্দুরা কেহ সপরিবারে গৃহত্যাগ করিয়া বাড়ীর পাশ্বে জঙ্গলে পলায়ন করিল, অতি অল্পসংখ্যক লোক কোমও কোনও মুসলমানের বাড়ী আশ্রয় লইল । ১১ই জুলাই বেলা ৭ট হইতে ৩টা পয্যন্ত, প্রায় ১০০ বর্গ মাইল স্থান ব্যাপিয়া ১৮ খানি গ্রাম লুষ্ঠিত হইল । ১২ই জুলাইও আক্রমণ বাড়িয়া চলিল। যে-সকল গ্ৰাম লুষ্ঠিত হয় নাই তাহা লুষ্ঠিত হইতে লাগিল । লুষ্ঠিত গ্রামে যে-সকল বাড়ী বাদ পড়িয়াছিল তাহ লুষ্ঠিত হইল। যে-সকল বাড়ী একবার লুষ্ঠিত হইয়াছে, তাহা অার একদল আসিয়া আবার লুণ্ঠন করিল। যেখানে কোনও লুণ্ঠনোপযোগী জিনিষপত্র আর অবশিষ্ট ছিল না, সেখানে গুহের আসবাবপত্র চূর্ণ-বিচূর্ণ করিতে লাগিল, কোথাও গৃহে, আগুন ধরাইয়া দিল । এইরূপে তিন দিন ধরিয়া প্রায় ষাট খানি গ্রামের উপর প্রায় পাঁচশত বর্গ মাইল স্থান ব্যাপিয়া মুসলমান দুৰ্ব্ব ত্তদের তাণ্ডবলীল চলিল ; কেহ রোধ করিল না, কেহ বাধা দিল না ; কেহ একটি অঙ্গুলি উত্তোলনও করিল না,— না গবর্ণমেণ্ট, না হিন্দুর সঙ্ঘবদ্ধশক্তি, না মুসলমানের লুপ্তাবশেষ ধৰ্ম্মবুদ্ধি। প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৭ ്.- -ുക്ക്.-l.-ാ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড --l. -ാ এই বিয়োগাস্ত নাটকের সর্বাপেক্ষ মৰ্ম্মান্তিক ঘটন। ঘটিয়াছে জাঙ্গালিয়া গ্রামে। এই গ্রাম কিশোরগঞ্জ হইতে প্রায় পনের মাইল দূরে অবস্থিত। শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র রায় এখানকার অবস্থাপন্ন তালুকদার ছিলেন । কৃষ্ণবাবু তাহার চরিত্রবল ও দৃঢ়চিত্ততায় স্থানীয় হিন্দু-মুসলমাননিবিবশেষে সকলের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন । তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেণ্ট ছিলেন এবং প্রেসিডেণ্ট হিসাবে বিশেষ প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিলেন । ১০ই জুলাই রাত্রেই কৃষ্ণবাবু চণ্ডীপাশার সংবাদ এবং তৎসঙ্গে পরদিন তাহদের গ্রাম লুষ্ঠিত হইবার সম্ভাবনার কথা অবগত হইয়াছিলেন । পরিবারবর্গকে কিশোরগঞ্জ পাঠাইবার জন্য শেষরাত্রে হোসেনপুর হইতে এক পান। মোটর আনাইয়াছিলেন । কিন্তু মোটরথান আসিবার পর তাহার ইঞ্জিন খারাপ হইয়া যাওয়ায় মোটরখানা অচল হইয়। পড়িল । পরদিন বেলা সাতটার সময় দলে দলে মুসলমান আসিয়া কৃষ্ণবাবুর বাড়ী ঘিরিয়া ফেলিল। কৃষ্ণবাবুর বৃহৎ বাড়ীতে গ্রামের আরও বহু বাড়ীর স্বীপুরুষ আসিয়া আশ্রয় লইয়াছিল। বাড়ীতে ' দুইটি বন্দুক ছিল। কৃষ্ণবাবু একটি বন্দুক নিজে লইলেন, আর একটি র্তাহার অষ্টাদশবর্ষীয় একমাত্র পুত্র স্থবোধ লইল । ইত্য বসরে জনতা আসিয়া বাড়ীর চারিদিকে ঘিরিয়া ফেলিল । কৃষ্ণবাবুর ইউনিয়ন বোর্ডে একজন মুসলমান কৰ্ম্মচারী ছিল। কৃষ্ণবাবু তাহাকে বিশেষ স্নেহ করিতেন । তিনি তাহার বহু উপকার করিয়াছিলেন এবং তিনিই তাহার চাকরি করিয়া দেন। বাড়ীতে বন্দুক থাকিলেও কার্টিজ ছিল মাত্র কুড়ি একুশটি । তাছার মধ্যে আবার বেশীর ভাগই ছররা, বুলেট খুব কমই ছিল। সেজন্য কৃষ্ণবাবুকি উপায়ে জনতাকে শান্ত করা যায় তাহা জানিবার জন্য তাহাকে পাঠাইয়া দিলেন । কিন্তু সে ত আর ফিরিলই না, তাহার হাতে যে গুলিবারুদ বেশী নাই এই সংবাদটি জনতার কাছে গিয়া পৌছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই জনতা তাহার বাড়ীতে ঢুকিয়া আক্রমণ করিল। কৃষ্ণবাবু ও স্থবোধ প্রথমে কয়েকটি