পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কয়েকজন মুসলমান হতাহত হইল। দুৰ্ব্বত্তেরা তখন পিছু হঠিয়া বাড়ীর পাশ্বস্থ মাঠে সমবেত হইল। একটি মোল্লা সেখানে উপস্থিত ছিল । সে জনতাকে উত্তেজিত করিতে লাগিল ৷ এবার যদি তোরা কৃষ্ণবাবুকে জীবিত রাখিয়া যাস, তবে আর ভবিষ্যতে এ গ্রামে টিকিতে পারিবি না ; তোদের মধ্যে যে পলাইবে সে মুসলমান নয়, সে শুওরের ‘লৌ’ ( রক্ত ) খায় । অশিক্ষিত জনতা ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল। তাহার। আবার দলে দলে বাড়ীতে ঢুকিতে লাগিল । আবার গুলি চলিতে লাগিল। কয়েকজন মুসলমান আবার হতাহত হইল । ক্রমে কৃষ্ণবাবুর গুলি কয়টি ফুরাইয়া গেল । একথা বুঝিতে জনতার বেশী দেরি লাগিল না। কিন্তু তাহার হঠাৎ বাড়ীর মধ্যে না ঢুকিয়া খড়ের গাদা হইতে গড় লইয়া একখানির পর আর একখানি ঘরে আগুন ধরাইয়া দিতে লাগিল । সপরিবারে এবং গ্রামের অন্যান্য বহু স্ত্রীপুরুষ আশ্রয় লইয়াছিলেন তাহার চারিদিকে আগুন ধরিয়া উঠিল। তখন ঘরের মধ্যেকার লোকেরা নিরুপায় হইয়া ঘরের দরজা খুলিয়া বাহির হইতে লাগিল। এইবার বৰ্ব্বরেরা তাহদের পাশবিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করিবার সুযোগ পাইল । কৃষ্ণবাবুর পরিবারের এক একজন লোক বাহির হইতে লাগিলেন আর মুসলমানের পৈশাচিক উল্লাসে চীৎকার করিতে করিতে র্তাহাকে শত শত লাঠির আঘাতে হত্যা করিয়া, কুঠারে তাহদের দেহ ছিন্নভিন্ন করিয়া মৃতদেহগুলি ইতস্ততঃ ছুড়িয়া ফেলিতে লাগিল । একে একে কৃষ্ণবাবু, তাহার একমাত্র ছেলে সুবোধ, তাহার ভ্রাতা ও দুইটি ভ্রাতুষ্পত্র, তাহার শ্বশুর এবং বাড়ীর অন্যান্ত কয়েকজন, সৰ্ব্বশুদ্ধ নয়জন নিহত হইলেন। ঘটনার কয়েকদিন পরে আমরা কৃষ্ণবাবুর বাড়ী দেখিতে গিয়াছিলাম। স্ববৃহৎ আঙ্গিনার মধ্যে বড় বড় পনেরখানা পাকা ভিটা পড়িয়া আছে । দগ্ধ টিনগুলি আশেপাশে ইতস্তত: ছড়াইয়া পড়িয়াছে । কয়েকদিন আগে যে এখানে এক জনমুখরিত স্ববৃহৎ পরিবারের আবাসস্থল ছিল, আজ তাহার চিহ্নমাত্র নাই । সমস্ত গৃহের সমস্ত কিশোরগঞ্জ ফাক আওয়াজ করিয়া পরে গুলি ছাড়িতে লাগিলেন । যে ঘরখানির মধ্যে কৃষ্ণবাবু, b (tఫి MMAMMA AM AMAMSMSM SMSMJSAAAAAA AAAA AAAAMMSAS A SAS SSAS SSAS SSAS SSMMSMSJA AMSMA AMAeeAM জিনিষপত্র নিঃশেষে লুষ্ঠিত এবং ভস্মীভূত হইয়াছে। শুধু একখানা ঘরের মধ্যে অৰ্দ্ধদগ্ধ একখানা খাট পড়িয়া আছে । কৃষ্ণবাবু গত মাঘ মাসে র্তাহার ছেলের বিবাহ দিয়াছিলেন, উহ! তাহারই যৌতুকের খাট। কোন অভাগিনী বালিকার বাসরশয্যার এই চরম চিহ্নটুকু তাহার পরম দুর্ভাগ্যের সাক্ষীস্বরূপে বিরাজ করিতেছে । আর আছে কয়েকটি গরু, আগন্তুক পুলিশকৰ্ম্মচারী ও রিলিফকৰ্ম্মীদের মুখের দিকে করুণ নেত্ৰে চাহিয়া থাকে, যেন জিজ্ঞাসা করে এখানে যাহারা ছিল, তাহার কোথায় গেল ? অার একটি প্রভূভক্ত মুসলমান চাকর সেই শ্মশানক্ষেত্রে প্রেতের ন্যায় বিচরণ করে । এই লুণ্ঠন, পীড়ন, নৃশংস অত্যাচারের অন্তরালে কত যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শোকাবহ ঘটনা ঘটিয়াছে তাহার ইয়ত্তা পরলোকগত কৃষ্ণচন্দ্র রায়, তাহার পত্নী ও জ্যেষ্ঠ পুত্র স্থবোধ নাই। যখন দুৰ্ব্বত্তের কৃষ্ণবাবুকে পৈশাচিক উল্লাসে লাঠি মারিতেছিল, তখন তাহার সাধবী পত্নী তাহার