পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] অভিধান هونسb կs গিয়া দাড়াইবে, তাহা বলা যায় না এবং তিনি যে-পথ ধরিয়াছেন সে-পথও যে ঠিক তাহাও বলিতে পারি না । চলস্তিকা ক্রিয়ারূপ প্রকরণে তিঙস্ত পদের সঙ্গেই অসমাপিকা কৃদন্ত পদ দেখাইয়াছেন । ইহা ইংরাজি গ্রামারের অনুকরণ, কিন্তু ব্যাকরণের বিরুদ্ধ। ধাতু হইতে শব্দ গড়িতে গেলে কৃৎ প্রত্যয় করিতে হয়। এইরূপে (১) শব্দ হইতে নূতন শব্দ করিতে হইলে তদ্ধিত প্রত্যয় করিতে হয়, (২) শব্দ হইতে ধাতু গড়িতে গেলে নামধাতু প্রত্যয় করিতে হয়, ৩) আবার ধাতু হইতে ধাতু গড়িতে গেলে শিচ, সন ও যঙ প্রত্যয় করিতে হয়, (৪) আবার ধাতু হইতে শব্দ গড়িতে গেলে কৃৎ প্রত্যয় করিতে হয় । ব্যাকরণের এই চারটি ডাল হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিলে ব্যাকরণের জটিলতা অনেক কমিয়া যায়। ইংরাজিতে অসমাপিকা ক্রিয়া ধাতুরূপের মধ্যে দিয়াছে আর ব্যাকরণে অসমাপিক। ক্রিয় কুংপ্রকরণে দিয়াছে--তিঙস্তে নহে। বাঙ্গালায়ও বোধ হয় তাই করিলে ভাল হইত—অনেক গোলযোগ নিবারণ হইত। চলস্তিকা একটি কাজ করিয়াছেন সেটি আর কেহ করেন নাই—এই কাজটিতে স্বক্ষদৃষ্টির বিশেষ পরিচয় দিয়াছেন। তিনি বাঙ্গলার সমস্ত ধাতুরাশিকে বানান অনুসারে ২০ ভাগে বিভক্ত করিয়াছেন এবং সংস্কৃতে যেমন দশগণের দশরকম রূপ হয় বাঙ্গালায় সেইরূপ কুড়িগণের কুড়িটি রূপ করিয়াছেন- এটা বাঙ্গালা ব্যাকরণে খুব নতুন, আমার বোধ হয় অন্য ব্যাকরণে এইরূপ গণভাগ করিলে সুবিধা হইত—এটা খুব ভাল হইয়াছে। পরবর্তী শান্ধিকের এ গণভাগ লইবেন কি না জানি না, তবে লইলে একটা অতি জটিল জিনিয সোজা হইয়া যাইবে সে বিষয়ে সন্দেহ নাই ! সংস্কৃত ভাযায় সন্ধি একটা বিষম জিনিষ। প্রায়ই সংস্কৃত ব্যাকরণে গোড়ায় সন্ধি দিয়া আরম্ভ করে, পাণিনি কিন্তু সন্ধিকে সকলের শেষে দিয়াছেন। সন্ধিটি উচ্চারণের কথা—শিক্ষাশাস্ত্রের কথা—ব্যাকরণের কথা নয়। কিন্তু একটা বিষয় সকলের চোখে পড়ে না। সন্ধি দুই প্রকার (১) পদান্ত সন্ধি, ও (২) পদমধ্যগত সন্ধি। পদাস্তসন্ধি সংস্কৃতে আছে, বাঙ্গালায় নাই। পদমধ্যগত সন্ধিও বাঙ্গালায় নাই। যে সমাস করা শব্দগুলি আমরা সংস্কৃত হইতে লইয়াছি সেইগুলিতেই আছে। আমরা নূতন করিয়া বাঙ্গলায় যে-সকল সমাস করি তাহাতেও সন্ধি করি না। সুতরাং সন্ধির নিয়ম বরিয়া বাঙ্গলা ব্যাকরণকে ভারী করা ঠিক নয়। যখন পদান্ত সন্ধি নাই তখন ব্যাকরণের গোড়াতেই সন্ধির নিয়ম দেওয়া একেবারে বৃথা। যদি দিতে হয় যেখানে সংস্কৃত হইতে লওয়া সমাসকরা পদ আছে সেইখানে দেওয়াই ভাল-না দিলেও ক্ষতি নাই ; কারণ সমাস ত আবে বাঙ্গালায় হয় নাই, সংস্কৃত অবস্থায় হইয়াছিল। বাঙ্গালায় বিসর্গসন্ধির স্থান কোথায় আমি জানি না, বোধ হয় একেবারেই নাই ; তবে চলস্তিকা ব্যাকরণ নয় অভিধান। অভিশানে-সংস্কৃত, কথা লইয়াও নাড়াচাড়া করিতে হয়, স্বতরাং সংস্কৃত সমাসের ভিতর সন্ধির গোটাকতক স্বত্র করিতেও পারেন। চলস্তিকায় অনেক পারিভাষিক শব্ব দিয়াছেন। অঙ্কের, রসায়নের, ভূগোলের, গণিতের, ডাক্তারীর, কবিরাজীর অনেক রকম পারিভাষিক শব্দ দেওয়া আছে। কড়া পারিভাষিক শব্দ ত চলন্তিকায় থাকিতেই পারে না যাহা চলতি তাহাই থাকিবে। কিন্তু থাকার একটা কথা আছে। রসায়নশাস্ত্রটা আমরা ইংরাজি হইতে লইয়াছি, উহার পরিভাষা আমরা কি ইংরাজিই রাখিব, না, উহার তর্জমা করিয়া লইব । দুইদিকেই গোল। যদি ইংরাজিই রাখি আমাদের উচ্চারণের দোষে সে এমন বিশ্রী হইয়া যাইবে যে তাহকে আর ইংরাজি বলিয়াই টের পাওয়া যাইবে না, আর যদি তর্জমা করিয়া লই আমরা ভিন্ন কেহই বুঝিতে পারিবে না। দুদিকে গোল হইলেও আমার বোধ হয় প্রথমটাই ভাল, আর পৃথিবীতে চলিয়াও আসিতেছে তাই। যে ভাষায় একটা পারিভাষিক শব্দের উৎপত্তি হয় অন্য ভাষায়ও সেই শব্দট। ব্যবহার করে ।