পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জনৈক সাবেক লাটের মিথ্যাবদিতার নমুনা যাহারা জানিয়া শুনিয়া মিথ্যা কথা বলে না, সত্য যাহাদের নিকট উপস্থাপিত করিলে যাহার চোখ বুঝিয়৷ থাকে না, তাহাদের সঙ্গে তর্ক করা চলে। কিন্তু যাহারা ইচ্ছা করিয়া অন্ধ, অথবা–তার চেয়েও খারাপ— চোখ খুলিয়া রাখিয়া সাদাকে কাল ও কালকে সাদা বলে, তাহাদের সহিত তর্কযুক্তি পণ্ডশ্রম মাত্র। তাহাদিগকে নিরস্ত করিবুর একমাত্র উপায় বিরুদ্ধশক্তি প্রয়োগ দ্বারা তাহাদিগকে শক্তিহীন করা । আমরা অহিংসাব্ৰতী বলিয়া অবশ্ব কেবল অহিংসশক্তি প্রয়োগেরই সমর্থন করি । জাগ্ৰা-অযোধ্য প্রদেশের একজন সাবেক লাট লর্ড মেস্টন বিলাতী সেই দলের লোক যাহারা সাদাকে কাল ও কালকে সাদা বলিতে সমর্থ । ভারতবর্ষের বর্তমান অশান্তির কারণ সম্বন্ধে এই সাবেক লাট-পুঙ্গব কণ্টেম্পেরারী রিভিউএর আগষ্ট সংখ্যায় একটি প্রবন্ধ লিথিয়াছেন। তাহার এক জায়গায় তিনি বলিতেছেন— “Our offence is not this or that political formula, but our whole democratic conception of national life. Any project which ...promises to fasten that conception on India will be fought with every available weapon-reason, unreason, polished expostulation, , revolutionary, violence. For , what faces us in India now is nothing loss than orthodox Hinduism, at bay; . Its power and its ingenuity are equally fortnidable; and we have to make up our minds whether we are to yield or to join igatio,” তাৎপৰ্য্য। এই বা ঐ রাজনৈতিক সুত্র আমাদের অপরাধ নহে। জাতীয় জীবন সম্বন্ধে আমাদের সমগ্র গণতান্ত্রিক ধারণাই অামাদের অপরাধ। যে-কোন পরিকল্পনা ঐ ধারণাকে ভারতবর্ষের ঘাড়ে চাপাইরা দিবে বলিয়া মনে হইবে, তাহারই বিরুদ্ধে সর্ববিধ অধিগম্য

  • >

অস্ত্র স্বারা যুদ্ধ করা হইবে ; যথা---বুদ্ধি, অপবুদ্ধি, মার্জিত অনুযোগ বা বাদামুবাদ, বৈপ্লবিক দৌরাত্ম্য। কারণ, এখন যাহা ভারতবর্যে [বিরোধীভাবে আমাদের সন্মুখীন, তাহা কোণঠাসা নিরুপায় অথচ আমাদের সঙ্গে মুখোমুখি দাড়াইতে বাধা গোড়া হিন্দুয়ানী। ইহার শক্তি ও ইহার চাতুর্য্য সমান ভয়াবহ ; এবং আমাদিগকে এখন স্থির করিতে ក្ញុំ}} } হইবে, যে, আমরা ইহার নিকট হার মানিব, না ইহার বিরোধিতা করিব।” মেস্টন এদেশে সাধারণ সিবিলিয়ান ছিলেন ; দীর্ঘ কাল চাকরী করিয়া শেষে আগ্রা অযোধ্য প্রদেশের শাসনকৰ্ত্ত হন । সুতরাং অজ্ঞতা তাহার মিথ্য উক্তির কারণ নহে । তিনি জানিয়া শুনিয়া ভারতবর্ষ সম্বন্ধে অজ্ঞ বিলাতী জনসাধারণকে ভ্ৰমে ফেলিবার জন্য মিথ্যা কথা লিখিয়াছেন। এই জন্য র্তাহার অপরাধ অমার্জনীয়। তিনি বলিতে চান, ব্রিটেন ভারতবর্ষে গণতন্ত্র অর্থাৎ ভারতীয় সমুদয় লোকদের প্রভূত্ব স্থাপন করিতে চান, কিন্তু গোড়া হিন্দুয়ানী তাহাতে বাধা দিতেছে ; ইহাই অশান্তির কারণ । ইহার প্রত্যেকটা কথাই মিথ্যা । ভারতীয় সকল প্রধান রাজনৈতিক দলের লোকের গণতন্ত্র চাহিতেছে, স্বরাজ চাহিতেছে ; তাহদের মধ্যে মতভেদ অবাস্তর বিষয়ে, মূল বিষয়ে সকলে একমত। স্বরাজের বিরোধিতা করিতেছে ভারতপ্রবাসী ও বিলাতী ইংরেজরা এবং তাহাদের গোলাম কতকগুলি ভারতীয় । ইংরেজরা নিজেদের প্রভুত্ব ও বাণিজ্যপ্রাধান্য রক্ষা করিতে চায়, কোন প্রকার ভারতীয় গণতন্ত্র চায় না । অশান্তি ঘটিয়াছে কিসের জন্য ? কংগ্রেস সত্যাগ্ৰহ করিয়াছে বলিয়া। কংগ্রেস কি চায় ? পূর্ণস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র চায়,এবং সাবালক পুরুষ ও স্ত্রীলোক মাত্রকেই ধনীদরিদ্র শিক্ষিত নিরক্ষর নিবিশেষে প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচনের ক্ষমতা দিতে চায়। কংগ্রেস হিন্দু মহাসভা নহে, যে, সত্যাগ্রহকে গোড় হিন্দুদের হুই অশান্তি বলিবে ; বরং ংগ্রেসে হিন্দু মহাসভার কোন কোন বিষয়ে মতভেদ আছে। হিন্দুদের ভারতধৰ্ম্ম মহামণ্ডল আছে, সনাতনধৰ্ম্ম মহাসভা আছে। তাহাদেরও সহিত কংগ্রেস অভিন্ন ব৷ একমত নহে ।