পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা] বিবিধ প্রসঙ্গ—রাষ্ট্রীয় প্রগতির হিংস্র ও অহিংস পন্থা నిని محمحمہییے রাষ্ট্রীয় প্রগতির হিংস্র ও অহিংস পন্থা কোন পত্রিকাসম্পাদক যদি বলেন, স্বরাজ লাভের জন্য হিংস্র পন্থা অবলম্বন করা উচিত, তাহা হইলে डैशत्र শাস্তি হইবে। আবার তিনি বা অন্য কোন সম্পাদক যদি বলেন, ঐ উদ্দেশ্বে সত্যাগ্রহ বা নিরুপদ্রব আইনলঙ্ঘন পন্থা অবলম্বন করা উচিত, তাহা হইলেও তাহার শাস্তি হইবে । প্রেস-সম্পৰ্কীয় অর্ডিন্যান্সে হিংস্র ও অহিংস উক্ত উভয় উপায়কে কতকটা একই শ্রেণীতে ফেলা হইয়াছে। এইজন্ত হিংস্র পস্থা হইতে কাহাকেও নিবৃত্ত করিবার নিমিত্ত, কোনও সম্পাদক তাহাকে অহিংস সত্যাগ্রহের শ্রেষ্ঠতা বুঝাইবার চেষ্ট নিশ্চিন্ত মনে করিতে পারেন না। যদি এমন আইন হয়, যে, মদ ছাড়াইবার জন্ত কাহাকেও ঘোলের শরবৎ খাইতে বলিতে পরিবে না, অডিন্যান্সটা কিয়ৎপরিমাণে সেইরূপ। অবশু, উপমান ও উপমেয়ে সম্পূর্ণ মিল নাই। কেন-ন, কাহাকেও মদ ছাড়িতে বলিলে অডিন্যান্সের পিকেটিং-সম্পৰ্কীয় ধারার কবলে পড়িতে হইতে পারে বটে, কিন্তু শুধু শরবৎ পান করিতে বলিলে বোধ করি কোন আইন লঙ্ঘিত হয় না। যাহা হউক, হিংস্র পন্থার নিন্দ অবাধে ও অকপটভাবে করা যাইতে পারে। হিংস্র পন্থার বিরুদ্ধে আমরা আগে আগে অনেক কথা লিখিয়াছি। এখন আবার হিংস্র পন্থার বিরুদ্ধে কিছু বলিবার কারণ, সম্প্রতি পুলিসের উচ্চ ও নিম্নপদের কয়েকজন কৰ্ম্মচারীকে মারিবার জন্য বোমা ও গুলি ছোড়া হইয়াছে। ইহাতে বুঝা যাইতেছে, দেশে এমন কতকগুলি লোক আছে যাহারা স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া কিম্বা গুপ্ত উত্তেজক চরের প্ররোচনাবশতঃ এইরূপ গৰ্হিত কাজ করিতেছে । এইরূপ অবৈধ কাজ করিবার কারণ নানা রকম হইতে পারে। ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত প্রতিহিংস চরিতার্থ করিবার জন্য কেহ ইহা করিতে পারে, কিম্বা কাহাকেও কোন লোকসমষ্টির পক্ষে আশঙ্কার কারণ অনুমান করিয়৷ ইহা করিতে পারে, অথবা সরকারী লোকদের মনে ভয় উৎপন্ন করিয়া স্বাধীনতা লাভ করিতে পারা যায় এইরূপ ধারণাবশতঃ কেহ কেহ এইরূপ কাজ করিতে পারে। এইরূপ অনুমান বা ধারণ কোনস্থলেই বিন্দুমাত্ৰও সত্য কি মিথ্যা, তাহার সহিত আমাদের এই আলোচনার কোন সম্পর্ক নাই । সকল দেশেই অসভ্যতার যুগে যখন আইন আদালত ছিল না, তখন কেহ কাহারও দৈহিক বা অন্যবিধ অনিষ্ট করিলে অনিষ্টকারীকে শাস্তি দিবার ভার অত্যাচরিত উৎপীড়িত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তাহার আত্মীয়গণ লইত, এবং কেহ সাধারণভাবে অত্যাচারী মনে হইলেও তাহার শাস্তির জন্তও ব্যক্তিগত বা দলগত চেষ্ট হইত। কিন্তু সভ্যতার প্রগতিক্রমে যখন হইতে সভ্যদেশসমূহে আইন আদালত প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, তখন হইতে শাস্তি দিবার ভার ব্যক্তির বা দলের হাত হইতে রাষ্ট্রের হাতে গিয়াছে, এবং তাহা ভালই হইয়াছে। শাস্তি দিবার ভার রাষ্ট্রের হাতে যাওয়ায় সকল রকমুের সব অনিষ্টকারীর দণ্ড সব স্থলে হইয়া থাকে; কিম্বা’ যাহাদের দণ্ড হয় তাহারা সবাই দোষী, অথবা কেবল দোষীদেরই দণ্ড হয়, এমন নয়। কিন্তু, তাহা হইলেও, লোকস্থিতির জন্য, আইনের সাহায্যে আদালতের দ্বারা বিচারের পর যথাযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থাই শ্রেষ্ঠ । আইনের ও আদালতের দোষে যদি অনেক নিরপরাধ লোকেল শাস্তি হয় এবং অনেক তুষ্টের শাস্তি হয় না দেখা যায়, তাহ হইলে শাস্তি দিবার ভার নিজেদের হাতে না লইয়া আইনের ও আদালতের পরিবর্তন ও উন্নতির চেষ্টা করাই বিহিত। আইন আদালতের দোষক্ৰটিৰশতঃ যে-সব অপরাধীর শাস্তি হয় না, তাহীদের শাস্তির ভার বিশ্বের নিয়মের উপরও অপিত হইতে পারে। ব্যক্তিগত বা দলগত প্রতিহিংসার রীতিতে যে-সব দোষত্রুটি ঘটে, তাহার আলোচনা বা উল্লেখ খুব সংক্ষেপে করা যায় না। ইহাও এখানে উল্লেখ করা দরকার, যে, দুষ্টের চারিত্রিক উন্নতিসাধন তাহাকে শাস্তি দিবার প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, শাস্তিতত্ত্বজ্ঞদিগের মধ্যে এইরূপ মত প্রচলিত হইতেছে । সেইজন্য অনেক দেশে প্রাণদণ্ডের ব্যবস্থা উঠিয়া যাইতেছে। শাস্তি দিবার সরকারী ব্যবস্থা যখন প্রাণদণ্ডের বিরুদ্ধে যাইতেছে, তখন তাহার বেসরকারী কোন উপায় সভ্যজগতের মতের গতির