পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| ২য় সংখ্যা ] কাৰ্য্যভেদে ক্রমে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশু, তিন জাতি গঠন করিলেন। তিন জাতিই আৰ্য্যবংশ-সস্তৃত বলিয়া ইহাদের মধ্যে প্রথমে বিবাহ বন্ধ হইল না। আদিতে তেমন বাধাবাধি রকমে জাতিভেদ না থাকিলেও, ক্রমে বংশপরম্পরায় নিজেদের জাতিগত ব্যবসায় চলিতে লাগিল ও এক-ব্যবসায়ী লোকদের মধ্যে লিবাহাদি বেশী চলিতে লাগিল । ক্রমে জাতিভেদ পাকা হইল। এদিকে অনার্য্যবংশীয়েরা দাস, দম্য নামে পরিচিত হইতে লাগিল । তাহারা অনার্য্যদের দ্বারা বিজীত হইয় তাহাদের সেবায় নিযুক্ত রহিল, শূদ্র জাতির উৎপত্তি হইল। উচ্চ শ্রেণীর পুরুষেরা যে তাছাদের কন্যা গ্রহণ করিতে লাগিলেন না, তাহা নয়। তখন করিয়াছেন—এখনও, মাত্রাজ প্রদেশে যদি আপনার গমন করেন, তাহা হইলে স্থানে স্থানে দেখিতে পাইবেন যে, ব্রাহ্মণের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰই কেবল ব্রাহ্মণকন্ত গ্রহণ করিতেছেন—অন্ত সন্তানের অন্ত জল-আচরণীয় জাতির কন্তা গ্রহণ করিয়া বাস করিতেছেন । বাঙ্গালা দেশেও এই শূদ্রকন্যা গ্রহণ একেবারে লোপ পাইয়াছে—তাহ কেহ মনে করবেন না । আমি চট্টগ্রামে যখন ছিলাম, তখন Gait isoto Bengal Census Report, 1901, পাঠ করিয়া ও স্থানীয় ভদ্রলোকদের নিকট অনুসন্ধান করিয়া জানিতে পারিয়াছিলাম যে, সে প্রদেশে “ফলজল্যা” নামে এক প্রকার বিবাহ প্রচলিত আছে । সন্ত্রাস্তবংশের লোকের নিম্নশ্রেণীর অবিবাহিত দাসী আনিয়া বাড়ীতে রাখেন। এই দাসীরা বাড়ীর কর্তার পায়ের হাটুতে বা গলায় একছড়া ফুলের মালা ও জল দিয়া বরণ করিলে তাহাদের বিবাহ কষ্টয়া গেল । তাহাদের যে সন্তান সন্ততি হইবে, তাহার। সেই বাড়ীর কর্তাদের উপাধি গ্রহণ করিয়া থাকে। যিনি আমাকে এই সংবাদ দেন, তিনি নিজে “ঘোষ” বংশসস্তৃত, তাহাদের রীতিতে এই সব দাসীপুত্র “ঘোষ” উপাধি গ্রহণ করিয়াছে। কায়স্থ বা বৈদ্যের ঘরে এই দাসীপুত্রেরা শূদ্রনামে পরিচিত। ব্ৰাহ্মণের ঘরে সস্তানের "ব্রাহ্মণ ডিঙ্গর” নামে পরিচিত হয়। তবে ক্রমে এই প্রথা প্রায় লোপ পাইয়াছে। পূৰ্ব্ব বাঙ্গালায় যে সিকদার বা গোলাম কায়স্থ নামে এক জাতি গঠিত হইয়াছে—তাহার উৎপত্তি এইরূপ

  • ৰাঙ্গাল স্যাসনালিটি”

)*6 বলিয় Risley, Gait প্রভৃতি পণ্ডিতেব মনে করিতেছেন। আপনার যদি উড়িষ্যায় যান, তাহা হইলে সাগরপেষা নামে এইরূপ একশ্রেণীর লোক পাইবেন । নেপালেও সন্ত্রান্ত লোকদের বাড়ীতে যে সব “কেট” (Kati) দাসী রক্ষিত হয়, তাহাদেরও সস্তানদের এইরূপ অবস্থা । আমি এই সব কথার উল্লেখ করিলাম এই জন্য যে, ইঙ্গ হইতে আপনার জানিতে পারিবেন, যে প্রথার কথা আমরা মনুসংহিতাতে পড়িতেছি, তাহা আজিও বর্তমান আছে । ইহা দেখিলে আর একটী কথাও বোধ হয় আপনার সহজে বুঝিতে পারিবেন—-কেমন করিয়া এই আর্য্য ও অনার্য্যবংশ ধীরে ধীরে মিশিয়। গিয়াছে । যদি মানহানির সম্ভাবনা না থাকিত, তাহা হইলে আমি নাম করিয়া বলিতে পারিতাম যে, এইরূপ দাসীপুত্রের অর্থ ও পদমৰ্য্যাদা পাষ্টয়া এবং ক্রমে কায়স্তু ও বৈদ্যবংশে পুত্রকষ্ঠার বিবাহ দিয়া, ঐ দুই জাতিতে গৃহীত হইয়াছেন। wfool of No. Theory of mixed castes কি, তাহার আলোচনা করিলাম। কেহ কেহ বলিবেন, ইহা theory কি, ইহা যে fact । প্রকৃত ঘটনা দেখিয়াই র্তাঙ্গর লেখা। এ কথা বোধ হয় কেহ বলিবেন না যে, যখন মনু তাছার সংহিতা লেখেন, তখনই এই সব মিশ্রজাতিগুলি সংগঠিত হুইতেছিল । বরং ইহাই ঠিক যে র্তাঙ্গর সময়ের পূৰ্ব্বে বৌধায়ন, অপষ্টন্ত প্রভৃতি শাস্ত্রকারের এই বিষয়ে যাহা লিখিয়াছিলেন, তিনি তাহা গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং নিজেও তাহার উপর নূতন কিছু কিছু যোজন করিয়া রাখিয়া গিয়াছেন। কোন কার্য্যের কারণ অমুসন্ধান করা অতি কঠিন কাৰ্য্য, সম্পূর্ণভাবে কৃতকাৰ্য্য হওয়া প্রায়ই ঘটে না । তাহার উপর সামাজিক বিষয়ে কোন কারণ অনুসন্ধান করা আরও কঠিন । এ অবস্থায় জতিভেদের উৎপত্তির কারণ জানিতে যে কেহ কৃতকাৰ্য্য হইবেন, তাহা আমরা বলিতে পারি না। Inorganic Worldএর ভিতর যে সব নিয়ম চলিতেছে, তাহাদেরই কার্য্যকারণ সম্বন্ধে আমাদের আজিও ভাল করিয়া ধারণা হইতেছে না—তাহার উপর মানবসমাজ, যাক মানবের স্বাধীন চিন্তার উপর নির্ভর করিতেছে,—ভিন্ন ভিন্ন