পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

`ඵදි সংকলন ও সমালোচন সূফীমতজ্ঞ কাশফুল মাজুব অর্থাৎ রহস্ত প্রকাশ নামক পারসী গ্ৰন্থখানি সুফীমতের প্রাচীন ইতিহাসের একটা প্রামাণিক পুস্তক। আলী বিনু উগ্ৰমান আল জুল্লাবী আল তজীর এই গ্রন্থের রচয়িতা। তিনি পঞ্চম জিঞ্জিরাব্দের লোক। এক সময়ে স্থখন তিনি মুলতান জেলায় লহাবারে বন্দী ছিলেন তখনই পূৰ্ব্বোক্ত পুস্তকখানি রচনা করিয়াছিলেন। তিনি মুন্নিসম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন। তথাপি অন্তান্ত স্বফীদের দ্যায় তিনি প্রচলিত মুসলমান-ধৰ্ম্মমতের সহিত সুফীধৰ্ম্মরহস্তের সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করিয়াছেন। তাহার প্রচারিত ধৰ্ম্মতত্ত্বে যদিচ নিৰ্ব্বাণ মুক্তির উল্লেখ আছে তথাপি তিনি চূড়ান্ত নিৰ্ব্বাণবাদী ছিলেন না। ঈশ্বরের সত্তার মধ্যে মনুষের স্বাতন্ত্র্য সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা যাইতে পারে এই মতের বিরুদ্ধে তিনি দৃঢ়ভাবে আপত্তি প্রকাশ করিয়াছেন। তিনি অগ্নি দ্বারা দগ্ধ হওয়ার সহিত মুক্তির তুলনা করিয়াছেন । লোঙ্গকে আগুনে পোড়াইলে তাহা যেমন উজ্জ্বলতা উত্তাপ প্রভৃতি অগ্নির গুণ ও সাদৃশু লাভ করে অথচ আপনার স্বতন্ত্র সত্তাকে হারায় ন—মুক্তির দ্বারাও আত্মা সেক্টরূপ পরমাত্মার সাদৃশু প্রাপ্ত হয় কিন্তু আপনার স্বরূপকে বিলুপ্ত করে না। সঙ্গীত কীৰ্ত্তনাদির সাহায্যে দশা পাওয়া ও স্ত্রী পুরুষের প্রণয় ব্যাপারকে আধ্যাত্মিক রূপক স্বরূপে ব্যবহার করা সম্বন্ধেও তিনি বিশেষ সতর্ক ছিলেন । তাহার গ্রন্থ পাঠ করিলেই জানা যায় যে তাহা দার্শনিকতত্ত্ব ও বিচারপ্রধান গ্রন্থ। এই গ্রন্থে স্বকীমতের যেরূপ ব্যাখ্যা করা হইয়াছে, তাহার সহিত সনাতন ইসলাম ধৰ্ম্মমতের সম্পূর্ণ সঙ্গতি আছে এ কণা কোনো মতেই বলা যায় না। . এই গ্রন্থে “সুফী-সম্প্রদায়গুলির ভিন্ন ভিন্ন মত” শীর্ষক চতুর্দশতম অধ্যায়টি বিশেষভাবে ঔৎসুক্যজনক। ইহাতে _a_ধৰ্ব্ব ইতিহাস জালোচনার আন্তর্জাতিক সভায় পঠিত প্রবন্ধ कहेरठ गकणिख । প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড SAASAASAASAASAASAASAASAAASSAASAASAASAASAASAASAASAAAS----------------- গ্রন্থকার সূফীদের দ্বাদশট শাখার বিশেষ মতগুলির বর্ণনা করিয়াছেন। ইঙ্গাদের মধ্যে দশটাকে তিনি প্রশংসাযোগ্য বলিয়াছেন ও অপর দুইটাকে ধৰ্ম্মবিরুদ্ধ বলিয়া নিলা করিয়াছেন। দশট প্রশংসিত শাখার মত এক, কেবল তাঙ্গদের সাধনা স্বতন্ত্র। সূফীতন্ত্রের প্রশংসিত শাখা দশটর মধ্যে “ঙ্গরিং আল মঙ্গশিবির" শাখাটাই সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন। আল হজবীরী বলেন, “রিদা” অর্থাৎ ঈশ্বরের ইচ্ছার নিকট আত্মসমর্পণকে মহাশিবি “হাল” বলিয়া গণ্য করেন, “মকাম” বলিয়া স্বীকার করেন না, ইহাই তাহার বিশেষত্ব । সুফীধৰ্ম্মে কাহাকে “মকাম” ও কাহাকে “হাল” বলে তাহা নিম্নে বিবৃত হইতেছে। ঈশ্বরের সহিত মিলিত হওয়ার পথে সাধককে যে যে অবস্থার মধ্য দিয়া যাইতে হয় তাহারই এক একটী অবস্তাকে এক একটা “মকাম” বলে । প্রথম অনুতাপের অবস্থা, দ্বিতীয় ত্যাগের অবস্থা, তৃতীয় ঈশ্বরে বিশ্বাস স্থির হওয়ার অবস্থা ষ্টত্যাদি । এই সকল অবস্থা নিজের চেষ্টা বা সাধনার দ্বারা লভ্য। কিন্তু সেই বিশেষ দশাকেই “হাল” বলা হয় যাহা সাক্ষাৎ সম্বন্ধে ঈশ্বর হইতে মনুষ্যের অন্তঃকরণে অবতীর্ণ হয় এবং মনুষ্যের চেষ্টা যাকাকে আকর্ষণ করিতে অথবা প্রতিহত করিতে পারে না । ইহা এক প্রকার ঈশ্বরপ্রেরিত অপার্থিব আনন্দ, ইঙ্গর আবির্ভাবে মনুষের অহং চৈতন্ত সম্পূর্ণ ভাবে বিলুপ্ত হয়। অন্য স্বকী-গুরুর বলিয়৷ থাকেন এক্ট “কাল” একটী স্থায়ী দশা কিন্তু “মহাশিবি” তাহা স্বীকার করেন না এবং তিনি বলেন যতক্ষণ এই “হাল” অভ্যস্ত ও নিত্য হইয়া না যায় ততক্ষণ তাহার গৌরব অধিক নহে। কাসসারি শাখাটী “মলামৎ” মতের জন্য প্রসিদ্ধ। এই মতের নামানুসারেই এই মতামুবৰ্ত্তাদিগকে “মলামতী” বলা হয় । “মলামৎ" শব্দের অর্থ “নিন্দা” । কোন একজন সাধু ব্যক্তি যখন এরূপভাবে কাৰ্য্য করেন যে তাহার কার্য্যের প্রকৃত উন্ধেগু বুঝিতে না পারিয়া লোকে তাহার নিন্দ করে সুকীদিগের মতে তাছাকেই “মলামং” বলে । প্রতিবেশীদের নিকট শ্রদ্ধা ভক্তি লাভ করিতে করিতে সাধুতা-অভিমানের পাপ পাছে চিত্তকে স্পর্শ করে এই