পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>S)8 শব্দের ব্যাখ্যাকালে বলিয়াছেন “মানবিক দীনতা হইতে মৃত্যু ও ঐশ্বরিক ধ্যানের মধ্যেই জীবন সাধন করা—অর্থাৎ এমন সম্পূর্ণভাবে সমাধি লাভ করা যাচাতে ঈশ্বরের সেবক নিজের কোন কৰ্ম্মকে আর নিজের বলিয়া অনুভব করিতে না পারেন, সমস্তকেই ঈশ্বরের বলিয়া জানেন-ইহাকেই বলে ফন ।” থিয়সফিকাল সভার পত্রিকায় জনৈক মুসলমান লেখক স্বফীমত সম্বন্ধে যে আলোচনা করিয়াছেন তাহার কিয়দংশ আমরা উপরি লিখিত প্রবন্ধের পরিশিষ্টস্বরূপ নিম্নে সংকলন করিয়া দিলাম । কেহ কেহ বিশ্বাস করেন যে স্বফীতন্ত্র একপ্রকারের অদ্বৈতবাদ,—অর্থাৎ তাঙ্গর মতে, জগৎ ঈশ্বরেরই প্রকাশ এবং তাহাতে “অদ্‌” বা জীবের কোন স্থান নাই। কিন্তু এষ্ট জীবের সত্যত স্বীকার না করিলে ইসলাম ধৰ্ম্মের সমস্তই একেবারে ভিত্তিহীন হইয়া ভূমিসাৎ হইয়া যায়। কারণ মহম্মদ পুনঃপুনঃ আপনাকে ঈশ্বরের জীব ও দূত বলিয়া প্রচার করিয়াছেন । কোন কোন সুফীতত্ত্বজ্ঞানী সমাধির অবস্থায় “আমিই সত্য !” “হে বরণ্যে আমার মহিমা কি বিপুল !” ইত্যাদি বলিয়াছেন বটে কিন্তু সম্ভবতঃ তাহার গভীর অর্থ বিশুদ্ধ সোহহংবাদমূলক নহে। বস্তুতঃ সূফীরা যেমন ঈশ্বরের বিশ্বাতীত ভাবকে স্বীকার করে তেমনি তাহার বিশ্বরূপকেও বিশ্বাস করে । কোরানে আছে “প্রকৃতই ঈশ্বর তোমাকে বেষ্টন করিয়া আছেন”, “তুমি যেখানেই থাক ঈশ্বর তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছেন”, “ঈশ্বর পূৰ্ব্বে আছেন পশ্চিমে আছেন যেদিকে তুমি মুখ ফিরাও সেইদিকেই তাহার মুখ রহিয়াছে”—এই পদগুলি ঈশ্বরের বিশ্বাতীত ভাব প্রকাশক । আবার, “ তিনি তোমার নাড়ী অপেক্ষাও নিকটে আছেন”, “তিনি একেবারে তোমার নিজত্বের ভিতরে রহিয়াছেন কিন্তু তুমি তাহাকে দেখিতে পাও না” ইত্যাদি শ্লোকে ঈশ্বরের বিশ্বানুপ্রবিষ্ট ভাবকে প্রকাশ করে । ইসলামধৰ্ম্মে জীবের সত্তাকে সৰ্ব্বত্রই স্বীকার করিয়াছে। এই ধর্মের প্রবর্তক নিজেকে কখনই পূর্ণলতা বা ঈশ্বরের অবতার বলিয়া ঘোষণা করেন নাই। এক পরমেশ্বর ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নাই, এবং মহম্মদ তাছার জীব ও छूड हेशहे ऊँीशञ्च शटपॉब भ्रूण अङ्ग । প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড স্বফী কবিদের কাব্য হইতে বুঝা যায় যে র্ত্যহাদের মতে পরম পুরুষের জ্ঞানের মধ্যেই “অবদ” বা জীবের সত্যত চির বিরাজিত। কিন্তু তাহার প্রকাশ নিত্য পরিবর্তমান । “জৎ” অর্থাৎ ঈশ্বরের স্বরূপ নিত্য ও অপরিবর্তনীয় । জ্ঞান, জ্যোতি, সত্তা এবং প্রকাশ এই চারিট র্তাঙ্গর মুখ্যগুণ । বাক্য, শ্রুতি এবং দৃষ্টি আরও এই তিনটা গুণকে এই সঙ্গে ধরা হয়। এই সাতটা মুখ্যগুণ—ইহা হইতে অন্তান্ত অসংখ্য গুণের উদ্ভব । তাহার স্বরূপে তাহার গুণ আশ্রিত । স্বরূপ অপরিবর্তনীয় ; গুণ মুহুর্তে মুহূর্তে পরিবর্তনশীল। গুণ হইতে “ইসম” অর্থাৎ নামের উৎপত্তি। বাক্য যাহার গুণ ; বক্তা তাহার “ইসমৃ” অর্থাৎ নাম। জগৎ ঈশ্বরের নামেরই প্রকাশ । কিন্তু নাম (ইসমৃ কথনে রূপ (রস্ম্)ব্যতীত প্রকাশ পাইতে পারে না । ঈশ্বরের জ্ঞানের মধ্যে জীবের যে রূপ আছে তাহাঙ্ক রসম্। ঈশ্বর যখন আপনাকে দয়াময় (রহিমৃ ) বলিয়া জানেন, তখন, সঙ্গে সঙ্গেই আপনার জ্ঞানে “মবৃহম” অর্থাৎ দয়ার পাত্রের সত্যত উপলব্ধি করেন । “দয়াময়" নামটী “দয়ার পাত্ৰ” নামক রূপের যোগে প্রকাশিত। এই নাম ও রূপের মধ্যে কালের ক্ষণমাত্র ব্যবধান নাই । জীব মুক্তিসাধনার দ্বারা নিজের চিন্তার মধ্যে নিজের নাম রূপ ক্রমে ক্রমে বিলুপ্ত করিতে করিতে উদ্ধে উঠিতে থাকে—এইরূপে সে নিজের বিশেষত্ব বিলীন করিয়া দেয় । কিন্তু ঈশ্বরের জ্ঞানের মধ্যে প্রত্যেক জীবের যে বিশেষত্ব আছে তাছা নিত্য—তাহা জীবের সাধনার দ্বারা লুপ্ত হইতে পারে না। এইরূপে মুক্তিসাধনায় জীব নিজের দিক দিয়া নিজেকে লয় করে—কিন্তু ঈশ্বরের দিক দিয়া তাহার লয় নাই—সেইখানে ঈশ্বরের মধ্যে জীব আপনার বিশুদ্ধ নিত্যরূপটি লাভ করিয়া মুক্তি প্রাপ্ত হয়। সেই অবস্থায় মানুষ বলিতেও পারে যে, আমিই সত্য । མི༽ ༔-— জৈনধৰ্ম্ম-তত্ত্ব • জৈনধৰ্ম্মকে যনি তাহার চরম পরিণতি দান করিয়া গিয়াছেন সেই তীর্থঙ্কর মহাবীর মগধে জন্মিয়াছিলেন । ভারতবর্ষের এই প্রদেশেই, উপনিষদের মতানুসারে, যাজ্ঞবল্ক্য,

  • ধর্ণইতিহাসের আন্তর্জাতিক আলোচনা-সভার অধ্যাপক জাকৰি-কর্তৃক পঠিত প্রবন্ধ হইতে সঙ্কলিত ।