পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] পরিহার ও দেহকে পীড়াদান বাহ তপের অঙ্গ। কৃতপাপের স্বীকার ও তাহার প্রায়শ্চিত্ত, মঠবাসের কর্তব্যপালন, বাধ্যতা, লজ্জা, আত্মসংযম এবং ধ্যানই আভ্যন্তর তপ। ংখ্যযোগের প্রণালীর সহিত জৈন তপের প্রণালীর কিছু কিছু ঐক্য আছে ; কিন্তু সাংখ্যযোগে ধ্যান, ধারণা, সমাধিকেই সৰ্ব্বোচ্চ স্থান দেওয়া হইয়াছে, আর জৈন তপে তপস্তার অন্তান্ত অঙ্গের অপেক্ষ ধ্যানের শ্রেষ্ঠতা স্বীকার করা হয় নাই—ইহাদের সকলকেই তুল্য সম্মান দেওয়া হইয়াছে। সাংখ্যযোগ সন্ন্যাসধৰ্ম্মের দার্শনিকতত্ত্ব, ইহাতে সন্ন্যাস অত্যন্ত স্বক্ষতা ও আধ্যাত্মিকতা প্রাপ্ত হইয়াছে। কিন্তু জৈনশাস্ত্রের সন্ন্যাস অন্ত প্রকারের ; কম্মের অশুদ্ধিতা হইতে জীবকে মুক্ত করাই তাহার প্রধান লক্ষ্য। উপসংহারে আমার বক্তব্য এই যে জৈনধৰ্ম্ম ভারতের অন্ত সকল ধৰ্ম্ম হইতে পৃথকু ও স্বতন্ত্র ; এই কারণে প্রাচীন ভারতের দার্শনিক মত ও ধৰ্ম্মজীবনের আলোচনায় ইহার প্রয়োজনীয়তা গুরুতর তাহা স্বীকার করিতেই হইবে । 3회 : জ্যোতিষিক যৎকিঞ্চিৎ ১ । প্রাথমিক জীবের জন্ম । এক প্রকাও জলন্ত নীহারিক হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়। যখন আমাদের এই পৃথিবী জন্মগ্রহণ করিয়াছিল, তখন ইহাতে যে কোন জীব ছিল না তাহ সুনিশ্চিত । সেই প্রচণ্ড উত্তাপে আমাদের পরিচিত কোন জীবই বাষ্পময় ধরায় জীবিত থাকিতে পারিত না। কাজেই বলতে হয়, জন্মের বহুকাল পরে যখন পৃথিবী শীতল হইয়া দাড়াইয়াছিল, তখনকারই কোন এক দিনে প্রাথমিক জীব ভূতলে দেখা দিয়াছিল। কিন্তু কি প্রকারে আধুনিক প্রাণীউদ্ভিদের সেই অতিবৃদ্ধ পিতামহ জন্মগ্রহণ করিয়াছিল, তাহা আধুনিক জীবতত্ত্বের একটা বৃহৎ সমস্ত হইয়া দাড়াইয়াছে। এ পর্য্যস্ত এ সম্বন্ধে অনেকে অনেক কথা বলিয়াছেন, কিন্তু নিঃসন্দেহে ব্যাপারটির মীমাংসা হয় নাই। বোধ হয় হইবারও নয় । যাহা হউক প্রাথমিক জীবের উৎপত্তি সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিকদিগের বক্তব্য অনুসন্ধান করিতে গেলে দুইটি পৃথক সিদ্ধাস্ত নজরে পড়িয়া যায় । একদল বৈজ্ঞানিক বলেন, অপর ংকলন ও সমালোচন—জ্যোতিষিক যৎকিঞ্চিৎ እ»<) ት কোন সজীব-জ্যোতিষ্ক হইতে আসিয়া প্রাথমিক জীব পৃথিবীতে আতিথ্য গ্রহণ করিয়াছিল । তারপর স্থানটিকে জীবন রক্ষার অমুকুল পাইয়া সেটিই বংশবিস্তার দ্বারা এখন ভূতলকে প্রাণীউদ্ভিদে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিয়াছে। প্রাথমিক জীবের জাত্যান্তর পরিগ্রহের কারণ নির্দেশ করা কঠিন নয়। অভিব্যক্তি ও প্রাকৃতিক নিৰ্ব্বাচনের কলে ফেলিয়া দেখিলে, ক্রমিক পরিবর্তনের ধারা সুস্পষ্ট ধরা পড়ে। f আর একদল পণ্ডিত পূৰ্ব্বোক্ত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করিয়া বলেন, আমাদের এই ভূতলেই একদিন প্রাথমিক জীব জন্মগ্রহণ করিয়াছিল । পৃথিবী তাহার নিজের জন্মকাল হইতে যে সকল পরিবর্তনের ভিতর দিয়া চলিয়া আসিতেছে, তাহারই মধ্যে একটির ব্যবস্থা এ প্রকার ছিল যে, তখন জড় আর স্থির থাকিতে পারে নাই । সেই শুভ কালে বাহিরের প্রকৃতি এবং ভিতরকার রাসায়নিক শক্তি একত্রে মিলিয়া জড়ে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করিয়াছিল। এই অপূৰ্ব্ব রাসায়নিক শক্তি যে কি তাহা আমরা জানি না ; এবং যে মহাযোগস্থত্রে ভিতর ও বাহিরের প্রকৃতিকে একত্র করিয়া ভূতলে প্রাণের সঞ্চার করিয়াছিল, তাহারও এখন অস্তিত্ব নাই। আমাদের এই পৃথিবীখানি এখন এমন এক অবস্থায় উপনীত হইয়াছে co, qe:usta (Spontaneous generation) grāfts arīgs এই দুইটি সিদ্ধান্তের মধ্যে এ পর্য্যন্ত শেষের মতটিকেই অনেকে প্রাধান্ত দিয়া আসিতেছিলেন। এ সম্বন্ধে যাহা কিছু গবেষণা হইয়াছে, তাহ প্রাথমিক জীবের স্বতঃজনন মানিয়া লইয়াই করা হইতেছিল। আজ কয়েক বৎসর হুইল পরীক্ষাগারে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীব উৎপন্ন হইয়াছে বলিয়া বৈজ্ঞানিক বার্ক সাহেব যে বৃথা কোলাহলের সৃষ্টি করিয়াছিলেন, তাহ হয়ত পাঠকের মনে আছে । উনি জীবের স্বতঃজননের উপর নির্ভর করিয়া গবেষণা করিয়াছিলেন। অপর জ্যোতিষ্ক হইতে জীব আসিয়া পৃথিবীর অধিবাসী হইয়াছে, একথা আজকাল বড় গুনা যায় না। কিন্তু আধুনিক বৈজ্ঞানিকদিগের অন্ততম নেতা অধ্যাপক আরেনিয়স (Arrhenius) সম্প্রতি জীবোৎপত্তির এই মতবাদটিরই সমর্থন করিয়াছেন। জ্যোতিঃশাস্ত্র তড়িৎবিদ্যা