পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>(?b" একত্রে সংঘমন্ত্র ( Mass ) উচ্চারণ করিয়া থাকেন। চামড়ার ফেটি দিয়া ঘুরান যায় এমন নয়টি জপ-স্তম্ভ (Prayercylinders ), একটি জয়ঢাক, একটি কাংসঘণ্টা, নৃমুণ্ডমুকুটশোভিত দুইটি মুখোস,—মূৰ্ত্তির শ্রেণী,—ইহার মধ্যে চেনরেসি এবং সেকিয়ার প্রধান যাজক কঙ্গমার প্রতিচ্ছবির অনেকগুলি প্রতিরূপ ছিল । পশ্চিম-দক্ষিণে কয় পদ যাইয়। আমরা স্ফটিকময়, বিস্তৃত ভূখণ্ডের পাদদেশে দুষ্টটি পাথরের কূটর দেখিলাম—ইহা আগুন জালাইবার জন্য ডালপালা লতাগুষ্মে পূর্ণ ছিল । সামদে-পু-পে এ দুইটি ক্ষুদ্র মন্দির—তাহার বেদীগুলি মৃত্তিকানিৰ্ম্মিত। ইহার একটিতে মাঝারি আকারের কয়েকটি দেবমূৰ্ত্তি এবং সামুদ্রিক শঙ্খ ছিল । তাঙ্গার সম্মুখে ধুপচুর্ণ ধোয়াইয়া ধোয়ান্টয়া জলিতেছিল—আঁকাবঁকা খুপের চুর্ণ পুড়িতে পুড়িতে একপ্রাস্ত হইতে অপর প্রান্তে গিয়া পৌছিতেছিল। ভিতরে লোবানের প্রতিকৃতির সম্মুখে দুইটি বাতি জলিতেছিল এবং ভিতরে তাকের উপর কতকগুলি হস্তলিপি ছিল—ইহাকে ইহারা চুনা বলে । বৃষ্টির জল, ইহার ভিতরে প্রবেশ করিয়া, উদ্ধাধ লম্বমান, শ্বেতবর্ণ কয়েকটি প্রণালী, পলস্তরার ভিতর তৈয়ারি করিয়াছিল। ছাদের নিম্নে সরু লম্বা রেশমের একটি টুকরা ঝুলিতেছিল—স্বারের পর্দা বাতাসে ফরফর করিতেছিল। পেস্কর ভয়ানক দুর্গে ইদুরের যতটুকু উত্ত্যক্ত হয় এখানে সেটুকু হইবারও সম্ভাবনা ছিল না । সন্ন্যাসী, দিনের পর দিন, সৎসরের পর বৎসর, যেখানে অতিবাহিত করেন, পৰ্ব্বতের পাদদেশে অত্যন্ত নিকটেই এই সেই “দুপকং”—সেই আশ্রম। ইঙ্গ একটি ঝরণার উপরে নিৰ্ম্মিত, পাচফুট চারিটি দেয়ালের একটি ঘর । ঘরের মেজে ফুড়িয়া একটি ঝরণা এষ্ট ঘরের মাঝখানে ফেনারিত হইয় উঠে। দেয়ালের ব্যাস অত্যন্ত স্থল। ইহার সমস্তটিষ্ট কঠিন এবং ঠাসা, কোথাও একটি বাঙায়নেরও অবকাশ নাই। দরজার চৌকাটটি অত্যন্ত নীচু—কাঠের দরজাট রুদ্ধ, তালাচাবি বন্ধ। কিন্তু ইহাই যথেষ্ট নহে, বড় বড় জমাট-বাধা এবং ছোট খণ্ড খণ্ড পাথর দিয়া দরজার সন্মুখে একটি প্রাচীর গড়িয়া তোলা হইয়াছে, দেয়ালের ভিতরকার অত্যন্ত ছোট ছোট ছিদ্রপথগুলিও প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড সযত্বে রুদ্ধ । বস্তুতঃ দরজার এক ইঞ্চিও আর লোক-চক্ষুর গোমর নহে। কিন্তু প্রবেশদ্বারের পাশ্বে একটি ক্ষুদ্র মুড়ঙ্গ আছে, যতীর আঙ্কাৰ্য্য ষ্টকার ভিতর দিয়া ঘরের ভিতর ঠেলিয়া দেওয়া যায়। এই সুদীর্ঘ গোলাকার ছিদ্রপথে যেটুকু স্বৰ্য্যরশ্মি গৃহের মধ্যে প্রবেশ করিতে পারে তাহার পরিমাণ নিশ্চয়ই খুব স্বল্প ; এই আলোকটুকুও অবাধে সুড়ঙ্গমুখে পৌছায় না, কারণ কুটীরের সন্মুখভাগ দেয়ালে আবদ্ধ চষ্টয়া একটি ক্ষুদ্র প্রাঙ্গনের সৃষ্টি করিয়াছে —যতীর দৈনিক আচার্য্য যে সন্ন্যাসী লইয়া আসেন, ইহার ভিতবে একমাত্র তঁাচারই প্রবেশাধিকার আছে ৷ যতীর সমতল ছাদ ভেদ করিয়া নাতিদীর্ঘ একটি চিমনি উঠিয়াছে —প্রতি ষষ্ঠ দিবসে চা তৈয়ারি করিবার অনুমতি সন্ন্যাসীর আছে, এবং সেই জন্ত কিছু কিছু জানি কাঠ সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়া তাহার ঘরে ঠেলিয়া দেওয়া হয় । চিমনির ভিতর দিয়া ও একটি ক্ষীণ আলোকরেখা ভিতরে আসিয়া পড়ে। এই দুইটি ছিদ্র দিয়া কুঠরিতে বায়ু চলাচল করিতে পারে । আমি জিজ্ঞাসা করিলাম এই কুঠরিতে প্রাচীর-বেষ্টিত হইয়। এখানে যে লামা বাস করিতেছেন ঠাঙ্গর নাম কি ? “ষ্ঠাতার কোনো নাম জানি না এবং জানিলেও তাহা উচ্চারণ করিতে সাহস করিতাম না । আমরা তাঙ্গাকে স্বধু লামা রিম্পোচি বলিয়া জানি।” কেপিপেনের মতে 'লামা’ অর্থে বুঝিতে হইবে ‘এমন একজন যাহার উপরে আবে কেহ নাই ; রিম্পোচি=রভু ; মাণিক্য, পবিত্রতা । ) “তিনি কোথা হইতে আসিয়াছেন ?” “তিনি ‘নাকটসাং’-স্থিত ঙ্গোর (Ngore) নগরে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন ।” “র্তাহার আত্মীয় স্বজন কেহ আছে ?” “সে সম্বন্ধে কিছু জানি না ; কেহ যদিই বা থাকেন, সন্ন্যাসী যে এখানে আছেন তাহা তাহারা জানেন না ।” “অন্ধকারের ভিতর কতদিন তিনি বাস করিতেছেন ?” “তিন বৎসর হইল তিনি উহার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছেন।” “এখনও আর কত দিন সেখানে তিনি থাকিবেন ?” “যত দিন তাহার মৃত্যু না হয় ।”