পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>や8 আকাঙ্ক্ষা ক্রমশঃ কমিয়া অভ্যালিতে থাকে—সে মনে করিতে থাকে সময়ের প্রায় শেষ প্রান্তে আসিয়া সে উপস্থিত হইয়াছে—এখন যে কোনো মুহুর্তে সময় নিজেকে নিঃশেষ করিয়া ফেলিবে । সময়ের বোধ নিশ্চয়ই তাহার কিছুমাত্র থাকে না, সমাধির অন্ধকারকে অনন্তকালের মধ্যে তাহার একটি মুহূৰ্ত্তমাত্র বলিয়া মনে হয় । কারণ সময়ের পরিমাণ করিয়া তাহা স্মৃতিপটে মুদ্রিত করিবার যেসকল উপায় তাহার পূৰ্ব্বে ছিল এখন তাহার আর কিছুই নাই। দিন রাত্রি, শীত গ্রীষ্মের পরিবর্তন, গুহার ভিতর নিজের শরীরে ঠাও এবং গরম লাগার ভিতর দিয়াই সে অনুভব করে । তাহার মনে পড়ে কত বর্ষ তাহার মাথার উপর দিয়া ভাসিয়া গেছে—তাহার মস্তিষ্ক বৈচিত্র্য-হীন একটিমাত্র ভাবে পরিপূর্ণ থাকায় তাহার মনে হয় ঋতু হঠাৎ অত্যন্ত দ্রুতবেগে পরিবর্তিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে।—কেন সে যে উন্মাদ হইয়া যায় না,—কেন সে আলোকের জন্য চীৎকার করিয়া উঠে না, নৈরাপ্তের যন্ত্রণায় লাফাইয়া উঠিয়া কেন সে আপনার মাথা দেয়ালে আছড়ায় না, দেয়ালের তীক্ষধার পাথরগুলির উপর নিজেকে আছড়াইয়া সে যে কেন আত্মহত্যা করে না, তাঙ্গ আমার ধারণারও অতীত ! কিন্তু সে শাস্তভাবে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করিয়া থাকে।-- মৃত্যু আসিতে হয়ত দশ, হয়ত বিশ বৎসর বিলম্ব করে। বাহিরের এই সংসার যাত্রা, এই পৃথিবীর স্মৃতি তাহার কাছে অস্পষ্ট হইতে অস্পষ্টতর হইয়া আসিতে থাকে। পুৰ্ব্ব প্রান্তে উষার উদয়, স্বৰ্য্যাস্তের স্বর্ণাভ মেঘাচ্চটা, সে বহুদিন হইল ভুলিয়া গিয়াছে। রাত্রে যখন সে উদ্ধদিকে তাহার জ্যোতিহীন চক্ষে চাহিয়া দেখে তখন অন্ধকার গহবরের অন্ধকার ছাদটিই সে দেখিতে পায়—নৃত্যচঞ্চল কোনো তারকা তাহার চক্ষে পড়ে না !—বহুবর্ষ এইরূপে অন্ধকারে অতীত হইবার পর সহসা একদিন মহোজ্জল দীপ্তিরাশিতে তাহার সমস্ত উদ্ভাসিত হইয় উঠে—অবশেষে মৃত্যু আসিয়া উপস্থিত হন এবং হাত ধংিয় তাহাকে বাহিরে লইয়া যান। তাহার জন্ত আসিয়া মৃত্যুকে অপেক্ষা করিয়া বসিয়া থাকিতে হয় ন, সাধ্য সাধনারও প্রয়োজন হয় ন—লাম তাহার এই একমাত্র অতিথি এবং পরিত্রাণকৰ্ত্তার জন্য বহুদিন ধরিয়া প্রতক্ষা করিয়া রহিয়াছেন, তাহাকে আহবান করিয়া প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ । ००म खान, २ख्न थ७ অভ্যর্থনা করিয়া লইবার জন্ত বহুবর্ষ হইতে তাহার মন আকুল হইয়া আছে।-তিব্বতের বৌদ্ধমঠের মন্দিরে ੇਸ਼ এবং প্রতিচ্ছবিগুলিতে যেভাবে বুদ্ধদেব অঙ্কিত হইয়াছেন— এখনও যদি সন্ন্যাসীর বুদ্ধি অনাবিল থাকে তবে অন্তিম সময়ে তিনি সেই পবিত্রভাবে কাষ্ঠাসনটি বাহুমূলের নিয়ে লইয়া দাড়াইয়াছেন । তাহার পর, দিনের পর দিন এত বৎসর যে ৎসম্বাপাত্র পৰ্য্যায়ক্রমে পূর্ণ এবং শূন্ত হইয়াছে—অবশেষে হঠাৎ যখন তাঙ্গ অস্পৃষ্ট রহিয়া গেল--ছয় দিনও যখন কেছ তাহা স্পর্শ করিল না, তখন তাহার রুদ্ধ গৃহটি ভাঙ্গিয় ফেলিল, মঠের অধ্যক্ষ মৃতের পাশ্বে আসিয়া তাহার জন্ত প্রার্থনা করিলেন। অন্যান্ত সন্ন্যাসীরা ডুক্যাংএ পাঁচ ছয় দিন তাঙ্গার জন্য সমবেত হইয়া উপাসনা করিলেন। মৃতদেহ শ্বেতবস্ত্রে আবৃত হইল, তাহার পর মাথায় একটি আবরণ (তিব্বতে ইহাকে “রিঙ্গা” বলে ) দিয়া তাঙ্কাকে তাহারা চিতায় আরোহণ করাইল । ধীরে ধীরে সমস্ত ভস্ম হইয়া গেল। সংগৃহীত ভস্মরাশি কর্ণমে মাখিয়া সন্ন্যাসিগণ একটি ক্ষুদ্র পিরামিড গড়িয়া তুলিলেন অবশেষে তাহ প্রস্তরের কোনো মঙ্গুমেণ্টের মধ্যে আসিয়া বিশ্রাম লাভ করিল। লিঙ্গার সন্ন্যাসীরা বলিয়াছিলেন সাধারণ একজন লামার মৃত্যু হইলে তাহাকে থও থ গু করিয়া কাটিয়া পার্থীদের আহারের জন্ত ফেলিয়া রাখা হয়। যে পাচজন লামা এই কাৰ্য্যে নিযুক্ত আছেন, তাহারা আশ্রমভুক্ত ; কিন্তু ডুক্যাংএ উপাসনা ও অন্যান্ত সন্ন্যাসীদের সহিত একত্র চা পানের অধিকারী হইলেও তাহাদিগকে অগুচি বলিয়া মনে করা হয়, অন্তান্ত সন্ন্যাসীরা তাহাদের সহিত একত্রে ভোজন করিতে পারেন না। কাছাকাছি পশুচারণামুঞ্জীবিগণের কেহ মারা গেলে ইহাদের প্রয়োজন হয়, কিন্তু সেক্ষেত্রে আত্মীয় স্বজনগণকে এই সন্ন্যাসীদিগের জন্ত পাঠাইতে হয়। মৃতের সর্বস্ব আশ্রমের সম্পত্তিভুক্ত হইয়া যায় । যে লামা রিমপোচির গুহার সম্মুখে দাড়াইয়। আমরা বাক্যালাপ করিয়াছিলাম, তাহার চিত্র দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরিয়া আমার মনে ঘুরিয়া ফিরিতে