পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○)や সে জানিত ঘরের পাশের তিন কাঠা জমি লষ্টয়াই ঠাকুরদাদার সহিত তাঙ্গর পিতার বিবাদ —মাণিক কিছুকাল চুপ করিয়া থাকিয় বলিল, “ঠাকুরদাদা, ঐ জমিটুকু বাবাকে ছেড়ে দেও না কেন, তা হ’লে আমি তোমার কোলে উঠতে পাবো।” শিশুকণ্ঠোচ্চারিত এষ্ট কথা কয়টি মুকুন্দচন্দ্রের হৃদয় স্পর্শ করিল । তাঙ্গার মনে পড়িল তাঙ্গর জ্যেষ্ঠ সহোদর যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন তিনি পরম স্নেহ যত্নে পরিধারবর্গকে প্রতিপালন করিয়াছেন ; এই ঘর বাড়ী জমিজমা সমস্তষ্ট তিনি দাদার অনুগ্রঙ্গে লাভ করিয়াছেন ; জ্যেষ্ঠ সঙ্গেদর সকলের প্রতিপালন ভার গ্রহণ করিয়াছিলেন বলিয়াই স্থিনি কিঞ্চিৎ অর্থ সঞ্চয়ের সুযোগ পাষ্টয়াছিলেন । সেই বড় ভাই এখন স্বর্গে গিয়াছেন, তিনি এক টুকর জমি লষ্টয় তাহার পুত্রের সহিত কলঙ্গে প্রবৃত্ত ! আজি বিজয়া দশমীর দিন পরম শত্রুও শত্রুত ভুলিয়া কাসি মুখে পরস্পরকে আলিঙ্গন করিতেছে, আর তিনি শরীকি বিবাদে মাতিয়া কর্তব্য বিস্তৃত হইয়াছেন, স্নেহ মমতা বিসর্জন দিয়াছেন ! এ পৃথিবীতে জীবন কয়দিনের জন্ত ? কেশ পঙ্ক হইয়াছে, দাত পড়িতেছে, দেহের চৰ্ম্ম শিথিল ও চক্ষু নিম্প্রভ হইয়া আসিয়াছে, মৃত্যুর তামসী বিভাবরী অদূরে সমাগত প্রায় ; জীবনের এই সন্ধ্যাকালেও এত লোভ, এত আসক্তি ! তুচ্ছ এক টুকরা জমির জন্ত পুত্রতুল্য পরম স্নেহাস্পদ আত্মীয়ের হৃদয়ে আঘাত করিতেছেন, অথচ আর দুই দিন পরে যেখানকার জমি সেইখানেই পড়িয়া থাকিবে, সংসারের কোনও আকর্ষণ তাছাকে বাধিয়া রাখিতে পারবে না।—বৃদ্ধের হৃদয়ে মুহুর্তে দপ করিয়া কচুতাপের আগুন জলিয়া উঠিল। তিনি বসিয়া ৰসিয়া ভাবিতে লাগিলেন ; বিজয় দশমীর মিলনানন্দ তাছার নিকট বিদ্রুপের কশাঘাত বলিয় প্রতীয়মান হষ্টতে লাগিল । 总 ( t ) " অনেক রাত্রে হারাণ বাড়ী ফিরিলে মুকুনা অপরাধীর ভায় হারাণের গৃহদ্বারে উপস্থিত হইলেন ; পিতৃবাকে গৃহদ্বারে দেখিয়া হারাণ অত্যন্ত বিস্মিত হইল, এখন কৰ্ত্তব্য भन्दा “...... প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ [ >०अ छांश, २ग्न थ७ আজ বিজয় দশমী, বিবাদ বিসন্ধাদের কথা বিশ্বত হইয়া আজ সৰ্ব্ব প্রথমে পিতৃতুল্য পূজ্য বৃদ্ধ পিতৃব্যকে প্রণামপূৰ্ব্বক তাছার আশীৰ্ব্বাদ প্রার্থনা করিতে যাওয়া তাহার উচিত ছিল ; এমন দিনেও কি গৃহবিবাদের কথা মনে করিতে আছে ? হারাণ কি বলিবে কি করিবে স্থির করিতে না পারিয়া নত মস্তকে কাকার সম্মুখে দাড়াষ্টয়া রহিল । । মুকুন্দ বলিলেন, “হারাণ, আজ বিজয় দশমী, আমাদের হিন্দুর নিকট এমন শুভ দিন আর নাই, আজ তুমি অামাকে প্রণাম করিতে যাও নাই কেন ? আমি কি তোমাকে আশীৰ্ব্বাদ করিতে কুষ্ঠিত হইতাম ? আমি তোমাকে কোলে করিয়া মানুষ করিয়াছি, ছেলেবেলায় তুমি তোমার বাবাকে চিনিতে না, আমাকেই চিনিতে ; এখন আমি বুড়া হইয়াছি, তুমিও ছেলের বাপ হইয়াছ, স্বার্থের মোকে . জড়িত হইয়া এখন আমাদের স্বভাবের পরিবর্তন হইয়াছে বটে, কিন্তু আমি সেই কাকাই আছি— তুমি আমার সেই ভষ্টপোষ্ট আছ । আমি যদি কঠোর ব্যবহারে তোমার মনে কোন কষ্ট দিয়া থাকি, তবে সে কথা কি এমন আনন্দের দিনে তোমার মনে করিয়া থাকা উচিত ? আমি মরিলে তোমাকে কাচ পরিতে হইবে, তোমার সঙ্গে আমার এই রকম সম্বন্ধ । আমি তোমার মনের কষ্ট দূর করিব, যে তিন কাঠা জমি লইয়া আমার সঙ্গে তোমার বিবাদ--অাজ আমি সেই বিবাদের নিম্পত্তি করিব, আমার বেড়ের চাবি তুমি লও, আজ হইতে উহ তোমার। এখন আমার জলে এক পা ডাঙ্গায় এক পা, আমার এই শেষ জীবনের ভুলচুক তুমি ক্ষমা কর ; তুমি আমাদের বংশের প্রদীপ, আশীৰ্ব্বাদ করি তুমি দীর্ঘজীবী হইয়া তোমার বাপের সুনাম রক্ষা কর।” বৃদ্ধ ভ্রাতুষ্পপুত্রকে আলিঙ্গনপাশে আবদ্ধ করিলেন, তিনি আর কোন কথা বলিতে পারিলেন না । হারাণের ষে চক্ষু হইতে একদিন ক্রোধ ও প্রতিহিংসার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত হইয়াছিল, আজ সেই চক্ষু হইতে অশ্রু ঝরিতে লাগিল। সে পিতৃব্যচরণে প্রণত হইয় তাহার পদধূলি মস্তকে গ্রহণ করিল, গদগদ স্বরে বলিল, “কাক, আমার সকল অপরাধ মার্জন করুন ।”