পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

·A ව\ෂ লাগিল, তখন হইতেই তাতারা বারেন্দ্র দেশবাসী ব্রাহ্মণদের হইতে স্বতন্ত্র বংশসস্তৃত বলিয়া পরিগণিত হইলেন। আমাদের সেক্ট Fiction আসিয়া উপস্থিত হইল । রাঢ়ী ও বারেন্দ্র তখন স্বতন্ত্র বংশসস্থত বলিয়া স্তির হইয়া গেল । ক্রমে পরম্পরের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ বাড়িতে লাগিল । এখন এই দুষ্টট দুই স্বতন্ত্র শ্রেণীর ব্রাহ্মণ বলিয়া পরিগণিত। পরস্পরের মধ্যে আহারাদি বন্ধ শুইয়াছে । বিবাচ্চ-সম্বন্ধ ত চলিতেই পারে না । ( ক্রমশঃ ) দেয়ালের আড়াল ( গল্প ) সহরের সে এক টেরে, নদীর ধারে, বাদশাহের সেই কয়েদখান।—বিশাল কালো পাষাণময় দেয়াল ঘেরা । নদীর চঞ্চল ঢেউগুলি বাহিরের ব্যথিত হৃদয়ের ব্যাকুলতার মতন দেয়ালের গায়ে আছাড় খায়, চূর্ণ হয়,—পাষাণ প্রাচীর বিশ্বনিখিলের স্নেহবিচু্যত নরনারীকে আগুলিয়া অটল গাম্ভীর্য্যে দাড়াইয় দাড়াইয়া, সেই হৃদয়ভাঙা কাণ্ড খান দেখে । এটি সাধারণ অপরাধীদের কয়েদখান নয়—এটি রাজনৈতিক কয়েদখান । এখানে থাকে তাঙ্গারাই নজরবন্দী, যাহার রাজরোষে অভিশপ্ত, যাহার যে-সে লোক নয়, যাহাদের আটক রাথায় বাদশাহী স্বার্থ সিদ্ধ হইবার সম্ভাবনা । কত নিরপরাধী প্রাণ রাজনীতির কুট-চক্রে পড়িয় গিয়া এখানে আটক আছে । শাদ সেই প্রাণগুলি কালো দেয়ালের আড়ালে, কালে হাবসীর পাহারায়, কালো আঁধারের মাঝখানে, আজকে এক বন্দী। প্রত্যেক লোকের একটি একটি পৃথক ঘর—এক বাড়ীতে থাকে তাহার এই পৰ্য্যন্ত, কেহ কাহাকেও দেখে না, কেহ কাহারে নাম জানে না । তবু এদের পরম্পরের পরিচয়ের অভাব নাই। দেয়ালের গারে আঙুলের টোকা মারিয়া ঘরে ঘরে এদের আলাপ চলে। আঙুলের টোকার ভিতর দিয়া প্রাণের ভাষা আপনাকে ব্যক্ত করে। এমনি ভাবে কত বন্ধুর সন্ধান মিলে, কত অজানা বন্ধু হয়, কত আলাপ জমিয় উঠে। প্রবাসী-- পৌষ, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড মাঝে মাঝে ঘরের বাহিরের বারান্দায় হাবসী খোজার নাল-বাধানে নাগরা জুতোর ঠকাস ঠকাস শব্দ যেই তাঙ্গদের কানে আসে অমনি এক্ট নির্বাক আলাপ থামিয়া যায়,--হাবসী খোজার পায়চারির আওয়াজ আবার যখন দূরে সরে তখন আবার টোকার শব্দে দেয়ালগুলি মুখর হইয়া উঠে । চোখে না দেখিয়া, কথা না শুনিয়া, তাহারা টোকার আওয়াজে বুঝিত কে কেমন লোক-কাগর প্রাণে কেমন ব্যথা লুকানো আছে, কেবা জ্ঞানী কেবা অবোধ, কে প্রশান্ত কেবা অধীর, কে কোন ভাবের কেমন ভাবুক । টোকার ভিতর দিয়া তাহাদের হাসিকান্না, সুখদুঃখ, সাস্তুন সহানুভূতি, এঘর ওঘর আনাগোনা করিত। এমনি এক ঘরে বন্দা ছিল এক তরুণী । দোষ শুধু তার রূপ আছে, যৌবন আছে, আর আছে একখানি স্বচ্ছ সরল প্রণয় পাগল প্ৰাণ । সে অর্থের কাছে প্রণয়কে, বাদশাহী শাসনের কাছে নারীত্বকে খাটো করিতে পারে নাই, তাইতে সে বন্দী ! ভীরু পাখীর মতন পিঞ্জরে অসহায় সে বন্দিনী—তবু তার তমুখানি আনন্দ উল্লাসে ডগমগ, প্রাণখানি গাতে হাস্তে ভরপুর! বেচারী যে দিন প্রথম এই কয়েদখানায় আসে—তাহার মনে হইল এ এক নূতনতর মজা ! বাদশাহের সে বন্দিনী— তবে তো সে যে-সে লোক নয় ! ভাবিতে ভাবিতে তাহার ভারি হাসি আসিল—সে গল। ছাড়িয়া হাসিয়া উঠিল । তাহার সেই গানের মতন তরল মধুর হাসিখানি স্তব্ধ কারার ঘরে ঘরে যেন অমৃতবৃষ্টি করিয়া গেল । কয়েদিরা সব চমকিয়া কান খাড়া করিল। হাবলী খোজার মিস কালো মুখের মাঝে লাল লাল চোখ দুটো এক মালসা কয়লার মাঝে আগুনের দুটো ফুলকির মতন রাগে জলিয়া উঠিল। সে দরজার গায়ে জালির উপর চোখ রাঙাষ্টয়া বলিতে গেল---চোপ রও। কিন্তু সেই আনন্দমূৰ্ত্তির রূপের নেশায় হাবসী খোজারও ভাবহীন অন্তরে রমণীপ্রভাব সাড়া দিল, কঠিন কুটিল দৃষ্টি তাহার সরল তরল হইয় পড়িল, চুপ করাইতে গিয় নিজেই সে চুপ রহিয়া গেল, তাহার কালো পরু ঠোঁটের উপর মুখাবেশের সরস হাসির রেখা ছাড়া আর কিছু