পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ව8b” বন্ধু ভাবিয়া বার বার ডাকে। শিশির-সিক্ত বৃক্ষ-পত্রে যেমন ক্রমে পচ ধরে এবং অবশেষে তাত বিনায়াসে ঝরিয়া পড়ে, সেইরূপ শোকের পচ ধরিলে মানুষের জীবনের প্রতি আস্ত ক্রমে প্রাতঃকালের কুন্দকুসুমের দ্যায় শিথিল হইয়া পড়ে, এবং সে অনায়াসে মৃত্যুর শরণাপন্ন হয়। বাৰ্দ্ধক্য সম্বন্ধে আরো কয়েকটি কথা বলিলাব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু বাহুল্য ভয়ে এক্ট খানেক্ট ইতি করিলাম । শ্ৰীঅবিনাশচন্দ্র ঘোষ । হিন্দু-মুসলমান-সমস্ত * ভারতবর্ষ জটিল সমস্তার দেশ । এদেশ নানা ধৰ্ম্মের ও নানা জাতির দেশ। এখানে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে জল বায়ুর ভিন্নতা মানুষের শরীর বুদ্ধি ও প্রকৃতির উপরে প্রভাব বিস্তার করিয়াছে । বস্তৃত এখানে এক সমাজের সহিত অন্য সমাজের পার্থক্য যে অত্যন্ত প্রবল, এখানকার জল বায়ু অনেক পরিমাণে সে জন্য দায়ী । পুরাকাল হইতেই অনৈক্য ভারতবর্ষের কালস্বরূপ হইয়াছে। এখানকার মাটীতে ভেদবুদ্ধি যেন সহজেই অঙ্কুরিত হইয় উঠে। উহ! এ দেশের একটি চিরস্থায়ী ব্যাধির মত । এই অনৈক্যই ভারতকে শক্রর পদানত করিয়াছে। মুসলমানের সমগ্র ভারতবর্ষ একেবারে জয় করে নাই, খণ্ড খণ্ড করিয়া জিতিয়া লইয়াছে । ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী ঘরোয় বিবাদ বাধাঠয়া এক পক্ষের সাহায্যে অন্ত পক্ষকে পরাস্ত করিয়াছে । কিন্তু তখনও হিন্দু-মুসলমান-সমস্তার উদয় হয় নাই । ব্রিটিশ রাজ্যেৰ প্রতিষ্ঠার পর দেশে যখন শাস্তি স্থাপিত হইল তথনষ্ট এক্ট সমস্তাটি কণ্টকিত হইয়া উঠিল । যখন মিউটিনি চুকিয় গেল তখন হিন্দু মুসলমানের মধ্যে কে এই বিপ্লবের প্রধান হেতু সেই বাদ প্রতিবাদের সংঘর্ষেই হিন্দুমুসলমান-বিরোধ সৰ্ব্ব প্রথম বাহিরে মূৰ্ত্তি পরিগ্রহ করিয়া দেখা দিল । কেবল যে হিন্দু মুসলমান পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপাইতেছিল তাঙ্গ নহে, অনেক অ্যাংলো ইণ্ডিয়ানও

  • ১৯০৯ খৃষ্টাব্দের ডিসেম্বরের ইণ্ডিয়ান রিভিয়ুতে প্রকাশিত খ্ৰীযুক্ত মশীৰ চোসেন কিদৰাই লিখিত প্ৰৰন্ধ হইতে সঙ্কলিত ।

প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ { ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড ইতাদের কোনো না অবলম্বন করি ছিল । মোগল সাম্রাজ্যের শেষাবস্থায় দিল্লির দুৰ্ব্বল শাসনকৰ্ত্তাদের রাজত্বকালে মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণগণের আধিপত্য প্রবল হইয়া উঠিল । অবশেষে যখন অদৃষ্টের ফেরে ইংরাজ আসিয়া বিজেতা বিজিতকে সমক্ষেত্রে দাড় করাইয়া দিল তখন তাকাদের উভয়ের মধ্যে একটি বিচ্ছেদের ভাব ক্রমশ " বাড়িয়া উঠিতে লাগিল । উভয়েরই মন অশান্ত হইয়া উঠিল ; হিন্দু মুসলমান উভয়েই অনুভব করিতে লাগিল যে আর ভ্রাতৃভাব রক্ষা করা চলে না । মুসলমান-শাসনকালীন কল্পিত ও সত্য দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধস্পৃহা সময় পাষ্টয়া হিন্দুর মনে আগুনের হ্যায় জলিতে লাগিল এবং দশাবিপৰ্য্যয়ে মুসলমানকে আজ হিন্দুব সহিত সমান ক্ষেত্রে নামিতে হইল এই চিত্তদাঙ্গ মুসলমানকে অস্থির করিয়া তুলিল। কিন্তু হিন্দুরা তাঙ্গদের স্বাভাবিক বুদ্ধিপ্রাথর্য্যবশত বুঝিল যে রাষ্ট্রচালনার মধ্যে অধিকার লাভ করিতে ছষ্টলে নুতন যুগের জ্ঞান অর্জন করিতে হইবে এবং তাহারা সেই সাধনায় প্রবৃত্ত হইল। কিন্তু মুসলমানগণ তাহাদের হৃত সম্পদ ফিরিয়া পাইবার জন্ত অবজ্ঞাভরে কোন উপায় অবলম্বন করিতে চেষ্টা করিল না । হিন্দুর কালের সহিত অগ্রসর হইতে লাগিল আর মুসলমানগণ কেবলই পিছাইয়া পড়িল । দুর্ভাগ্যবশতঃ যে দু একজন মুসলমান তাহাদের স্বজাতির ভুল বুঝিতে পারিয়াছিলেন তাহারা মুসলমান সমাজকে ঠিক পথে লইয়। যাইতে পারিলেন না । সমস্ত মুসলমান সমাজের দ্যায় তাহার নেতারাও অন্ধ ছিলেন । পুৰ্ব্বকালীন অধীনস্থ হিন্দু জাতির সহিত এক ক্ষেত্রে একাসনে স্থাপিত হইবার ক্ষোভ লইয়াক্ট তাহারা বাস্ত ছিলেন। র্তাহারা ব্রিটিশ রাজপুরুষদের দলে ভিড়িয়া তাহদের সঙ্গিত একত্রে হিন্দুদিগকে শাসন করিবার মিথ্যা আশাতে স্বজাতিকে ভুলাইতেছিলেন। এই পলিসিটি নিতান্তই হীনতা ও সঙ্কীর্ণতার পরিচায়ক ও শিশুজনোচিত হস্তিকর ব্যাপার । এই পলিসি ও আইডিয়া লইয়া বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তি এবং সমাজের একটি সঙ্কীর্ণ অংশ খুব নামজাদা হইয়া উঠিতেছিল বটে কিন্তু তাহা সমস্ত জাতিকে তাহার উচিত পথ হইতে ভ্ৰষ্ট এবং কোনো দলের পক্ষ