পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্য। ] বাসেন। তিনি ভাবেন মেঘবিনিমুক্ত আকাশে দ্বিপ্রহর কালে সূৰ্য্য যেমন উজ্জ্বলভাবে প্রকাশ পায়, আমাদের চিত্ত্বগগনে ভগবানের প্রকাশও সেইরূপ, কোন বাধা নাই, কোনও অন্তরায় নাই, বাসন-মেঘের ছায়ামাত্র নাই । “l Ie glows above With scarce an intervention, presses clost: And palpitatingly, I Lis soul o'er ours.” টেনিসনের ৪ায় ব্রাউনিং ও মঙ্গলবাদী । টেনিসন বলি য়াছেন ব্রাউমিংও প্রকারান্তরে ঐ কথাই বলিয়াছেন- তবে উভয়ে প্রভেদ আছে । টেনিসন মানবজাতির অনন্ত উন্নতিতে বিশ্বাসবান্‌, ব্রাউনিংএর কল্পনায় মানবজাতির কথা তত বেশ স্থান পায় না। তিনি মানবের ব্যক্তিগত জীবনের এবং ভবিষ্যতের কথা লষ্টয়াই ব্যস্ত। ব্রাউনিং মনে করেন জ্ঞান বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অধিকারের সীমা বিস্তারের “Every winter change to spring,” দ্বারা কখন মামুষের চিরন্তন উন্নতি সাধিত হইতে পারে না । প্রকৃত উন্নতি মানবের অনুভবশক্তি, আশা আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ এবং দুঃখসহিষ্ণুতার উপরে নির্ভর করে। এ সংসারে মানুষমাত্রই অতৃপ্ত, রাজ্যেশ্বর হইতে পথের কাঙ্গাণ পৰ্য্যন্ত সকলেই নিজ নিজ অবস্থায় অসন্তুষ্ট, এ সীমাবদ্ধ সংসারের ক্ষুদ্র মুখে তাহার অনন্ত পিপাসা তৃপ্ত হয় না, তাহার হৃদয়ের অনস্ত সৌন্দর্য্য-তৃষ্ণ পার্থিব জগতের সৰ্ব্বসৌন্দৰ্য্য ভোগ করিয়াও অপূর্ণ থাকিয়া যায়, এ সংসারের মুখ সৌন্দর্য্য প্রেম তাহাকে ভোগ হইতে ভোগাস্তরে টানিয়া লইয়া যায়, কিন্তু কখনই তৃপ্তি দান করে না। এষ্টরূপে সে ক্রমশঃ বুঝিতে পারে যে ‘ভূমৈব সুখং নাল্পে স্বথমস্তি’। এইরূপে সংসারের অপুর্ণতাই তাঙ্গকে পূর্ণস্বরূপ ভগবানের নিত্যানন্দ, অনন্ত সৌন্দর্য্য, অতুল প্রেমের মাহাত্ম্য বুঝাইয় তাহার অধিকারী করিয়া তোলে। মধু ংসারের ভোগ-বৈবিত্র্যে যদি তাছার প্রাণ তৃপ্তিলাভ করিত তাহা হইলে তাহার হৃদয়ের অনস্তাভিমুখী গতি কোথায় থাকিত ? আবদ্ধ জলের দ্যায় তাহার আত্মা দুষিত হইয়া পড়িত। এই অতৃপ্তিতেই মানুষের মহত্ত্ব— সংসারের চরম ঐশ্বৰ্য্যও আমাদের আকাঙ্ক্ষার পূর্ণত সাধন করিতে পারে না, ইহাতেই আমাদের হৃদয়ের বিশালতা। ব্রাউনিং > * “Progress, man's distinctive mark alone, Not God's and not the beasts'; God is, they are, Man partly is, and wholly hopes to be.” আমাদের জীবনের মধ্য দিয়া, শত শত নৈবাত্যপরম্পর ভেদ করিয়া আমরা উচ্চতম আদশের সন্নিতিত হই । সুতবাং জীবনে নৈরাশু, অকৃতকাৰ্য্যতা, দুঃখ কষ্টের প্রয়োজনীয়তা আছে, ইহা অস্বীকার করা যায় না ; বরং এই হিসাবে দেখিতে গেলে সুখ অপেক্ষ দুঃখের, কৃতকাৰ্য্যতা অপেক্ষ অকৃতকার্য্যতার উপযোগিতা অধিক । যেমন ঈশ্বর সম্বন্ধে, প্রকৃতি সম্বন্ধেও ব্রাউনিংএর দৃষ্টি তদ্রুপ। এই সুনীল আকাশ, এই শু্যামলা ধরণী তাহার বড় প্রিয়, কারণ ইহাতে তিনি ভগবানের শক্তি এবং প্রেমের বিকাশ দেখিতে পান। প্রকৃতি আমাদিগকে আবদ্ধ করে না । আমাদিগকে ভগবানের প্রেম এবং ঐশ্বৰ্য্য অঙ্গুলী সঙ্কেতে দেখাইয়া দেয় –from Nature up to Nature's God. CN BIS sisir crisi gosstof ভাল বাসিয়াছে, এই সৌন্দর্য্যপূর্ণ, বিস্ময়কর, আনন্দময় বিশাল প্রকৃতিকে ভাল বাসিয়া ও প্রকৃতির প্রেমময় অন্তরাত্মাকে দেখিতে পায় নাই, সে অভিশপ্ত জীব। তাছার উপর ভগবানের অভিশাপ বধিত হইয়াছে । “Thou ari shut Out sf the heaven of spirit , glut Thy sense upon the world.” ইহা অপেক্ষা কঠোর অভিশাপ আর কি হইতে পারে ? কারণ আমরা এই জগৎকে দেখিয়া যদি জগদাতীতকে লাভ করিবার চেষ্টা না করি, যদি এই সসীম জগতেই আমাদের সকল আকাঙ্ক্ষার পর্য্যবসান হয় তবে আমাদের বিনাশ অবশুম্ভাবী । প্রতিভা সম্বন্ধেও ব্রাউনিংএর ধারণা এই যে প্রকৃত প্রতিভা আমাদেব স্বপ্তমনোবৃত্তিকে জাগাষ্টয়া তোলে, আমরা প্রাণে প্রাণে যেন একটা অনিৰ্ব্বচনীয় অভাব অনুভব করি ; কিন্তু সে অভাবের মোচন অথবা সে উদ্বোধিত আকাঙ্কার চরিতার্থতা সংকীর্ণ জীবনে ঘুটিয়া উঠেন। পাঠকের মনে এই উদার ব্যাকুলতার সৃষ্টি প্রকৃত প্রতিভাবানের কাজ । কলাবিদ্যা সম্বন্ধে ব্রাউনিং যে সত্য প্রচার করিয়াছেন