পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ)Գ e —“কিন্তু খবরদার এখানে আর এস না ।” বেশ! তাহাতে তাহার কোনো আপত্তি নাই । বাটিই না হয় তাহার বাড়ি পায়ের ধূলা দিবে। এবং কাজটা না হয় কালই হইবে।” —“আচ্ছা, কালই যাবে!—এখন যাও—বেরোও !” বলিয়া বাট তাহার হাত ধরিয়া টানিয়া বাড়ির বাহির করিয়া দিল। তাহার পর দাসীকে ডাকিয়া ভৰুে ভয়ে সে সন্ধান করিতে লাগিল লোকটাকে সে চেনে কি না। জুয়ারী যেমন খেলার সঙিন অবস্থায় অধৈৰ্য্য হইয় উঠে তেমনি অধৈৰ্য্যভাবে বার্টি দাসীকে রুঢ়তার সহিত জিজ্ঞাসা করিল—“লোকট কে ?” দাসী জানাইল সে চেনে না গিয়াছিল—বাটিও তাহাকে চেনে না ! সে জিজ্ঞাসা করিল —“লোকটাকে কি রকম বুঝলেন?” —“একটা ভিখারী !” —"ভিখারী ? কিন্তু আপনাদের মতো যে পোষাক !” বাটি বলিল—“সাবধান ! ও রকম লোক কক্ষনে এ বাড়িতে ঢুকতে দিও ন!” সে অবাক হইয়া ভদ্রলোকের সপ্তদশ পরিচ্ছেদ বাটি ফ্র্যাঙ্কের অপেক্ষায় বসিয়া রহিল । আজ তাহার হৃদয়ট যেন কেমন করিতেছে ! সে উচ্ছসিত হইয়া কাদিতে লাগিল । সে অশ্রস্রোত আজ কোনো বাধা মানিতেছে ন,—হৃদয় প্লাবিত করিয়া, মৰ্ম্ম শূন্ত করিয়া, লীলাভরে সে কেবলই ছুটিতেছে—বাটির যত বেদন যত রুদ্ধ আবেগ আজ যেন বুকের মধ্যে আর মা স্থান পাইয়া উপচাইয়া পড়িতেছে । আজ তাছার মনে হইতেছে তাহার জীবনের এ কী দুৰ্দ্দিন ! বিশ্বের সমস্ত বেদনা আজ জাগ্রত হইয়া তাহাকে আক্রমণ করিয়াছে ! হৃদয়ের এ কী নিষ্পেষণ । সে কি করে ? কোথায় যায় ? আত্মহত্যা ? সেই ভালো ! সে চুটাছুটি করিয়া আত্মহত্যার জন্ত একটা অস্ত্র সন্ধান করিতে লাগিল । হাতের কাছে কিছু না পাইয়। সে গলাটাকে দু হাত দিয়া সজোরে টিপিয়া ধরিল । চক্ষু কপালের দিকে উঠিতেছে, রুদ্ধ নিশ্বাস দেহের সমস্ত শির প্রবাসী—পৌষ, HOL G [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড ছিড়িয়া বাহির হইবার উপক্রম করিতেছে, চক্ষু অন্ধকার ; —আর একটু জোর চাই, ব্যস! কিন্তু কৈ সে জোর— কৈ সে সাহস ! বাটি নিজের অক্ষমতায় ব্যথিত, লজ্জিত হইয়া অশ্রুপাত করিতে লাগিল । তখন রাত্রি একটা । এতক্ষণে নিশ্চয় ফ্র্যাঙ্কের আসিবার সময় হইয়াছে । বাটির চমক ভাঙল । আয়নার দিকে ফিরতেই নজরে পড়িল তাহার সেই বিশ্ৰী চেহারারক্তহীন মুখ শ্ৰী, ক্ৰন্দনৰ্ম্মীত চক্ষু, উদ্বেগচঞ্চল নীল কপোল ! না, না, ফ্র্যাঙ্ককে এ মূৰ্ত্তি দেখানো নয় ! সে তাড়াতাড়ি শয়নকক্ষে প্রবেশ করিয়া কম্পিত দেহে শয্যা গ্রহণ করিল। কিন্তু ঘুমাইল না ;–কখন সদর দরজা খোলার শব্দ হয় তাহাই শুনিধার জন্ত অধীরভাবে অপেক্ষা করিতে লাগিল । অনেকক্ষণ পরে ফ্র্যাঙ্ক ফিরিল । আঁ্যা ! ইভাদের বাড়ি নয় ত ! না, না, না—নিশ্চয়ই ক্লাবে গিয়াছিল। ফ্র্যাঙ্ক বরাবর নিজের শয়নকক্ষে চলিয়া গেলেন— নিস্তব্ধত। ভেদ করিয়া বাহির হইতে দ্বার বন্ধের শব্দ উঠিল । আধ ঘণ্ট। অপেক্ষা করিয়া বাটি শয্যাত্যাগ করিয়া উঠিল । এতক্ষণে ফ্র্যাঙ্কের ঘরের বাতি নিশ্চয় নিবিয়াছে ! তাহার সেই বিবর্ণ মুক্তি ফ্র্যাঙ্কের চোখে না পড়ে ! বাটি কম্পিত হস্তে দরজায় টোক মারিল । ফ্র্যাঙ্ক বলিলেন—“কে বাটি ? এস।” বাটি প্রবেশ করিল। ঘর প্রায় অন্ধকার---সামান্ত একটা আলো মিট্‌ মিটু করিয়া এক কোণে জলিতেছে। বাটি সেই আলোর দিকে পিঠ রাখিয়া দাড়াইল । বাটির কেবলই ভয় হইতে লাগিল—এই বুঝি ফ্র্যাঙ্ক বলে সে ইভাদেরই বাড়ি গিয়াছিল । না । ফ্র্যাঙ্ক শুধু জিজ্ঞাসা করিলেন—“কি হয়েছে বাটি ?” বাটি বলিল—“বড় জরুরি দরকার তাই এত রাত্রেই এসেচি। অনেক দিলের একটা দেনা আছে, এখন শোধ न! করলেই নয় । তোমার উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বুঝচি ; কিন্তু উপায় নেষ্ট । কিছু টাকা দিতে পারবে ?” ফ্র্যাঙ্ক বলিলেন—“এখন আমার বড় টানাটানির সময়, জান তো ! কত চাই ?”