পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্য। ] এমন ত বোধ হইল না। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম— “তোম্ কাঙ্গ যাগ ?” লোকটা যেমন শুষ্টয়াছিল তেমনি অবস্থায় থাকিয়া আমার দিকে শুধু বক্রসৃষ্টিতে চাচিয়া রুক্ষ্মস্বরে বলিল— “শিকোয়াবাদ ।” শিকোয়াবাদ ! এই দুষমনের সঠিত এটোয়া পর্যান্ত সাতশ কুড়ী মাইল যাইতে হইবে —আমার অন্তরাত্মা শিঙ্গরিয়া উঠিল । গাড়ী আসানসোলে পৌছিতেই আমি অন্ত কামবায় চলিয়া গেলাম । আমি যাক্টতেছি দেখিয়া সেই লোকটা তাঙ্গার সঙ্গীকে বলিল—“সাব ভাগত!” আমি চোখ রাঙাষ্টয়া একবার তাঙ্গব প্রতি কটাক্ষ করিলাম। লোকটা হা হা করিয়া হাসিয়া উঠিল । ঠাসিটি কিন্তু বড় সরল-সে হাসি সেই দুষমনের মুখে বড় বিসদৃশ দেখাইতে লাগিল। আমি আব মুহূৰ্ত্ত কাল সেখানে অপেক্ষা করিলাম না । ( २ ) রাত তখন প্রায় বারোটা—এটোয় পৌছিলাম। মাঘমাস—কনকনে শীত। তার উপর টিপ টপ বৃষ্টি পড়িতেছিল। ষ্টেশনে অমুকুলের আসিবার কথা ছিল কিন্তু তাঙ্গকে দেখিতে পাইলাম না । একে অচেনা দেশ, তায় ঘোর অন্ধকার—একটু চিন্তিত হইলাম। অনুকুল লিথিয়াছিল—“চুঙ্গীকা বাবু বলিলেই গাড়োয়ান বাস। চিনিবে। কিন্তু পশ্চিম খারাপ দেশ, মারিয়া কাড়িয়া নেয় যদি ?—ভাবিলাম ‘পাড়ে’কে সঙ্গে আনিলে ভাল হইত । হঠাৎ আমার সাহস ফিরিয়া আসিল—সঙ্গে তো বন্দুক আছে ! মালপত্রগুলো কুলিকে দয়া গুছাইয়া রাখিয়া গাড়ীর উদ্দেশে যাইব এমন সময় পশ্চাৎ হইতে কে আমায় স্পশ করিল। একটু চম্‌কাইয়া ফিরিয়া দেখি—এক দীর্ঘাকার যুবা পুরুষ-—গালভরা দাড়ি, মাথায় আসমানী রঙের এক প্রকাও পাগড়ী—চুড়িদার পাঞ্জামা—পায়ে নাগরা জুতা, গায়ে একখানা লালের উপর কালোচেকু কাশমির র্যাপার, হাতে এক মোট লাঠি ! আমি স্তম্ভিত হইয়। আগন্তুকের দিকে ক্ষণেকের নিমিত্ত চাহিয়া রছিলাম—আগন্তুক হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল । মনের দাগ ミ > কণ্ঠস্বরের পরিচয় পাষ্টয়া, বুঝিতে আর বাকী রহিল না। আমি বলিলাম—“লাষ্ট জোভ! তুমি যে একেবারে পূরে “হিন্দুস্থানী’ সেজেছ ।” - অনুকূল আমার সাঙ্গে বা পোষাকের প্রতি ইঙ্গিত করিয়া বলিল—“ আমার এ পোষাকটাকে ‘বাঙলা তবু আপনার বলতে পারে !" আমি হাসিয়া বলিলাম—“সাবধান ! সিডিশনের গন্ধ বেরুচ্চে !” অনুকূল শ্মশ্রীরাজির মধ্যে অঙ্গুলী সঞ্চালন করিতে করিতে দলিল—“ও: ভুলে গেচি–তুমি ডেপুটি !” হঠাৎ আমার দৃষ্টি বন্ধুর অজস্রজাত নিবিড় কৃষ্ণ শ্মশ্ররাজিব উপর পতিত কঠল—-বলিলাম “এটোয়ার জলহাওয়ায় দাড়িটিরও দেখচি হেলথ ফিরে গেচে ।” অনুকুল হাসিয়া বলিল—“ ওঠে এটা ইকনমির চিহ্ন।” আমার জঠরে রীতিমত ক্ষুধার উদেক হইয়াছিল, বলিলাম—“ষ্টেশনে যে রাত কাটিয়ে দেবার চেষ্টা করচ--- এটাও ঐ ইকনমির উদ্দেশ্যে নাকি ?” অনুকুল গরিলাব পাত্র নচে—বলিল “পশ্চিমে ত হাওয়া থেতে এসেচ--তার ত আর দাম লাগে না !” গাড়ীতে যাইতে যাইতে অনুকুলকে জিজ্ঞাসা করিলাম-—“আমার জন্যে যে বাঙলাটা ঠিক করেচ সেট কোন দিকে ?” অনুকুল কত্রিম আশ্চর্যোব সহিত বলিল—“লাঙলা' !— “বাঙলা” আবার কোন দিকে হয় ? সেত চিরকালষ্ট পশ্চিমের পূব দিকে ” আমি ললিলাম—“তোমার ও ইয়ারকি রাখ !” অমুকুল মুখখান গম্ভীর করিয়া বলিল -“তলে না হয় সিরিয়াস্নেসের সঠিত বলচি -ঙ্গে আমার স্বদেশের প্রিয় পাখি ! তোমার জন্তে আমি হৃদয়কুঞ্জে নিবিড় প্রেমের নলীন নীড় রচনা করিয়া রাপিয়াছি । তুমি আমার প্রবাসের দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী’ নিবিড় ভাবে অমৃত-সিক্ত করিয়া তোল!” (o) অনুকূলের বাসাতে আসিয়াই উঠিলাম। শয়ন করিতে রাত্রি অধিক চষ্টয়া গেল। পরদিবস উঠিতে বেলা হইল । তাঙ্গাতে আলস্থান করিয়া