পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ শাস্ত্রে বর্ণিত এই কথাগুলি আমাদের কেবল কল্পনা বলিয়া উড়াইয়া দিবার ক্ষমতা নাই। প্রতিদিনই আমাদের চোখের সন্মুখে ইহার প্রমাণ আসিতেছে। সস্তানকে গর্ভে ধারণ করিয়া অবধি জননীর কি তপস্তার বিরাম আছে ? আপনার জীবনের কতখানি অংশ দিয়া যে মা একটা সুকুমার শিশু সৃষ্টি করেন তাঙ্গ আমরা ভাল করিয়া অনুমানই করিতে পারি না । ক্ষুদ্র শিগুটীকে কোলে পাইয়া অবধি জননী তপস্তায় মগ্ন হষ্টয়া গেলেন। তাহার সেই একাগ্র তপস্তায় সন্তান দিনে দিনে নুতন ভাবে বাড়িতে লাগিল। মা তাঙ্গকে আপনার প্রাণ দিয়া, মন দিয়া, শরীর দিয়া গড়িতে লাগিলেন। মা নিজের হাসি দিয়া শিশুর কচি ঠোটে হাসি ফুটাইলেন, মারের চোখের আলোকে সন্তান প্রথম জগৎ দেখিতে শিথিল, মায়ের স্নেহমাথা সম্ভাষণে তাঁহার প্রথম ভাষা শিক্ষা । এই তপস্তা কোথায় না আছে ? জীবজগতে, প্রাণীজগতে—মচেতন জড়জগতেও তপস্তার বিরাম নাই। একটা মুকুলকে ফুটাইয়া তুলিতে বুক্ষের কতখানি আত্মদান, কতখানি তপস্তা । মায়ের স্নেহ যেমন শিশুকে বেষ্টন করিয়া থাকে তেমনি সবুজ রংএর পল্লবগুলি যে পর্য্যন্ত ফুলট রৌদ্রের তাপ বায়ুর পীড়ন সচিবার উপযুক্ত না হয় সে পর্যান্ত কত যত্নেষ্ট তাহাকে ঢাকিয়া রাখে। এই যে ফুলটা একটা পরিপক্ক বীজগর্ভ ফলের সৃষ্টি করিতেছে ইহার ভিতর পুষ্পের কি অসামান্ত আত্মদান ! আপনাকে নিঃশেষে বিতরণ করিয়া তবে ফুল ফলটকে গড়িয়া তুলিতেছে। কঠিন শিলাকনদরে রুদ্ধ নিঝরধারা কত না তপস্তায়— কত আঘাত সঞ্চিয় কত আঘাত দিয়া আপনাকে বন্ধনমুক্ত করিতেছে ; তাঙ্গর পর নদীরূপে আপনাকে বিলাক্টর ধরিত্রীকে শস্তণ্ডামলা করিয়া তুলিতেছে। “তপঃ” এই শব্দটীর ভিতর কত যে অর্থ আছে, তাতার সীমা নাই । কতক অর্থ বলিয়া বুঝান যায়, কতক মনে বুঝা যায়, কতক অর্থ যেন বুঝিয়াও বুঝা যায় না। অশদ্য ব্ৰহ্মাণ্ডে এইটাই প্রথম শব্দ, এইজন্ত এইটাই সকল শব্দের বীজস্বরূপ। সহজভাবে যদি আমরা তপস্যার এইটুকু অর্থ বুঝি, যে, “আপনাকে বিতরণ করিবার যে শক্তি, সেই শক্তি অর্জন করিবার ও প্রয়োগ করিবার সাধনার নামই তপস্তP প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAA [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড


.۰۰-.-۰۶عر دهه عبید .۰-هم ...****--.”"..."-----"--

তাহা হইলে আমাদের ঠিক বুঝা হইবে না। শুধু বিতরণই যদি হয় তবে কি তপস্তার পরিণাম কেবল রিক্ততায় গিয়া দাড়াইবে ? পরিপূর্ণ অখণ্ড পূর্ণানন্দময় ভগবান আপনাকে দান করিয়া জগৎ সৃষ্টি করিলেন,-জগন্নাথ कि জগৎ সৃষ্টির জন্ত আত্মদানের ফলে খণ্ডিত ও অপূর্ণ হইয়া গেলেন ? জমা খরচের গণিত-শাস্ত্র তাষ্ট বলে বটে, কিন্তু এ আবার এক নূতন গণিত-শাস্ত্র। ইঙ্গর শুভঙ্করের আর্য্যায় লেখা আছে “যতই করিলে দান তত যাবে বেড়ে " একটা প্রদীপ হইতে আলোক লইয়া আর একটী, দুটা, শত সহস্র দীপশিখা জলে, তথাপি যে দীপশিখা শতসহস্র দীপকে জ্যোতি দান করিল তাঙ্গার জ্যোতি এই ব্যয়ে ক্ষয় পায় না, তাহার শিপা তো স্নান ভক্টয়া যায় না । নদী এত যে জল বিলায় তবু তো নদীর জল ফুরায় না । ইহার কারণ কি ? এ কোন নুতন গণিত? ইতার কারণ, “তপঃ” এই শব্দটা জাগরণের মন্ত্র । যতক্ষণ আমি ঘুমাইয়া থাকি ততক্ষণ অামার জীবন থাকাতে ও না থাকাতে তত বেশ পার্থক্য থাকে না । যতক্ষণ না কোন যন্ত্র চলিতে থাকে ততক্ষণ তাহার চলিবার শক্তি থাকিলেও তাঙ্গতে আর অচল পদার্থে কিছুষ্ট প্রভেদ দেখা যায় না । একটা দীপ জালিয়া যদি ধাম ঢাকিয়া রাখি তবে সে দীপ নিৰ্ব্বাপিত অথবা প্ৰজলিত উভয়ষ্ট সমান । আমার যে প্ৰtণ আছে তাঙ্গর পরিচয় কিসে পাওয়া যায়? আমি এই যে হাত নাড়িতেছি, এই যে কথা বলিতেছি, আমার প্রাণের একটা অংশ দিয়া একটা স্পন্দনের, কতকগুলি শব্দের স্বষ্টি করিতেছি, আমার সজীবতার পরিচয় ইহাতেই পাওয়া যাইতেছে। যদি ভগবান কঠিন শাসকের মত চোখ রাঙ্গ।ইয়া বলিতেন “তোমাদের প্রাণ দিয়াছি বটে, কিন্তু খরচ করিয়া ফেলিতে পাইবে না”, তবে তা’র সে দেওয়া না দেওয়া সমানই হষ্টত। নাবালকের সম্পত্তির মত তাছাতে অধিকার থাকিয়াও কোন অধিকার থাকিত না । কিন্তু ভগবান তে তাহা বলিতে পারেন না, তিনি যে আপনাকে বিলাষ্টয়া আপনার আনন্দ দিয়া তবে এই প্রেমে পুত, সৌন্দর্ঘ্যে ভূষিত, আননে উল্লাসিত জগৎ গড়িয়াছেন, তিনি যে আপনার চৈতন্ত দিয়া জগৎ সঞ্জীবিত করিয়াছেন। ধনী যেমন