পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२b” প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ চিত্ত পরিপূর্ণ রচিয়াছে, সেখানে কোন লাভ কোন ক্ষতি সে আনন্দ বৃদ্ধি কি মলিন করিতে পারে না । মাটীর আল দিয়া বাধা সরোবরের জল রৌদ্রতাপে শুখাইয়া যায় আবার বৃষ্টিধারায় পরিপূর্ণ ইষ্টয় উঠে, কিন্তু সকল বন্ধনহীন সমুদ্রের জলে হ্রাসবৃদ্ধি নাই । যখন তপস্যাপুত আনন্দ লাভক্ষতির বাধন কাটাইয়া মুক্ত হইয়াছে তখন আর তাঙ্গকে স্নান করিতে কেহ সক্ষম নহে । সুরের যেমন আদিতে ‘সা’ আবার অন্তেও 'সা’, তেমনি তপস্তারও আদি অবসানে সেক্ট এক রাগিণীষ্ট বাজে “আনন্দম্ পরমানন্দম্ ! ব্রহ্মার মানস কন্যা বীণাপাণির অমৃতমধুর বীণাধানিতে যে রাগিণী বাজিয়াছে, প্রলয়কালে রুদের পিনাকগর্জনে ৪ সেই এক রাগিণীষ্ট বাজে “আনন্দম্ পরমানন্দম্ ” এ সব কথা শুনিতে যেন নিছক কবিত্বের মতই শুনায়, বাস্তব জগতের পক্ষে এ সমস্ত কথা কতথানি থাটে সে বিষয়ে সহজেই সন্দেহ উপস্থিত হয় । কিন্তু একলব্যের প্রসন্নমনে বৃদ্ধাঙ্গুলিদানের মত এমন অসম্ভব ঘটনাও পৃথিবীতে ঘটিতেছে । কি করিয়া ঘটিল, কেমন করিয়া ঘটিতে পারে তাঙ্গ ভাবিয়া আমরা বিস্ময়ে বিমুগ্ধ হইয় থাকি । আমাদের দেশ-কাল-নিমিত্তে নিয়মিত জ্ঞান দেশকালের অতীত কুলীন আনন্দ-সমুদ্রের ধারণা করিতে পারে না । সংসারে স্নেহে প্রেমে করুণায় প্রতিদিন আমরা যে আনন্দের আভাস পাই সে যেন এই মহা সমুদ্রেরই একটা অংশ, মধ্যে দেশ-কাল-নিমিত্তের পাথরের প্রাচীর উঠিয়াছে —তাই মনের ভিতর বাজিতেছে “তপঃ, তপঃ !” তপস্যা কর । তপস্যা কর! ওগো বনী, মুক্ত হও । যুগ যুগ ধরিয়া আঘাত দিয়া আঘাত সহিয়া শিলা প্রাচীর ক্ষয় কর । ཨི་]:--- শক্তির শক্তি চোর, দস্থা কহে—সাধু ভেবে দেখ মনে, রয়েছ শঙ্কিত নিত্য মোদের পীড়নে । সাধু কহে—তবু জেনে, ফির দেশে দেশে, মোদের শাসনে থাকি?--ভণ্ড-সাধু বেশে । শ্ৰীমুরেন্দ্রলাল সেনগুপ্ত । { ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড কলঙ্ক বাতাবি-কুঞ্জে সন্ধ্যার লায় পুষ্পপরাগ-চোরকলঙ্ক মন, চেয়ে দেখ আজি সঙ্গী মিলেছে তোর । দিবা অবসান, রবি হ’ল রাঙ পশ্চিমাকাশে নটুকন-ভাঙা ; সঙ্গহীনের যাঙ্গ কিছু সাজ সাঙ্গ করেছি মোর, কুঞ্জক্কুয়ারে বসে আছি এক কুসুমগন্ধে ভোর । আধফুটন্ত বাতাবিকুসুমে কানন ভরিয়া আছে, কি গোপন কথা গুঞ্জরি অলি ফিরিছে ফুলের কাছে ; ফুটনোন্মুখ ফুলদলগুলি পুলক-পরশে উঠে দুলি জুলি’, গন্ধভিখারী সন্ধ্যার বায় ফুল-পরিমল যাচে— সঙ্কোচে নত পুষ্পপালিকা, অতিথি ফিরে বা পাছে ! বেল বয়ে যায়, উন্মাদ বায় অসি’ কহে বাব বার সন্ধ্যা হয় যে, অন্ধ কুসুম খোল অন্তর-দ্বার । মুকুল-গন্ধ অন্ধ ব্যথায় কুড়ির বন্ধ টুটিবারে চায়, লুটাইতে চায় সন্ধ্যার গায় রুদ্ধ আবেগ ভার, বিকাইতে চায় চরণের পরে কৌমার সুকুমার । মন্তর পদে সন্ধ্য। নামিল কাজল তিমিরে আঁকা, দুয়ারে অতিথি, অস্তরে ব্যথা সম্ভব সে কি থাক ? গন্ধে পাগল অন্তর যার আবরণ মাঝে থাকে সে কি আর, খুলি দিল দ্বার, পরাণ তাছার পরাগ শিশিরে মাথা, কুঞ্জ ঘেরিয়া আঁধারে ছাইল স্বপ্ন-পার্থীর পাখা । বাতাবি-কুঞ্জে সন্ধ্যার বায় পুষ্পপরাগ-চোর, হারে কলঙ্কী হৃদয় আমার, সঙ্গী মিলেছে তোর। দূর দিগন্তে রবি হ’ল সারা অম্বর ভরি’ ফুটে উঠে তারা, নব ফুটন্ত নেবুর গন্ধে আসিল তন্দ্রী-ঘোর ;--- কলঙ্ক মন, মুগ্ধ হৃদয়—একি পরিণাম তোর। ঐষতীন্দ্রমোহন বাগচী।