পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ر\(ك মধ্যে রাজসরকার অপেক্ষ প্রবল হইয়া উঠিল । তাহার ধৰ্ম্ম-বিদ্রোহীদের দমন ও স্বধৰ্ম্মমতের পরিপোষকতার জন্ত রাজসরকারের সাহায্য লষ্টল । এবং পুরোহিততন্ত্র স্থাপিত করিল । পুরাতন রোমে ধৰ্ম্মকে রাষ্ট্রনীতির বাহন স্বরূপ করিয়া রাথিয়াছিল। কিন্তু পরে যখন সৰ্ব্বত্রই এক ধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠা হইয়া গেল তখন ধৰ্ম্মসভঘই শাসন ব্যবস্থাকে শাস্ত্রাচারের অনুগত করিয়া তুলিল । এই চার্চ রাজসরকারকে ধৰ্ম্ম সমর্থনের একটি উপায় স্বরূপ করিয়া লক্টল । খৃষ্টান সম্রাটগণ পৌত্তলিক রীতি নীতি আচার বিচারের বিরুদ্ধে আইন প্রস্তুত করিলেন ও সমস্ত দেব মন্দির একেবারে বন্ধ করিয়া দিলেন । যখন পশ্চিম ইয়োরোপে বৰ্ব্বর জাতির আক্রমণে রোম সাম্রাজ্য বিদীর্ণ হইয়া গেল, তখন সেই সাম্রাজ্যের ধ্বংসের উপর পোপতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হইল এবং তাঙ্গার নিজ অধিকারের মধ্যে সে রাজকীয় স্বাধীনতা রক্ষা করিতে লাগিল । যুরোপের পৌত্তলিক ধৰ্ম্মজগতে রোম রাজ্য যেমন কেন্দ্র স্বরূপ ছিল খৃষ্টানজগতে রোমের চার্চ সেই ক্ষমতা প্রাপ্ত হইল। রাজনৈতিক সম্বন্ধে যাহারা বিচ্ছিন্ন ছিল খৃষ্টধৰ্ম্ম তাহাদিগকে একধৰ্ম্মের পতাকা-তলে একত্র করিয়া, সকলকেই “পৃষ্ঠান” এই সাধারণ নামে অভিহিত করিল। ইয়োরোপ ও এসিয়ায় খৃষ্টধৰ্ম্ম স্থাপিত হইবার অল্প পরেই মুসলমান ধৰ্ম্মের অভু্যদয় হওয়াতে কেবল রাষ্ট্রীয় জগতে নহে কিন্তু পশ্চিম এসিয়ার ও ভূমধ্য সাগরের পশ্চিম তীরস্থ দেশসমুহের ধৰ্ম্মসমাজে ও বিষম বিপ্লব ঘটাইল । তখন কনষ্টাটিনোপলের সাম্রাজ্য ধৰ্ম্মমতের স্বন্দ্বে দুৰ্ব্বল হষ্টয়া পড়িয়াছিল। কিন্তু এই দৃঢ়বিশ্বাসী উৎসাহী মুসলমানগণ ঐক্যস্থত্রে বদ্ধ ছিল । ইজিপ্ট ও সিরিয়ায় তাহার। অবিলম্বেই জয়ী হইল। উত্তর আফ্রিকায়ও রোমান গির্জা ও রোমান ভাষা একেবারে বিলুপ্ত হইল । পারস্ত দেশেও মুসলমান পতাকা জয়ী হইল। মধ্য এসিয়াতেও মুসলমান সৈন্তের অভিযান দেখা দিল । তাহার। এক এক দেশ জয় করে আর "বিলম্বে তাহাকে নবন্ধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিয়া লয়। মুসলমান ইয়োরোপ ছাইয়া ফেলিল এব• দক্ষিণ পশ্চিম ইয়োরোপে প্রায় সমস্ত স্পেন দেশ তাহাদের বশ মানিল । প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ এ বিষয়ে উভয় ধৰ্ম্মসম্প্রদায়েরই একমত ছিল । { ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড ধৰ্ম্মযুদ্ধ পাশ্চাত্য জাতির ইতিহাসে কালিমা মাথাষ্টয়াছে । ইয়োরোপ ও এসিয়ার সীমান্ত প্রদেশে মুসলমান ধৰ্ম্মের সহিত খৃষ্টধৰ্ম্মের যে সংঘর্ষ বাধিয়াছিল সেই সংঘর্ষ হইতেই সেইসকল ধৰ্ম্মযুদ্ধের উৎপত্তি এবং এষ্টরূপে ইয়োরোপ ও এসিয়ার মধ্যে জাতক্রোধের সঞ্চার হইয়াছে। এষ্টসকল যুদ্ধের অবসানে ইয়োরোপে খৃষ্টধৰ্ম্ম ও এসিয়ায় মুসলমানধৰ্ম্ম লব্ধপ্রতিষ্ঠ হইল। কিন্তু এই দুই ধৰ্ম্মমতের । ভয়াবহ সংঘর্ষে দুষ্ট পক্ষেষ্ট ধৰ্ম্মোন্মত্ততার স্বষ্টি হইল । তখন খুষ্টধৰ্ম্মের সেবকগণ সামরিক ভাবাপন্ন ও প্রচারধৰ্ম্মী হইলেন । তখন ধৰ্ম্ম প্রচারই দেশজয় করা ও উপনিবেশ স্থাপন করার প্রধান উদ্দেশ্য বলিয়া গণ্য হইল। অবশেষে যখন পুরাতন ক্যাথলিক ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিয়া প্রটেস্টাণ্ট সম্প্রদায় পৃথক হইয়া গেল তখন ইয়োরোপের সমস্ত বিভিন্ন দেশ পরস্পরের প্রতিদ্বন্দী চইয়া উঠিল এবং সেই যুগের দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহের কালে ধৰ্ম্মবিদ্বেষ হইতেই যত কিছু রাজনৈতিক হিংসা বিদ্বেষের উৎপত্তি হইয়াছিল । এক্টরূপে পশ্চিম এসিয়া ও ইয়োরোপের ধৰ্ম্ম-ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যায় যে উভয় দেশেই রাজসরকারের সহিত ধৰ্ম্মের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল । শতাব্দী ধরিয়া রাষ্ট্রনীতির উপর ধৰ্ম্মসজেঘর অত্যন্ত প্রভাব ছিল এবং তাছাই দেশের ভাগকে পরিচালনা করিয়াছে । প্রচলিত ধৰ্ম্মমতকে সমর্থন করা যে রাজসরকারের কর্তব্য তাহাদের মতে ধৰ্ম্মবিদ্রোঙ্গীদের দমন কলা জনসাধারণের কৰ্ত্তব্য । সে সময় মনে করা হইত যে যে দেশে এক ধৰ্ম্ম নাই সেই দেশের রাষ্ট্রতন্ত্র কখনই প্রজাদের ঐক্যসাধন করিতে পারে না, তাই এই বিষয়ে ধৰ্ম্মসঙ্ঘের সহিত রাষ্ট্ৰতন্ত্রের মিল ছিল । এই উপায়েই খৃষ্টধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠা। এখন একবার এসিয়ার আরো স্বদুর দেশসকলের ধৰ্ম্ম-ইতিহাস আলোচনা করিয়া দেখা যাক। এইসকল দেশে গ্রীস বা রোমের সভ্যতার আলোক প্রবেশ করে নষ্ট, এখানে খৃষ্টধৰ্ম্ম বা মুসলমান ধৰ্ম্মের উৎপত্তির পূৰ্ব্বে যে-সকল ধৰ্ম্ম ও পুজা-অনুষ্ঠান ছিল আজও তাঁহাই আছে। কেবল ভারতবর্ষ ও চীনে ধৰ্ম্মের সহিত রাষ্ট্রনীতির কতটা যোগ তাহাই দেখিব । কারণ এই দুই দেশই বৌদ্ধধৰ্ম্ম অনেক