পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8b" তখন ব্যারিষ্টার ডাক্তারেরই মত বহুক্ষণ নির্ণিমেষ লোচনে এষ্ট প্রমাদ-সস্কুল উপহারের বস্তুটির প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেন, অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত তিনি যেন কি ভাবনায় নিবিষ্ট রছিলেন, পারস্থার দীপাধারটিতে হস্তাপণ করিলেন । কিন্তু দীপাধারটির ব্যবস্থা কি করিলেন, কিছুই নির্ণয় করিতে পারিলেন না । মনে মনে তিনি চিন্তা করিলেন, “এই দীপাধারটি প্রকৃত শিল্পপ্রতিভার চরমোৎকর্ষ ; এরূপ সুশোভন জিনিষটি ফেলিয়া দেওয়া কিছুতেই সঙ্গত হইতে পারে ন। —অথচ এ ঘরে স্থানদান ও অসম্ভব । এরূপ জিনিষ উপহার দেওয়ার পক্ষেই বেশ উপযুক্ত । বন্ধুবান্ধবকে এমন সুন্দর জিনিষ উপহার দিলেই ইঙ্গার যথোচিত সুব্যবস্থা করা হয়। আমার বন্ধুদের মধ্যে রঙ্গালয়ের প্রসিদ্ধ অভিনেতা, রঙ্গরসাভিনয়ে সুপটু শাশ্বকিনকে এই সুন্দর জিনিষটি উপহার দিলে ভাল হয় না ? আমি এখনই তাহাকে ইহা দিয়া আসিব । তিনিতে এসব জিনিষ বেশ পছন্দ করেন ; বিশেষতঃ আজ রাত্রে তার গুহে এক সান্ধ্য সমিতি আছে ; আজ তিনি এ উপহার পাইলে বিশেষ সন্তুষ্ট হৃষ্টতে পারেন ।” দীপাধারটি পুনরায় উত্তমরূপে আবৃত হইল । ব্যারিষ্টার কফু তদীয় হৃদ্য বন্ধু শাশ কিনকে তাঙ্গ সাদরোপহার প্রদান করিলেন । আবরণ খুলিয়া দীপাধারের অলৌকিক সৌন্দর্য্যদর্শনে রসিকচুড়ামণি শাশকিন্তুও তৎক্ষণাৎ মুগ্ধ হইয়া গেলেন । সেদিনকার সান্ধ্যসমিতিতে যে কয়জন সুহৃদ সমবেত ছিলেন, সকলেই উচ্চকণ্ঠে এই অপূৰ্ব্বদর্শন দীপাধারের প্রশংসা করিতে লাগিলেন । ক্রমে র্তাহীদের প্রশংসাসূচক বচনাবলী শিল্পদেবতার এবং সঙ্গে সঙ্গে দীপাধার-নিৰ্ম্মাতার স্তবে পরিণত হইয়া উঠিল । আমোদজনক হাস্তকৌতুকে সে ভবন পূর্ণ হইয়া গেল । দেখিতে দেখিতে একটু রাত্রি হইল। তখন সে রজনীর অভিনয় আরম্ভ হইবে । একজন প্রসিদ্ধ অভিনেত্রী নাট্যারম্ভের পূৰ্ব্বে শাশ কিনের দ্বারে উপস্থিত! র্তাহার পদশব্দে শাশকিনের মোহ ভাঙ্গিয়া গেল ! এতক্ষণে যে পিত্তল-বিনিৰ্ম্মিত দীপাধারের আশ্রয়স্থল অপরূপ রূপলাবণ্যসম্পন্ন বসনবিরহিত এই মূৰ্ত্তিযুগল সান্ধ্যসমিতিতে প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ [ s०भ छाश, २ग्न थ७ সমবেত স্বহৃজনগণের মনোরঞ্জন করিতেছিল, এই একটিমাত্র মহিলার সমাগমে, তাঙ্গ তাহার নিকট নিতান্তই অশোভন বোধ চইতে লাগিল। শাশকিন্তু আপনার ক্রট সংশোধনে ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন । কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয় অমনি ত্বরিত কণ্ঠে বলিয়া ফেলিলেন, “সুন্দরি, আপনি দ্বারদেশে ক্ষণকাল অপেক্ষ করুন, কক্ষে প্রবেশ করিবেন না, আমি অভিনয়োচিত বেশভূষা পরিধান করিতে বিব্রত আছি। বেশভূষায় সজ্জি ত হইয় অবিলম্বে আপনাকে সংবাদ দিতেছি।” বন্ধুজনের সাহায্যে তাড়াতাড়ি দীপাধারটি স্থানান্তরিত করিয়া অভিনেত্রীকে সংবাদ দিলেন । সে রজনীর অভিনয় শেষ হইয়া গেলে, শাশকিস্ পুনরায় দীপাধারের প্রতি বিস্ময়-বিল্ফারিত নয়নে বহুক্ষণ চাহিয়৷ চাহিয়া ভাবিলেন, “আতা, এই জিনিষটি কি সুন্দর । কিন্তু চায়, আমার গৃহে নিত্য নিত্য কত কত অভিনেত্রীর সমাগম হয়, ইহা গৃহে রাখিলে শিষ্টতা রক্ষা করা দায় হইয়া উঠিবে ; সদা সৰ্ব্বদা এ দীপাধার তাড়াতাড়ি স্থানান্তরিত করার ঝুকি ঘাড়ে লইয়া এ অপূৰ্ব্ব দ্রব্যটি গুহে রাখা অসম্ভব !" অথচ বন্ধুর উপহার-প্রদত্ত অপরূপগঠন এই মুক্তিযুগল-হস্ত-দ্যস্ত দীপাধারটির কি ব্যবস্থা করিবেন, নিৰ্দ্ধারণ করিঙে র্তাহার অবিরল রসকল্পনাপ্রস্থ উর্বর মস্তিষ্ক আলোড়িত হইল, কিন্তু কিছুতেই কোন সমীচীন উপায় উদ্ভাবনের সম্ভাবনা দেখা গেল না । দুষ্ট একদিনের মধ্যে তাহার তৃত্য প্রভুকে একটু অন্তমনস্ক দেখিয়া কারণ অবগত হইল । তখন সে নিতান্ত সহজ উপায় দেখাষ্টয়া দিল । প্রভুকে বুঝাইল, এই জিনিষটি বিক্রয় করিলেই আপদ চুকিয়া যায়। এই সব জিনিষ বিক্রয় করিতেও কোনোই ঝঞ্জাট নাই ; সহরের মধ্যে শাচার মা এক্ট সব জিনিষ খরিদ বিক্রয়ের ব্যবসায় করিয়া থাকে । অনদ্যোপায় হইয়া ভূত্যের পরামর্শমতে কাৰ্য্য করাই পরিশেষে শাশ্বকিন্‌ স্থির করিলেন । অচিরে দীপাধার শাচার মা’র হস্তে আসিয়া পড়িল । প্রাতে শাচ পুনরায় ডাক্তার কোশেলের নিকট খবরের কাগজে দীপাধারটি মুড়িয়া লষ্টয়া উপস্থিত চইল ।