পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»brw• » . সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ উচ্চ শিক্ষাও প্রদান &করিতেন। ভাষা, বক্তৃতা, গদ্য রচনা, অলঙ্কার প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষার ভিতর দিয়া তিনি আনুষঙ্গিক সময়োচিত সামাজিক, নৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় বিষয়ও আলোচনা করিতেন । এবং ছাত্রদিগকে একসঙ্গে সুচতুর, কম্মিষ্ট, সৌজন্তবান এবং বিচক্ষণ করিতে চেষ্টিত হইতেন। শিক্ষাতত্ত্ব সম্বন্ধে তাহার মত প্লেটোর সহিত প্রভেদ । প্লেটোর দ্যায় তিনি কোনো প্রবেশিক পরীক্ষা করিয়া ছাত্র বাছিয়া লইতেন না। তিনি ছাত্রদিগকে গণিতে শিক্ষিত হইতে বলিতেন কিন্তু এই বিষয়ে স্বয়ং কোন শিক্ষাদান বা পরীক্ষা গ্রহণ করিতেন না। তাহার মতে গণিত ও দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া মানুষ কাণ্ডজ্ঞানরহিত হয়। চিরকাল এই সকল বিদ্যায় নিমগ্ন থাকিলে বুদ্ধিশক্তি লোপ পায়। কিন্তু ইহাদের ফলে চিত্তের ধীরতা জন্মে, মন সমাহিত হয়, এবং সত্য আবিষ্কারের শক্তি উদ্ভূত হয়। স্বতরাং তিনি মনে করিতেন যে প্রকৃত দার্শনিকদের চিরজীবন চিন্তায় নিমগ্ন না থাকিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্রে প্রষ্টি হই। সমাজ ও সংস্কার সুচারুরূপে নিৰ্ব্বাহ করা উচিত। এইজন্য স্বয়ং গণিত ও দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষাপ্রদান না করিয়াও নিজকে দার্শনিক বলিয়া পরিচয় দিতেন। উদ্দেশু রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মের উপযোগিতা প্রদান করা। সামাজিক, পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের জন্ত উপযুক্ত কৰ্ম্মী প্রস্তুত করাই তাহার শিক্ষার উদ্দেশু কিন্তু তিনি বুঝিতেন যে, সকল অবস্থায় উপযোগী ব্যবস্থা শিক্ষা দেওয়া কখনই সম্ভবপর নয়। সুতরাং কোন ব্যক্তিকে কাৰ্য্যকুশল করিতে হইলে বিচার করিবার শক্তি এবং প্রকৃত অবস্থা হৃদয়ঙ্গম করিবার ক্ষমতা বিকাশ করিয়া দেওয়াই একমাত্র উপায়। এইজন্য তাহার বিদ্যালয়ে আলোচনা করিতে শিক্ষা দেওয়া হইত। কোন একটা বিষয় লইয়া ছাত্ৰগণ বস্তৃতা করিত অথবা স্বয়ং বস্তৃতা করিতেন অথবা প্রবন্ধ লিখিতেন। শিক্ষাপ্রণালী স্বরচিত ও ছাত্নলিখিত প্রবন্ধসমূহের আবৃত্তি ও সমালোচ৭৷৷ ভাষার উৎকর্ষ সাধনোপায় এবং উত্তম প্রবন্ধের উপাদানসমূহ সম্বন্ধে সাধারণ শিক্ষাদান করিতে যাইয়৷ প্রবাসী--জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭। [ ১০ম ভাগ । ইনি স্বরচিত প্রবন্ধসমূহ এবং অন্যান্য বক্তাদের বক্তৃত৷ বিশ্লেষণ করিয়া লিখনপ্রণালীর দৃষ্টান্ত দিতেন। তৎপরে বিষয় স্থির করিয়া দিতেন ; এতৎসম্বন্ধে ছাত্রদিগকে বক্তৃত৷ লিখিতে হইত। ইহাতে যথেষ্ট চিন্তাশক্তির উদ্রেক হইত। বিচার করিবার ক্ষমতা জন্মিত। ইহার ফলে নৈতিক বিষয়ে সদসৎ সম্বন্ধে তাছাদের জ্ঞান জন্মিত। সমসাময়িক রাজনৈতিক সমস্তাসম্বন্ধে অনেক সময়ে এইরূপ প্রবন্ধ-প্রতিযোগিতা চলিত। কোন সময়ে ঐতিহাসিক ঘটনা প্রতিপাদ্য বিষয় থাকিত। কথন কথন বীরগণের কার্যা লইয়া আলোচনা হইত। এবং যখন যখন তিনি সমাজের রাজনৈতিক কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে প্রবন্ধ লিপিতেন সেই প্রবন্ধ তাহার ছাত্রদিগের মধ্যে বক্ততাকারে পঠিত হইত। তাহার স্বরচিত প্রবন্ধসমূহ এইরূপে ছাত্রগণের মধ্যে পঠিত এবং তাহাদের দ্বারা সমালোচিত হইত। সমালোচনায় যাহা নিৰ্দ্ধারিত হইত তদনুসারে প্রবন্ধ পরিবর্তিত ও পরিশোধিত করিতেন । অনেক সময়ে তিনি তাহার পুরাতন ছাত্রদিগকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া স্বীয় প্রবন্ধের সমালোচনা করিতে বলিতেন । এই জন্য তাঙ্গার বিদ্যালয়কে আলোচনা-সমিতি অথবা সমালোচক-সঙ্ঘ বলা যায়। ভাষা ও লিখন-প্রণালীর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি । তিনি প্রবন্ধসমূহের ভাষা সম্বন্ধে অত্যধিক মনোযোগী ছিলেন। তিনি ছাত্রদিগকে বলতেন যে, কথোপকথনের সাধারণ ভাষায় বক্তৃত৷ উত্তম হয় না। প্রতিপাদ্য বিষয়ের গাম্ভীৰ্য্য ও সাধারণ অবস্থা বুঝিয়া রচনাকৌশল, বাক্চাতুর্য্য, শব্দবিন্যাস, এবং সাধারণ লিখনপ্রণালী অবলম্বন করা উচিত। এইরূপে উজ্জ্বল ও অলঙ্কারপূর্ণ ভাষায় প্রবন্ধ লিথিয় ও শুনিয়া বক্তৃতা ও সমালোচনা করিয়া তাহার ছাত্রেরা বাগ্মিতায় পারদর্শী হইতে পারিয়াছিল। কিন্তু তিনি নিজে বকৃত করিতে পারিতেন না। তাহার ক্ষীণকণ্ঠ ছিল বলিয়া তাঙ্গাকে লেখনীর আশ্রয় গ্রহণ করিতে হইত। রাজনৈতিক বিষয়ে নবতঞ্জের প্রবর্ত্তন। তিনি সময়ের পরিবর্তনের অবখ্যম্ভাবী ফল বুঝিতে পারিয়াছিলেন ; এজন্য গ্রীকদিগের দেশহিতৈর্ষিণার পুরাতন এবং ২যু সংখ্যা | প্রথা বর্জন করিতে শিক্ষা দিতেন। তিনি সমগ্ৰ গ্ৰীক জাতির একই স্বার্থ এবং একই আদর্শ শিক্ষা দিয়া ছাত্রদিগকে উদার ও প্রশস্তমনা করিতে চেষ্টিত হইতেন । | বিদ্যালয়ের অবস্থা-সমস্ত গ্রীসের ছাত্রদিগের প্রবেশ । o এই কারণে র্তাহার বিদ্যালয়ে সমস্ত হেলাসের ছাত্রগণ আকৃষ্ট হইত। তিনি পেরিকীসের আকাঙ্গ কার্য্যে পরিণত দেপিতে পাইয়াছিলেন । তাহার সময়ে তিনি এথেন্সের বেরূপ অবস্থা দেথিয়াছিলেন তাহাতে তিনি বলিতেন, "আমাদের নগর সকল বক্তা এবং বস্তৃগণের শিক্ষকসমূহের গুরু। যাহারা এই শক্তি বিকাশ করিতে চাহেন তাহারা এই স্থানে উপযুক্ত কৰ্ম্মক্ষেত্র, উপযুক্ত স্বযোগ এবং উপযুক্ত | শিক্ষালয় পাইয়া থাকেন। এথেন্স সমস্ত জগৎকে এত পশ্চাতে ফেলিয়াছে যে ইহার ছাত্রেরা এখন সকলের উপদেষ্ট।” - - - - উপহার আয় । . তিনি বেতন গ্রহণ করিতেন ; এবং যদিও তাহার প্রতিদ্বন্দীর অল্প বেতনে অধিক শিক্ষাদান করিবার আশা প্রদান করিত, তথাপি তাহার বিদ্যালয়ে বহুছাত্রের সমাবেশ হইয়াছিল । এবং গজিয়াসের ছায় তিনিও যথেষ্ট অর্থ সঞ্চয় করিয়াছিলেন। এারিষ্টটলের বিদ্যালয় :-আলেকজাণ্ডারের শিক্ষাগুরু। এইরূপে যখন সমাজে বিশ্বজনীন ভাব প্রবেশ করিতেছিল, যখন এপিনীয়গণ সমাজের হাব ভাব বুঝিয়া এথেন্সের প্রতি মমতা ছাড়িয়া সমস্ত গ্রীসের ভবিষ্যৎ স্বার্থের প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করিতেছিল, তখন পেরিকীসের এথিনীয় সাম্রাজ্য, এথিনীয় দেশচর্যা অতীতের স্মৃতির মধ্যে পর্যাবসিত श्हेष्ठ गाशिग । मूठन डाव, न्ऊन थश्व डैनिऊ श्हेण ; নূতন সমস্তার নূতন নূতন মীমাংসা প্রদত্ত হইতে লাগিল । নবচিস্তাকে দেশদ্রোহী বলিবার কেহ থাকিল না। দেশ এখন ম্যাসিদন-রাজের । বিদেশীয় রাজার পুত্রের শিক্ষার ভার এথেন্সের সর্বপ্রধান পণ্ডিতের হাতে । এথেন্সে বিশ্বজনীন ভাবের প্রবেশ । সুতরাং এখনকার চিন্তা আর রাজনৈতিক নয়, অথবা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্ৰীকনগরসমূহের হিতৈষণা শিক্ষাদায়িনী নয় । এখনকার চিন্তাধীর ও কৰ্ম্মবীরগণ কেবলমাত্র এথেন্সের প্রাচীন গ্রীসের জাতীয় শিক্ষা । エ >brふ - -- অতীত ও০ বর্তমানে আবদ্ধ নয়. কেহ পদ্ধতি, স্পার্টার রাষ্ট্রনীতি, কেহ ভাবজগতের জাদর্শ: সমাজ ও আদর্শরাষ্ট, কেহ ভবিষ্যতের গৌরব চিত্রিত করিতে লাগিলেন। লিসীয়াম বিদ্যালয়ে জগতের সর্থবিধ বিদ্যার চর্চা । সমস্ত জগত এতদিন কেবলমাত্র গ্ৰীসবাসীর অন্তঃকরণে নয়, ইজিপ্ট, এসিরিয়া, ফিনীসিয়া, আইওনীয়া, সিসিলি, মিনেটাস প্রভৃতি স্থানবাসীর হৃদয়ে যে যে চিন্তা জাগাইয়াছে এবং সকলের ভিতর দিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তিরূপে যে যে সত্যদান করিয়াছে, বিশাল সাম্রাজ্য এখন যে যে নুতন ভাব মানুষের মনে অঙ্কিত করিতেছে, দিগ্বিজয়ী আলেকজান্দারের প্রাচ্য ও প্রতীচ্য সমন্বয়ের চেষ্টা যাহা যাহা মীমাংসা করিতেছে, আলেকজান্দারের শিক্ষক এ্যারিষ্টটল তাছার লিসীয়াম বিদ্যালয়ে সেই সমস্ত ভাবশক্তিগুলিকে এক স্থানে পুঞ্জীভূত করিয়াছেন। প্তাহার আলোচনার ফলে বিজ্ঞানসমূহের প্রতিষ্ঠা। (১) মানবসম্বন্ধীয় ৰিজান। তাহার গুরু প্লেটোর দ্যায় তিনি ভাবরাজ্যে বাস করিতেন না। তিনি বাস্তব জগৎ লইয়া ব্যাপৃত থাকি নীতি, রাজনীতি প্রভৃতি সকল শাস্ত্রগুলির মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করিয়া ইহাদিগকে প্রকৃত ঐক্য ও সামঞ্জস্ত-যুক্ত বিজ্ঞানের অাকার প্রদান করিলেন। বর্তমান জগতে এমন কোন বিদ্যা নাই, এমন কোন শাস্ত্র নাই, যাহা তাহার দ্বারা আলোচিত হয় নাই, এবং তাহার প্রতিভাবলে আধুনিক রূপ ধারণ করে নাই। স্থায়শাস্ত্র সম্বন্ধে যাহা তিনি গবেষণা করিয়াছেন তাহা অস্থাপি স্বীকার্য । শিক্ষাবিজ্ঞানও তিনি রচনা করিয়াছিলেন। (২) প্রাকৃতিক বিজ্ঞান। নৈতিক ও মানসিক বিষয়সম্বন্ধীয় শাস্ত্রগুলিকে বাবহারোপযোগী শুঙ্খলা প্রদান করিয়াই তিনি ক্ষান্ত হ’ন নাই। তাহার কার্য্যকরী চিন্তাশক্তি তিনি জড় জগতের সত্যনিৰ্দ্ধারণেও প্রয়োগ করিয়াছিলেন। তিনি বিজ্ঞানাগার লাবরেটরীতে অনেক সময়ে ফল পরীক্ষার জন্ত ব্যাপুত