পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেঞ্জিমল বলিলেন, "আমি অবশুই তাহার নিকট যাইতাম, কিন্তু সেই সময়ে শুনিলাম যে রাজা সাময়োজি * টোকিয়োরি মরিয়া গিয়াছেন এবং বর্তমান রাজকুমার টােকিমুনি বালকু—তাহার নিকট বিচার নাও পাইতে পারি এই ভাবিয়া আমি বিষয়ের সকল আশা ত্যাগ করিয়াছি। কিন্তু বাহিরে যদিও আমি কৃষক হইয়াছি, তথচ ভিতরে এখনো আমি ੱਛਜ সামুরাই ; এবং যদি কাল যুদ্ধ হয় তাহ হইলে আমার বহুকালকার বন্ধ এবং এই পরীক্ষিত তরবারি লইয়া আমার বৃদ্ধ যুদ্ধের ঘোড়াটির উপর উঠিয়া আমি পুনরায় কামকুমার উপস্থিত হইব এবং যদি আমাকে স্থাটিয়াই যাইতে হয় তাহাতেও আমি পিছাইব মা -আমি জানি তাহাতে আমি পথেই মরিয়া যাইতে পারি কিন্তু সামুরাই কখনই রাজভক্তি দেখাইতে কিছুমাত্র . ক্রেটি প্রকাশ করিবে না।” এই কথা বলিতে গেঞ্জিমলের যথার্থচরিত্র প্রকাশ হইয়া পড়িল ; তাহার কথার মধ্যে এমনি তেজ এবং বীৰত্ব নিহিত ছিল যে স্যাময়োজি ইহার আভাস পূৰ্ব্বে কিছুই পান নাই ; এখন তাহাৰ কথা শুনিয়া তিনি অতিশয় মুগ্ধ হইয় গেলেন। তিনি অতি কষ্টে নিজের কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করিয়া বলিলেন, “একদিন আপনার সহিত কামকুরায় দেখা হইবে, এখন বিদায় ; সকাল হইল বলিয়া, আর দেরী নাই ; পুনরায় রাত্রি হইবার আগে আমাকে অনেক দূর যাইতে হইবে। আপনাদের আতিথ্যের জন্য আমার অতিরিক ধন্যবাদ জানিবেন।" গেঞ্জিমল এবং তাহার স্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও স্যাময়োজি আর থাকিতে পারিলেন नां । - * * + + বৎসর শেষ হইয়া আসিল এবং বসন্তকালের প্রারম্ভে যুদ্ধসজ্জার জন্ত লোককে প্রস্তুত হইতে আজ্ঞা করা হইল। গেঞ্জিমন তাহার ক্ষুদ্র গ্রাম হইতে এই সংবাদ পাইয়া গুহার পুরাতন বৰ্ম্ম এবং বহু পরীক্ষিত তরবারি লইয়া বৃদ্ধ অশ্বে উঠি একাকী কামকুরার দিকে চলিলেন। সেখানে প্রায় রাজ্যের সমস্ত সামুরাই উপস্থিত হইয়াছিল। তাহাদের তরবারি, বর্ষ চক চক্ৰ করিতেছে, শিৱসাণ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩১৭ । SAASA SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS ১০ম ভ । সোণা রূপার কাজে ঋক্ মক্‌ করিতেছে, সঙ্গে অমুচর রহিয়াছে, আর গেঞ্জিমল অপরদিকে দীনভাবে উপস্থিত । লোকেরা চীৎকার করিয়া বলিতে লাগিল “দেখ দেখ, ভিক্ষুক সৈন্ত দেখ।” এই বলিয়া সকলে হাসিতে লাগিল। তৎক্ষণাৎ জনতার মধ্যে সংবাদ আসিল যে ঐ ভিক্ষুক সৈন্তা রাজপ্রাসাদে যাইবেন। গেঞ্জিমল মনে মনে ভাবিল— "আমাকেই তাহারা ডাকিতেছে ; বোধ হয় আমার এই ৷ অদ্ভূত পোষাকের জন্য আমাকে তাহারা ভংগনা করিবে।” তিনি রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিয়া রাজকুমারকে নত হইয়া প্রণাম করিলে, তিনি বলিলেন, “গেঞ্জিমল, তোমার সহিত একজন কিছু কথা বলিবেন।” এই কথা বলিবামাত্র পাশ্বের একটি দ্বার উদঘাটিত হইল এবং সেই বৌদ্ধ ভিক্ষু তাহার লম্বা পোষাক পরিয়া এবং মাথায়. টুপি দিয়া বাহির হইয়া আসিলেন। তিনি বলিলেন, “বেশ, গেঞ্জিমল আমি এই সাক্ষাতের প্রতীক্ষা করছিলাম।" গেঞ্জিমলের এই কণ্ঠস্বর পরিচিত বলিয়া বোধ হইল এবং চাহিয়া তাহার সেই অতিথিকে চিনিতে পারিলেন এবং বলিয়া উঠিলেন—“এ বৌদ্ধপুরোহিত না এক রাত্রে কিছুদিন আগে আমার গৃহে অতিথি হইয়াছিলেন ।” - তিনি বলিলেন, “ই, ঠিক কথা ; গত বৎসরের পুরোহিত এক্ষণে সাময়োজিটোকিয়োরি।" "া —আপনাকে আমি তাহা হইলে কি করিয়াই বা আতিথ্য করিয়াছিলাম! বিশ্বাস করুন আমি জানতাম না যে আমি কাহাকে আতিথ্য করিতেছিলাম।" সাময়োজি হালিতে হাসিতে তাহার নিকট আসিয়া বলিলেন, “তোমার ক্ষমতামত তুমি আতিথ্য করিয়াছিলে সেজন্য ক্ষমা চাছিও না। তুমি আমাকে বলিয়াছিলে যে তুমি অন্তরে একজন যথার্থ সামুরাই এবং যখনই যুদ্ধের সময় উপস্থিত হইবে তখনই তুমি আসিবে। এক্ষণে তুমি তোমার । কথামত কাজ করিয়াছ, এবং সেইজন্য তোমার সম্পত্তি । তুমি পুনৰায় পাইলে। কিন্তু তুমি যে সেই তুষার ঝটিকায় শীতের রাত্রে অতিথির সেবার জন্য প্রিয় চারা গাছ গুলি । আগুনে দিয়াছিলে, সেইজন্য তোমাকে আমি পুরস্কার করি । -- ....---------~~ পাইনের চারার জন্স ‘মৎস্নইদার’ সম্পত্তি দিলাম, । ১ম সংখ্য। ] প্লামের জন্য উমেদার’ সম্পত্তি এবং চেরির চারার জন্য সাকুরাই এর সম্পত্তি দিলাম। গেঞ্জিমল আননে ও বিস্ময়ে কথা বলিতে পারিলেন না ; তাহার পর দুই একটু কথার পর তিনি চলিয়া আসিলেন, অপর সৈন্তেরা বিস্ময়ে অবাক হইয়া থাকিল। এইরূপে স্যাময়োজি সৎ লোককে পুরস্কার এবং অসৎ লোককে শাস্তি দিয়া তাহার জ্ঞানের পরিচয় দিলেন । C2 | জীব-জন্তুদের বাসস্থান চেনা। (John B. Watson folso How animals find their way home afor of oo ) জীব-জন্তু আহারাম্বেষণার্থ অথবা অন্ত কোনো কারণে একবার নিজেদের বাসস্থান পরিত্যাগ করিলে পুনৰ্ব্বার কিরূপে অপরিচিত স্থান হইতে ফিরিয়া আসে, বহুদিন হইতে প্রাণীতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতেরা তাহার অনুসন্ধান করিয়া আসিতেছেন। ইহারা যে পথ অনুসরণ করিয়া নিজেদের বাসস্থানে প্রত্যাবর্তন করে তাহ পূৰ্ব্ব হইতেই ইহাদের নিকট পরিচিত থাকে কিনা সেইটিই বৈজ্ঞানিকদিগের মীমাংসা করিবার বিষয় । সাধারণ লোকের বিশ্বাস যে, নিজেদের বাসস্থান চিনিয়া লইবার জন্য জীব-জন্তুদের ভিতরে একটা বিশেষ শক্তি আছে । কিন্তু বৈজ্ঞানিক এরূপ প্রচলিত কথার উপর আস্থা স্থাপন করিয়া কখনো নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন না। তাহাদের মধ্যে অনেকে বলেন, যে সকল প্রাণী নিজেদের বাসস্থান হইতে বহুদূরে গিয়াও প্রত্যাবর্তন করিতে সমর্থ হয় কোনো বিশেষ শক্তি বশতঃ যে তাহারা এরূপ করিতে পারে তাছা নয়, পূৰ্ব্ব হইতেই সেই রাস্তা তাহাদের নিকট পরিচিত থাকে বলিয়াই তাহারা আপন আপন বাসস্থানে ফিরিতে পারে। কেহ কেহ তাহার উটা কথা বলিয়া থাকেন। - পক্ষীজাতির মধ্যে পায়রাকেই বাসা চেনা ব্যাপারে বিশেষ দক্ষ বলিয়া বোধ হয়। যুদ্ধে, খেলায় ও নানাবিধ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় ইহারা সৰ্ব্বদাই ব্যৱহৃত হইয়া থাকে। ইহার প্রধান কারণ, বহুদিন এক স্থানে সংকলন ও সমালোচন—জীব-জন্তুদের বাসস্থান চেনা। లీన -*-*-*-*SMMSAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS স্বথে স্কুছন্দে পালিত হইলে ৮ অপরিচিত স্থানে ইহার - বেশী দিন থাক্লিতে চায় না। আর বাসায় ডিম, অথবা শাবক থাকিলে ইহারা যত শীঘ্ৰ পারে ফিরিয়া আসিতে চেষ্টা করে। যে সকল পার্থী ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে " স্থান পরিবর্তন করে তাহারাও নিশ্চয়ই এই শক্তি হইতে বঞ্চিত হয় নাই। কিন্তু পায়রার ছায় তাহাদিগকে পরীক্ষা করিয়া দেখিবার উপায়- নাই, কারণ বহুদিন একস্থানে আবদ্ধ করিয়া রাখিলেও এই সকল পার্থী পোষ মানে না— ছাড়িয়া দিলেই অন্যত্র উড়িয়া যায়। “ম্যান অব ওয়ার” (man-o'-war bird) পার্থী বাসস্থান চেনায় অপর সকল পার্থীকেই অতিক্রম করিয়াছে বলিয়া বোধ হয়। সমুদ্র তীরে যে সকল জাতি বাস করে তাহার। অনেক সময় সংবাদ বহন কার্য্যে এই পার্থীকে পোষ মানাইয়া ব্যবহার করিয়া থাকে। এইগুলি আকারে অনেক বড় এবং ইহাদের ডানাগুলিও খুব শক্ত, উড়িয়া ইহারা অনেক উচুতে উঠিতে পারে। অনেকে বলেন, যুদ্ধ বিগ্রহের সময় সংবাদ বহন কার্য্যে পায়রার পরিবর্তে এই পার্থী ব্যবহৃত হইলে বিশেষ স্থবিধা হইতে পারে। স্তন্য-পায়ী জন্তুদের মধ্যে কুকুর ও বিড়ালের এ কার্যে" যথেষ্ট খ্যাতি আছে। বিখ্যাত ফরাসী প্রাণীতত্ত্ববিৎ ফেবর সাহেব বিড়াল সম্বন্ধে দুইটি ঘটনার উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি একটি বিড়ালকে ২৩ মাইল দূরবর্তী তাহার অপরিচিত একটি স্থানে রাথিয়া আসেন। বিড়ালটি তথায় দুই সপ্তাহ আবদ্ধ থাকিয়া, স্বস্থানে আসিয়া উপস্থিত হয়। অন্য বিড়ালটি সোজা পথে ফিরিবার জন্ত একটি নদী পর্য্যন্ত পার হইতে ভয় পায় নাই । পার্থীদের পরেই কীট-পতঙ্গকে এ কার্য্যে বিশেষ দক্ষ বলিয়া বোধ হয়। পিপীলিকা আহারান্বেষণার্থ যত দূরেই যাউক না কেন, ফিরিবার সময় ঠিক সেই পথই অবলম্বন করিয়া নিজেদের বাসস্থানে উপস্থিত হয়। কিন্তু বাসা হইতে ধরিয়া লইয়া দুই তিন শত গজ দূরে ছাড়িয়া দিলে ইহারা সহজে নিজেদের পথ চিনিয়া লইতে পারে নাঅসহায় অবস্থায় কেবল এদিক ওদিক ঘুরিয়া বেড়াইতে থাকে। অনেকেই বলেন, পিপীলিকা ভ্রাণশক্তির সাহায্যে নিজেদের আবাস স্থল চিনিয়া লয়। মৌমাছি ও বোলতা --