পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉ミミ বা বরফের জল যখন পৰ্ব্বতের উপর হইতে সাগর গড়াইয়া পড়ে তখন উহা কতকগুলি খাদ ধরিয়া পড়ে এইগুলির নাম নদী এবং বরফের নদী ( glacier) এই নদীগুলি পাথরের টুকরাগুলিকে বহিয়া লইয়া তাহদের দুই পাশ্বে রাখিয়াদিতে লাগিল। বর্তমানকালে নদীর দুই পাশ্বে ‘পলি পড়িয়া জমির স্বষ্টি এবং নদীর মধ্যে বালির চড়া পড়া অনেকেই দেখিয়াছেন, ঠিক এই রকমে পৃথিবীর বাল্যকালে অনেক স্থলের উৎপত্তি হইয়াছিল। হিমালয় পৰ্ব্বত ভাঙ্গা পাথরে, গঙ্গা, ব্ৰহ্মপুত্র ও সিন্ধু প্রভৃতি নদী আর্য্যাবৰ্ত্ত নামক স্থল খণ্ডের স্মৃষ্টি করিল। অতএব দেখা গেল দুইটী প্রধান উপায়ে স্থল নিৰ্ম্মাণ কার্য সম্পন্ন হইয়াছে-এক পৃথিবীর অভ্যন্তরস্ত অগ্নির বলে ; দ্বিতীয়তঃ, নদীর তীরে পলি পড়িয়া । পৃথিবীর চেহারা বদলানর সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীবাসী জীবের চেহারাও বদলাইতে আরম্ভ করিল। জীবগুলিকে প্রধানতঃ দুইভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে। যে সকল জীব সামান্ত পরমাণুপুঞ্জ হইতে বৃহত্তর পরমাণুপুঞ্জ নিৰ্ম্মাণ করিয়া স্বীয় অঙ্গ পুষ্টি করিতে পারে তাহাদিগকে উদ্ভিদ বলে, যেমন এমোনিয়ম নাইট্রেট নামক পরমাণুপুঞ্জ হইতে প্রোটিন নামক পরমাণুপুঞ্জ নিৰ্ম্মাণ বা দ্বাম-অঙ্গর গ্যাস ও জল হইতে স্বৰ্য্যরশ্মির সহায়তায় শর্করা নিৰ্ম্মাণ। আবার কতকগুলি জীব আছে যাহারা সামান্ত গঠনের পরমাণুপুঞ্জকে কোনওরূপে পরিবর্তিত করিতে পারে না, উদ্ভিদগণ তাহদের হইয়া এই কাৰ্য্যটী করিয়া দিলে উদ্ভিদকে ধবংস করিয়া তাহার নিৰ্ম্মিত শর্করাদি থাস্থ্য অপহরণ করিয়া পুষ্টিলাভ করে, তাহাদিগের নাম প্রাণী । পৃথিবী পৃষ্ঠে জীবশ্বষ্টির অনতিদীর্ঘকাল পর হইতেই উদ্ভিদ ও প্রাণী এই দুই প্রকার জীবই দেখিতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর আকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নানা আকারের উদ্ভিদ ও প্রাণী উৎপন্ন হইয়াছে। ইহাদের মধ্যে প্রত্যেকরই উদ্দেশ্য অন্ত সকলকে ধ্বংস করিয়া আপনার জীবন রক্ষা করা–তাই ইহাদের মধ্যে অনবরত থেয়োথেয়ি --অনবরত সংগ্রাম চলিতেছে। এই কঠিন জীবন সংগ্রামে যাহারা জয়ী হইছে তাহদের বংশধরগণই আজ পর্যন্ত বৰ্ত্তমান আছে, যাহারা সংগ্রামে পরাস্ত হইয়াছে তাহার। এবাসা—জ্যৈষ্ঠ, ురి) q | [ ১০ম ভাগ । ধরাপৃষ্ঠ হইতে লোপ পাইয়াছে, তাহাদের ভূপ্রোন্তি প্রস্তরীভূত কঙ্কালমাত্র তাহদের অস্তিত্বের সাক্ষীস্বরূপ পড়িয়া রহিয়াছে । যেমন জলের মধ্য হইতে স্থলের উৎপত্তি হইয়াছে, সেইরূপ আবার স্থল ও অনেক সময় ধসিয়া নামিয় গিয়াছে, আবার তাহার উপর পলি পড়িয়া আর একস্তর স্থল নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। ভূপৃষ্ঠে এইরূপ বহু স্তর দেখিতে পাওয়া যায়— ভূতত্ত্ববিদগণ সেগুলির যে নামকরণ করিয়াছেন তাহা লইয়৷ আর পাঠকের ধৈর্যাচুতি করিতে চাহি না। কেবল এইরূপ একটা স্তরের কথা বলিতে চাই-তাঙ্গার নাম *I*Too (Carboniferous strata) of: সময়ে,— সে আজ কত অৰ্ব্বদ বৎসর পূর্বের কথা ধরাপৃষ্ঠের কোনও কোনও অংশে খুব বড় জঙ্গল ছিল—কোনও কারণে জঙ্গল সমেত সেই স্থলটি নামিয়া যায়। তাহার উপর আবার এক স্তর নিৰ্ম্মিত হয় এবং সেই জঙ্গলট চাপের মধ্যে থাকিয়া পৃথিবীর তাপ প্রভাবে একটু একটু পচিতে থাকে। ক্রমে উহার বর্ণ কৃষ্ণ হইয়া যায়। উনবিংশ শতাব্দীর মানুষ নামক পৃথিবীবাসী জীববিশেষ সেই অৰ্দ্ধ পচিত জঙ্গল মাটি খুড়িয়া বাহির করিয়৷ তাপের জন্য পোড়াইয়া থাকে বলা বাহুল্য ইহাই আমাদের পাথুরে কয়লা । এই কয়লাট বড় মজাদার জিনিস। কিন্তু মজাট উপলব্ধি করিবার পূৰ্ব্বে একটা কঠিন বৈজ্ঞানিকতত্ব বুঝিতে হইবে। ইহা প্রমাণিত হইয়াছে,—যে তাপ, আলোক তড়িৎ, রাসায়নিক শক্তি এবং গতিশক্তি এই কয়প্রকার শক্তিই অবিনশ্বর, কেবল একপ্রকার শক্তি পরিবর্তিত হইয়া অন্য প্রকার শক্তির আকার ধারণ করে মাত্র। সকলেই অবগত আছেন বাষ্পীয় ইঞ্জিন পোড়ান কয়লার তাপশক্তিকে গতিশক্তির আকার প্রদান করিয়া গাড়ী টানে, গম পীষে ইত্যাদি এবং বৈদ্যুতিক আলোকে তড়িৎশক্তি আলোকশক্তিতে পরিবৰ্ত্তিত হইতেছে। যদি আপনি একথও লৌহ বা সীসাকে হাতুড়ীর দ্বারা ক্রমাগত পিটিতে থাকেন, তাহা হইলে দেখিবেন সেই ধাতুর্থওটা বিলক্ষণ গরম হইয়া উঠিয়াছে—অর্থাৎ আপনার হাতুড়ী সঞ্চালনরূপ গতিশক্তি পরিবৰ্ত্তিত হইয়া তাপরুপশক্তির আকার ধারণ করিয়াছে। আপনি হাতুড়া নাড়িয়া যে শক্তি ২য় সংখ্য। । ] SMMSMMSMMSMMSMSMMMS SSSSSAAAASA SAASAASSAAAASSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSS মাংসপেশীর ভিতর হইতে বাহির করিয়াছিলেন, তাহার এক বিন্দুও নষ্ট হয় নাই—কেবল উহ্য রূপ পরিবর্তন করিয়াছে মাত্র । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, উদ্ভিদনামক জীবের এক আশ্চৰ্য্য - ক্ষমতা আছে সে স্বৰ্য্যরশ্মির তেজ আকর্ষণ করিয়া তাহার সাহায্যে বায়ুমণ্ডলস্থ দ্বান্ন-অঙ্গার গ্যাস ও জল হইতে শর্করা, কাষ্ঠ, তুলা প্রভৃতি পদার্থ নিৰ্ম্মাণ করিতে পারে। স্বৰ্য্যরশ্মির শক্তি পরিবৰ্ত্তিত হইয়৷ কাষ্ঠাদির মধ্যে রাসায়নিক শক্তিরূপে অবস্থান করে । এই কাষ্ঠ হইতেই কয়লার উৎপত্তি—স্বৰ্য্যরশ্মির শক্তি কয়লার মধ্যে রাসায়নিকশক্তিরূপে সঞ্চিত রহিয়াছে—কয়লা পোড়াইবার সময় ঐ রাসায়ুনিকশক্তি পরিবর্তিত হইয়া তাপশক্তির মূৰ্ত্তি পরিগ্রহ করে। সেই তাপশক্তি আবার বাষ্পীয় ইঞ্জিনের দ্বারা গতিশক্তিতে পরিবর্তিত করা হয়। অতএব দেখা যাইতেছে, স্বৰ্য্য বহুকাল পূৰ্ব্বে পৃথিবীতে যে শক্তি প্রেরণ করিয়াছিল তাহাই কয়লার মধ্যে সঞ্চিত আছে এবং মানব তাছাই এক্ষণে নিজের কাজে লাগাইতেছে। জীবদেহের উৎপত্তি ও লয়ও একটা সুন্দর ব্যাপার। পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে—উদ্ভিদ এমোনিয়ম নাইট্রেট নামক সামান্ত পদার্থ হইতে প্রোটিন নামক জটিল পদার্থ নিৰ্ম্মাণ করিয়া থাকে এবং প্রাণিগণ উদ্ভিদের নিকট হইতে প্রোটিন সংগ্ৰহ করিয়া আপনার দেহ নিৰ্ম্মাণ করে। যখন উদ্ভিদ ও প্রাণিগণ মরিয়া যায়, তাহাদের দেহ মাটিতে পড়িয়া থাকে। মাটিতে একরূপ ব্যাকটিরিয়া নামক ক্ষুদ্র জীবাণু আছে তাহারা মৃতদেহস্থ প্রোটিনকে ভাঙ্গিয়া সামান্ত এমোনিয়ম নাইট্রেট প্রস্তুত করে । এই এমোনিয়ম নাইট্রেট হইতে পুনরায় উদ্ভিদের দ্বারা প্রোটিন নিৰ্ম্মিত হয়। এইরূপে এক অন্তহীন ক্রমপরম্পরায় জীবদেহের গঠন ও নাশ কার্য্য চলিতেছে। বহুকাল ধরিয়া একদিকে যেমন পৃথিবীর মূৰ্ত্তি বদলাইতে লাগিল, অন্যদিকে সেইরূপ জীবের মূৰ্ত্তিও বদলাইতে লাগিল এবং কাজে কাজেই বিভিন্নপ্রকার প্রাণীর আবির্ভাব হইতে থাকিল, যে জীবন সংগ্রামের ফলে এই পরিবর্তন তাহার কথা পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি। ক্রমে স্তন্যপায়ী নামক উন্নত জীবের আবির্ভাব হইল এবং পরে মানব নামক wo সৌর জগতের ইতিবৃত্ত সম্বন্ধে দুই একটী কথা। ఫిలి স্তন্যপায়ী জীবগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীবের উৎপত্তি হইল। ঠিক কোন প্রকার প্রাণী হইতে স্তন্যপায়ী প্রাণীর উৎপত্তি এবং কোন প্রকার স্তন্যপায়ী প্রাণী হইতে মানবের উৎপত্তি তাহা বলা যায় না তবে বানরের সঙ্গেই মানবের সোসাদৃশু সৰ্ব্বাধিক । প্রথমতঃ মানব নামক প্রাণী এবং লাঙ্গুলহীন বানর নামক প্রাণীতে অতি অল্পই প্রভেদ লক্ষিত হইত। কিন্তু মানব বুদ্ধিবলে শীঘ্রই উন্নতিপথে অগ্রসর হইতে লাগিল ; সে দেখিল দুইখও কাষ্ঠ পরস্পর ঘর্ষণ করিলে অগ্নির স্বষ্টি হয় এই অগ্নি স্বষ্টির পরে অন্ত প্রাণী হইতে তাহার অনেক প্রভেদ হইতে থাকিল। - বুদ্ধিবলে শ্রেষ্ঠ হইলেও শারীরিক বলে মানব অনেক প্রাণীর অপেক্ষ নিকৃষ্ট ছিল—এই জন্তই আত্মরক্ষার জন্ত তাহাকে চিন্তা করিতে হইল। সে দেখিল যদি একখণ্ড প্রস্তর তুলিয়া মারা যায় তাহা হইলে আঘাতটা মন্দ হয় না, সেই দিন হইতে অন্ত প্রাণীর সহিত সংগ্রামে প্রস্তর ব্যবহার করিতে লাগিল। যে সময় মানব প্রস্তর-যন্ত্র ব্যবহার করিত মানবেতিহাসে তাহাকে প্রস্তরযুগ বলা যায়। একদিন কোনও মানব দেখিল কতকগুলি প্রস্তর বিশেষকে অগ্নিতে পোড়াইলে, তাহা হইতে এক প্রকার কঠিন, চিঙ্কণ পদার্থ বাহির হয়—তাহাতে অতি সুন্দর অস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ হয়। এইরূপে মানুষ ধাতু ব্যবহার করিতে শিথিল। মানবের মধ্যে ভাষার উৎপত্তি হওয়ার পর হইতে উন্নতি আরও বেগে সম্পাদিত হইতে থাকিল—একের অভিজ্ঞতা অপরে সহজেই শিথিতে লাগিল। মানব-দৃষ্টির পূর্ব হইতেই হস্তী প্রভৃতি কতকগুলি প্রাণী দেখিয়াছিল যে এ জগতে বাচিতে হইলে একা থাক সুবিধা নহে—দলবদ্ধ হইয়া পরম্পরকে সাহায্য করা উচিত। মানবও এটা বেশ হৃদয়ঙ্গম করিল—দলবদ্ধভাবে বাস করিতে লাগিল। এইরূপে সমাজের উৎপত্তি হইল। মানবেতিহাসের প্রথমকাল হইতে সমাজের প্রধান কাৰ্য্যই ছিল অন্ত প্রাণী বা অন্ত মানবসমাজ হইতে আপনাকে রক্ষা করা এবং দ্বিতীয়তঃ সমাজস্থ দুৰ্ব্বল ব্যক্তিকে পালন করা। পূৰ্ব্বে সমাজ প্রথম কাজটা লইয়াই অধিক