পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩১৭ । SMMSMAMMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSAAAASAASAASAASAAAS পুত্র বলিলেন—“বোধ হয় বেশী দেরী হবে না।" তখন বৃদ্ধ অল্পে অল্পে আবার নিশ্চেতন হুইয়া পড়িলেন। এই বৃদ্ধের নাম ব্রজকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনি একজন ক্ষুদ্র জমিদার-বার্ষিক আয় চারি হাজার টাকা হইবে। যে গ্রামে এই ঘটনা বর্ণিত হইতেছে, তাহার নাম কল্যাণপুর-ইহা খুলনা জেলার অন্তর্গত। উপরোক্ত যুবকট, ব্রজকিশোরের জ্যৈষ্ঠপুত্ৰ-নাম গোপীকান্ত। ইনি, বৃদ্ধের প্রথম স্ত্রীর গর্ভজাত। প্রথমার মৃত্যু হইলে, প্রৌঢ় বয়সে ব্রজকিশোর দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করেন। সে স্ত্রীও একটি দুই বৎসরের পুত্রসস্তান রাখিয়া অকালে পরলোক প্রাপ্ত হন। এই পুত্রটিরই নাম মোহিতলাল। ব্রজকিশোর বৈঞ্চব-তন্ত্রের লোক—তিনি ইচ্ছা করিয়াছিলেন এ পুত্রটির নাম নন্দদুলাল কিম্বা লক্ষ্মীনারায়ণ, এইরূপ ੇ। কিছু , রাথিবেন–কিন্তু তাহার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ঘোরতর আপত্তি’ করিয়া মোহিতলাল নামই কায়েম করিয়াছিলেন। এ বংশে ইতিপূৰ্ব্বে ঠাকুরদেবতার নাম ছাড়া অন্য নাম কখনও আমল পায় নাই—কিন্তু বৃদ্ধস্ত তরুণীভাৰ্য্যা সে নজির মানিলেন না। বৃদ্ধবয়সের সন্তান বলিয়া মোহিতলালের প্রতি ব্রজকিশোরের স্নেহ একটু অধিক ছিল। মোহিতের বয়স এখন অষ্টাদশবর্য—সে কলিকাতায় কলেজে বি, এ, পড়িতেছে। t ঠাকুরদেবতার নামে নামকরণ না হইলেও, মোহিত ছেলেটি বেশ নিষ্ঠাবান ও স্বধৰ্ম্মপরায়ণ। পূজা-আহ্নিক না করিয়া জলগ্ৰহণ করে না —এই বয়সেই মৎস্ত পর্যন্ত পরিত্যাগ করিয়াছে। অপরপক্ষে গোপীকান্ত বাবু, বাড়ীতে মাছ এবং বন্ধুবান্ধবের গৃহে মাংস (ইহঁাদের বাড়ীতে মাংস আসিবার যো নাই ) প্রকাগুভাবেই ভোজন করিয়া থাকেন। জুতা পায়ে দিয়া জল এবং মুসলমান হস্তের চা পান করিতে লোকে তাহাকে দেখিয়াছে। মাঝে মাঝে কলিকাতায় গিয়া দলে মিশিয়া মদ্যপান করেন, এই প্রকার একটা অথ্যাতিও আছে। তাহার সম্বন্ধে আরও একটা কাণাকণি আছে, তাহ আপাতত: অপ্রকাশ রাখিলাম—তবে এ সকল ব্যাপার বেশী দিন গোপন থাকেনা—এক সময় ঢাক বাজিয়াই উঠে | অপরাহ্নকালে একখানি গোরুর গাড়ী আসিয়া সদর { ১০ম ভাগ । দরজায় দণ্ডায়মান হইল। গাড়ী হইতে মলিনবেশ শুদ্ধমুখ মোহিতলাল অবতরণ করিল। অন্তঃপুরে প্রবেশ কুরিতেই, গোপীকান্ত আরিয়া বলিলেন—“ভাইএসেছ ?” মোহিত তাহার পাদবন্দনা করিয়া সভয়কণ্ঠে বলিল— “বাবা আছেন ত ?” গোপী বলিলেন--“আছেন বটে—কিন্তু রাত বুঝি কাটে না ।” মোহিত দাড়াইয়। লাগিল । গোপীকান্ত সস্নেহে ভ্রাতার অশ্রু মুছাইয়া দিয়া বলিলেন—“খাওয়া দাওয়া হয়নি বোধ হয় ?” “না।” - "কলকাতা থেকে কথন বেরিয়েছিলে ?” “বেলা আটটায়।” “জল টল থেয়েছিলে ?” “আজ্ঞে হ্যা-স্নান-আহ্নিক করে জল থেয়ে বেরিয়ে ছিলাম।” ইতিমধ্যে সেখানে ব্রজকিশোরের বিধবা ভগ্নীমোহিতের পিসিমা আসিয়া দাড়াইলেন । মোহিত প্রণাম করিলে, তাহার চিবুকে হাত দিয়া চুম্বন করিয়া পিসিম বলিলেন—“আহা বাছার আমার মুখ শুকিয়ে আধখানি হয়ে গেছে। হাত মুখ ধুয়ে কাপড় ছেড়ে ফেল। আমি বামুণ ঠাকরুণকে ভাত চড়িয়ে দিতে বলিগে। একটু জল থাও ততক্ষণ ।” মোহিত বলিল—“বাবাকে আগে দেখি ।” পিসিমা বলিলেন—“খুব সময় এসে পড়েছ বাবা। আজ না এসে যদি কাল আসতে, তবে দেখতে পেতে কি না নারায়ণ জানেন । আহা, বামুণের যখনই জ্ঞান হচ্ছে, তখনই জিজ্ঞাসা করছেন—“মোহিত এসেছে ?— আমার মোহিত এল ??—বলিয়া পিসিমা চক্ষে অঞ্চল দিয়া রোদন করিতে লাগিলেন । জুতা পরিত্যাগ করিয়া, পা টিপিয়া টিপিয়া, দুই ভাই পিতার রোগশয্যার নিকট উপস্থিত হইল। মোহিত দেখিল, পিতার সে মূৰ্ত্তি আর নাই। সে নধর পুষ্ট নীরবে অশ্রুবিসর্জন করিতে ১ম সংখ্যা । ] দেষ্ট এখন বিছানার সঙ্গে মিলাইয়া যাইবার উপক্রম করিতেছে। - মোহিত শয্যা প্রান্তে গিয়া, অচেতন পিতার পদযু নিজ মস্তক স্পর্শ করিল। দশবর্ষবয়স্ক একটি বালিকা পাথ হাতে করিয়া বুদ্ধের শিয়রে বসিয়া বাজন করিতেছিল। সাত বৎসরের একটি বালক ধীরে ধীরে তাহার পায়ে হাত বুলাইতেছিল । মোহিত বালককে বলিল—“তুমি ওঠ-আমি পায়ে হাত বুলুচ্ছি।” কিয়ংক্ষণ পরে মোহিতের বধূঠাকুরাণী সেই কক্ষে আসিয়া বলিলেন—“ঠাকুরপো—এস, তোমার ভাত বাড় হয়েছে।" মোহিত বলিল—“থাক, আমি এখন খাব না।” বঠাকুরাণী তখন সয়েছে তাহার হাতটি ধরিয়া একরকম জোর করিয়া তাহাকে উঠাইয়া লইয়া গেলেন। আহারাদির পর, পিতার নিকট আসিয়া মোহিত অবিীর তাহার শুশ্রীষায় প্রবৃত্ত হইল । রাত্রি নয়টার সময় ব্রজকিশোরের লুপ্তচেতনা পুনরাগমন করিল। তাহাকে পাশ ফিরিতে ও চক্ষু খুলিতে দেখিয়া গোপীকান্ত বলিলেন—“বাবা—মোহিত এসেছে।" বুদ্ধ বলিলেন—“মোহিত ?—মোহিত ?—কৈ মোহিত ?” “এই যে বাবা, আমি রয়েছি।”—বলিয়া মোহিত পিতার একথানি শীর্ণ হস্ত নিজহস্তদ্বয়ের মধ্যে গ্রহণ করিল। বৃদ্ধ বলিলেন—“আমার গলাটা বড় শুকিয়ে উঠেছে। মোহিত, একটু গঙ্গাজল দাও।” মোহিত উঠিয়া গঙ্গাজল লইয়া পিতার মুখে দিতে লাগিল। জলপান করিয়া যেন বৃন্ধের চেতনা একটু উজ্জ্বল হইয়া উঠিল । দুই তিন বার দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া তখন তিনি বলিলেন —“গোপী ।” “এই যে আমি রয়েছি বাবা ।” "নন্দলাল কোথা ?” নন্দলাল, গোপীকান্তের শিশু পুত্র। বয়স তিন বৎসর মাত্র। মাতা, নন্দলালকে কোলে করিয়া, শয্যা-সন্নিধি আসিয়া দাড়াইলেন। গোপীকান্ত বলিলেন—“এই যে নন্দলাল এসেছে—ঘুমিয়ে পড়েছে।” নবীন সন্ন্যাসী । - め --SumitaBot (আলাপ) ১৮:০৬, ২৫ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)--------------- ব্রজকিশোর বলিলেন—“বটুমা ?” মোহিত বুলিল—“এই { डिनि प्रमछ नन्नानक কোলে করে দাড়িয়ে রয়েছেন বাবা।” “সারদা কৈ ? সারদার ছেলেটি কৈ.?” - পিসিমাতা বলিলেন –“এই যে দদা আমি রয়েছি। তোমার ভাগনে বিনোদের কি উপায় করে যাচ্ছ দাদা?" —বলিয়া তিনি ক্ৰন্দন কুরিতে লাগিলেন। বৃদ্ধ বলিলেন—“কেদন । ভাবনা কিসের ? গোপী রৈল, মোহিত রৈল,—তারাই তোমার ছেলের ভার নেবে।” একটু নীরব থাকিয়া বৃদ্ধ আবার গঙ্গাজল চাছিলেন। জলপান করিয়া বলিলেন—“তোমরা সবাই আছ ?” গোপী বলিলেন—“ছা বাবা—আমরা সবাই এখানে রয়েছি।” বৃদ্ধ তখন ধীরে ধীরে, একটি একটি কথা পৃথকভাবে উচ্চারণ করির বলিতে লাগিলেন— “দেখ, আমার মেয়াদ ফুরিয়ে এল। আর বেশী দেরী নেই। তোমরা সবাই আমায় হরিনাম শোনাতে পারবে ? রাধা নাম—কৃষ্ণ নাম—হরি নাম ?” সকলে কাদিতে লাগিল । মোহিত বলিল—“হঁ্যা বাব —শোনাতে পারব বৈ কি।” ব্রজকিশোর বলিলেন—“আচ্ছা । কিন্তু হরিনাম শোনবার আগে, একটা সাংসারিক কৰ্ত্তব্য আছে সেটা সেরে নিই। তার পর, তোমাদের মুখে মধুর হরিনাম শুনতে শুনতে, হাসতে হাসতে, রথে চড়ে বৈকুণ্ঠে চলে যাব । গোপীকান্ত, মোহিতলাল—কাছে এস। বাবা গোপী-তোমাকে আমি মানুষ করে তুলেছি। বিবাহাদি দিয়েছি, সস্তান সন্ততিও হয়েছে। কিন্তু মোহিত এখনও নাবালক-ওর গর্ভধারিণীও স্বর্গে গিয়েছেন—ওর কিছু কিনারা করে যেতে পারলাম না খবা মোহিতলাল, আমার অবৰ্ত্তমানে, তোমার বড় ভাইই তোমার বাপ, তোমার বউঠাকরণই তোমার মা রইলেন। আমাকে যেমন মান্ত করতে, ভক্তি করতে, তোমাৰ দাদাকেও তেমনি করবে। আর এক বিষয় সাৱধান করে দিই— • • কলিকালে ভাইয়ে ভাইয়ে निर्श झग्न न । দেখো যেন