পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭ । নাই। শুনা যায় ২৯থাৰুি মাত্র গ্রাম যাহা পূৰ্ব্বে ভাদওয়ারের রাণীগণ পান খাইবার ব্যয় নিৰ্ব্বাস্থার্থ দানস্বরূপ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন তাহাই এক্ষণে ভাদাওয়ার রাজের সম্পত্তি। স্ত্রীধন বলিয়া এখনও উহা হস্তচু্যত হয় নাই। বৰ্ত্তমান ভাদাওয়ার রাজ্য কোর্ট অব ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে আছে। বর্তমান রাজাকে দেখিলাম তিনি বালক, দ্বাদশবৎসর মাত্র বয়ঃক্রম, নাম মহা সিং। তিনি রাজা কুটুম্বনের রাজগদিতে বসিয়াছেন। বালকরাজা মহা সিংই সেদিন বনখণ্ডেশ্বরের পূজা দিতে আসিয়াছিলেন । সময়ের কি পরিবর্তন ! এই মেলা যাহাদিগের দ্বারা এক সময়ে প্রবৰ্ত্তিত, এই তীর্থ যাহাদিগের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং এই ক্ষেত্রে যাহাদিগের একসময়ে একাধিপত্য ছিল আজি তথায় তাছাদের বংশধর অপর সাধারণ তীর্থযাত্রীর ন্যায় সামান্ত দর্শক মাত্র । পূর্ণিমা স্নানের পর হইতে মেলা ভঙ্গ হইতে আরম্ভ হইল। লক্ষ লক্ষ পশু এবং সহস্র সহজ নরনারী স্ব স্ব নিবাস স্থানে প্রত্যাবর্তন করিল, আমরা সপ্তাধিক কাল অবস্থান করিয়া ফিরিলাম। কত লোকের সহিত সাক্ষাৎ হইল, কত দর্শনীয় বস্তু নয়নগোচর করিয়৷ তৃপ্তিলাভ করিলাম, উত্তর পশ্চিম, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, রাজপুতানা, কাশ্বির, কাবুল প্রভৃতি দেশদেশান্তরের লোক দেখিলাম, কিন্তু হায় এই দেড়লক্ষ লোকের মধ্যে আমরা छुझे दछू ব্যতীত আর একজন বাঙ্গালির মুখও দেখিতে পাইলাম না ! ইহা বণিকদিগের সম্মিলনী এবং অশ্ব উঃাদির ক্রয়বিক্রয়ের মেলা বলিয়াই কি এই মহাতীর্থে সৰ্ব্বত্রগামী বঙ্গবাসীর এরূপ অসদ্ভাব হইল ? বটেশ্বর, ! শ্রীজ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস। ৫ই ডিসেম্বর, ১৯০৯। মৃতন-বরণ। ( Tennyson হইতে অনুদিত )। বাজ হে ੋ শঙ্খ, বাজ মুমধুরআকাশের মেঘ কালে, কুয়াস। আচ্ছন্ন আলে, পুরাতন বর্ষ সাথে কর কর দুর— মরুক পুরাণ বর্ষ-জীর্ণ হৌক চুর। প্রাচীনে বিদায় করি আনহ নূতন— যাক দুঃখ যাক ক্লাস্তি, আনহ আনন্দ শাস্তি, মিথ্যা যাক অস্তাচলে ; সত্যের তপন আমুক আকাশ ভরি মঙ্গল কিরণ । মানস-কুমুম-কীট শোক যাক দূবে ধনী নির্ধনের দ্বন্দু ঘুচে যাক ; শাস্তি ছন্দ বাজুক মিলন মস্ত্রে, মঙ্গলে মধুরে— বাজ শঙ্খ, স্বরগের সুধা-শাস্ত সুরে । মুমুযু প্রাচীন পন্থা হৌক ছারখার— । বিচ্ছেদের জীর্ণ নীতি টুটুক সঙ্কীর্ণ রীতি ; সমুন্নত জীবনের আদর্শ উদার— আমুক পবিত্র ইচ্ছা, মিষ্ট ব্যবহার । দূরিত দুশ্চিস্ত দুঃখ ক’রে দাও দুর— নিৰ্ম্মম বিরাগ-শিলা গ’লে যাক ; প্রেম-লীলা তটিনীর ধারা সম শীতল মধুর করুক প্রাণের জাল শ্রাত্তি ক্লান্তি দূর । [ ১০ম ভাগ । সংকলন ও সমালোচন। । ২য় সংখ্যা । ] টুটুক পদের মোহ, বংশ অহঙ্কার— দ্বেষ হিংসা যাক চলি ভা’য়ে ভায়ে দলা-দলি ; মানব মানবে দিক পূর্ণ অধিকার— বিশ্বের মঙ্গল হৌক ব্রত সাধনার । বিকট আকার ব্যাধি ঘৃণ্য পুরাতন— সঙ্কীর্ণ বিষয়াসক্তি,বিদ্রোহের রক্তারক্তি, দূরে যাক জগতের বিলাপ ক্ৰন্দন ; হৌক মৰ্ত্তে প্রতিষ্ঠিত শাস্তির নন্দন। বাজ হে মঙ্গল শঙ্খ, বাজ সুমধুর— • পুরাতন নরবংশ সমূলে হউক ধ্বংস ; নীচতা হীনতা দৈন্ত হ’য়ে যাক দূর – নব ভাব নব ভক্তি আন সুমধুর। উঠুক নূতন নর নির্ভীক স্বাধীন— প্রশস্ত উদার প্রাণ, প্রেমে হস্ত বলবান— আলোকে মরিয়া যাক আঁধার মলিন ; নবীন জাগুক হর্ষে—ডুবুক প্রাচীন ॥ শ্ৰীবিনয়ভূষণ সরকার । বিদেশাগত উদ্ভিদ। অনেকগুলি উদ্ভিদ বিদেশ হইতে আসিয়া এখানে এমনি আত্মীয় হইয়া উঠিয়াছে যে তাহাদিগকে বিদেশী বলিয়া অনুমান করাই কঠিন । শিবপুর কলেজের অধ্যাপক ব্রুল সাহেব আসিয়াটিক সোসাইটির জারনালে এই সম্বন্ধে আলোচনা করিয়া একটি তালিকা দিয়াছেন, আমরা নিম্নে উহারই সার সঙ্কলন করিলাম । নোন, আতা—এই দুইটি ফলই এদেশে বহুল পরিমাণে জন্মে কিন্তু এই দুই ফলের একটিরও সংস্কৃত নাম পাওয়া সংকলন ও সমালোচন—বিদেশাগত উদ্ভিদ । >○○ যায় না। 'প্রায় যাট রকমের আতা এবং নোনা আছে উহাদের মধ্যে কেবল দুই তিনটি ভিন্ন সকল গুলিরই আমেরিকায় জন্ম। ঐ দুই তিন রকমের আতা এসিয়ায় এবং আফ্রিকায় জন্মে। খুব সম্ভব নোনা এবং আত যাহা আমাদের দেশে পাওয়া যায়, দুইটিই আমেরিকা হইতে এদেশে আসিয়াছে। যদি ইহাদের মধ্যে কোনোটি এদেশী হয় তাহা হইলে নোনা এদেশী হইতে পারে আত কোন মতেই নয়। পোস্ত—অনেকেরই মতে ভূমধ্য সাগরকুলবর্তী pap০ver satigerum এই দেশে চাষের দ্বারা আফিমে পরিণত হইয়াছে। Cyprus zizfē ētot সমূহে এই खेटुिन्न স্বভাবজ । - স্বৰ্য্যমণি—ইহা ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের উদ্ভিদ কিন্তু ভারতে বহু শতাব্দী হইতে জন্মিতেছে । জবা—কেহ কেহ বলেন ইহা চীন হইতে এদেশে আসিয়াছে। সম্ভবতঃ ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জই ইহার উৎপত্তি স্থান। স্থলপদ্ম—বাঙ্গলার প্রায় সৰ্ব্বত্রই দেখা যায়। চীন হইতে এদেশে আসিয়াছে। কামরাঙ্গা-পর্তুগীজগণ আমেরিকা হইতে এদেশে প্রথম আনয়ন করে। সুমাত্রা মালয় প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জে ইহা স্বভাবজ । বিলিম্বি—এখন ভারতীয় হইয়া গিয়াছে কিন্তু ইহার প্রকৃত উৎপত্তি স্থান মালয় দ্বীপপুঞ্জে। চীনে নারেঙ্গা–বঙ্গদেশের প্রায় সৰ্ব্বত্রই দেখা যায় কিন্তু ইহা চীনের আমদানী । - বাতাবি লেবু—কাপ্তেন সাদক যাবান্ধীপ হইতে ভারতে আনিয়াছিলেন । মেহগণী-West Indies এবং হন্দুরাস হইতে এদেশে আনা হইয়াছে । লিচু—আজকাল বাঙ্গলায় সৰ্ব্বত্রই পাওয়া যায়। চীনের দক্ষিণ হইতে এই দেশে আসিয়াছে। আঁসফল—ইহার জন্মস্থান চীনে। চীনে ইহার নাম লাবান । - কাজু বাদাম—চট্টগ্রাম এবং উড়িষ্যায় বহুল পরিমাণে জন্মে । আমেরিকা হইতে এদেশে আসিয়াছে।