পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৮ বণিকের শিল্পীর নয়—জখন হইতেই মূলধন ৪ শ্রমে যে বিবাদ চিরস্থায়ী হইয়া গেছে, তাহা মিটিবার কোন রাস্ত নাই। সোস্তালিজম সামাজিক বন্ধনে ধনকে বাধিবার প্রস্তাব করিয়া মনে করিয়াছে যে মস্ত একটা মীমাংসা বুঝি সে স্থির করিয়া ফেলিয়াছে। ব্যক্তির স্বাধীনতাকে হরণ করিয়া সমাজের দাসত্বকে স্বীকার করায় কোন লাভ নাই—তাহাতে ধনের অসামঞ্জস্ত দূর হইতে পারে, কিন্তু তার চেয়ে গুরুতর অসামঞ্জস্তকে পাকা করিয়া স্থায়ী করিয়া রাখা হয়। এখন কথা এই যে, যে কোনও দেশের গভমেণ্টের সহস্ৰ ক্রটি থাকিতে পারে, সে যথার্থ ধৰ্ম্মকে, যথার্থ স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণ আমল না দিতেও পারে, তথাপি তাহাকে না হইলে কি মানুষের চলে ? একেবারে বাহিরের শাসন মানিব না বলিলে মানুষ একত্রে থাকিবে কি উপায়ে ? গভমেণ্টের অধীনে মানুষ যে প্রকার আইনের অধীনে থাকিতে বাধ্য হয়, তাহার জীবন ও ধনসম্পত্তি যেরূপ নিরাপদ হয়, গভমেণ্টের অধীনে না থাকিলে এমন কি হইতে পারে ? কিন্তু টলস্টয় বলেন, যে সকল সমাজ কোন গভমেণ্টের অধীনে নাই, তাহাদের যে এ সকল বিষয়ে কোন দুর্যোগ উপস্থিত হইয়াছে, ইতিহাসে তাহার সাক্ষ্য দেয় না। আমরা কিন্তু বৰ্ত্তমান সময়ে এরূপ কোন সভ্য সমাজের বিষয় অবগত নহি । মন্দ লোক প্রত্যেক সমাজেই আছে। কিন্তু গভমেণ্টের উপরকার শাসনের চেয়েও বড় শাসন সমাজে আছে—সে হচ্ছে public opinion এর, সাধারণের মতের শাসন । যতই সমস্ত লোকের মধ্যে ভালমন্দের বোধটা উজ্জলতর হয়, ততই শাসনটা ভিতর হইতে কাজ করে। তা ছাড়া, নিজেদের মধ্যে বিচার ব্যবস্থা গড়িয়া তোলা কোন সভাজাতির পক্ষেই দুঃসাধ্য ব্যাপার নয়। স্বদেশ বোধ হইতে গভমেণ্ট জিনিসটার উৎপত্তি এবং তাহারি উপরে তাহার ভিত্তি, একথা যদি বল তবে এই কথাই বলিতে হয়, যে রুশ, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন এও আয়লণ্ড, এবং জৰ্ম্মানি, কোথাও সেটা একান্ত হইয়া নাই । যে সকল বিচিত্র জাতিকে তাহার একজাতি করিয়া তুলিয়াছে, জাতীয়তার তীব্র বোধ তাহদের মন হইতে প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭। ১০ম ভাগ । --SumitaBot (আলাপ) প্রবাসীর নানা সংখ্যায় আমরা সে কথার আলোচনা করিয়াছি। পোলাও, ব্যালটিক দেশ সমূহ, কাজান, এ সমস্তই রুশ অথচ এমন পরম্পরবিচ্ছিন্ন যে বলিবার নয়। এই তো সে দিন এলসেস ফ্রান্স ছিল, এখন হইয়াছে প্রশিয়া। স্যাগালিন রুশ ছিল, হইল জাপান । একমাত্র বাহ বল এবং একটা কৃত্রিম স্বাদেশিক সংস্কারের উপর অধিকাংশ স্থলেই এ শাসন জিনিসটার প্রতিষ্ঠা—ক্রমাগত লড়ালড়ি ঠোকাঠুকি করিয়া নিজের রাজ্য বাড়ানোর দিকেই নজর । অথচ যাহার উপর ভিত্তি করিয়া এই সমস্ত অনর্থের স্মৃষ্টি, সেটা একটা শূন্ত পদার্থ, একটা ভ্রান্ত সংস্কার মাত্র । মানুষ অনেক কুসংস্কারের জন্য অনেক জিনিস বলিদান দিয়া আসিয়াছে, রাষ্ট্রের জন্তও সে এখন সুখ স্বাস্থ্য স্বাধী নতা অর্থ সমস্তই বলি দিতেছে । রাষ্টীয় স্বার্থ যে দিন প্রকৃত মনুষ্যত্বের পথরোধক রূপে দাড়াইবে—সে দিন হঠাৎ আশ্রয়স্থল খুজিয়া পাওয়া মানুষের পক্ষে শক্ত হইয়া উঠিবে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, যে বর্তমান যুগে যে বিপ্লব ঘটবে, সে রক্তপাতকে সহায়রূপে গণ্য করিবে না। সে সব সহ করিবে, অথচ অস্বীকার করিবে— আঘাতের দ্বারা কোন অমঙ্গলকে দূর করিবার চেষ্টা মাত্র করিবে না। কারণ তাহা হইলেই যে পরিপূর্ণ মনুষ্যস্বাধীনতাকে সে জন্ম দিবার সংকল্প করিতেছে, তাহাকেই সে বাধাগ্রস্ত করিবে, সৰ্ব্বগত মঙ্গলের নিঃশব্দ শক্তির চেয়ে জোরজুলুমকেই বড় করিয়া তুলিবে। যে মঙ্গলের ভিত্তিতে পরিবার এবং গ্রাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত, সেই ভিত্তি অবলম্বন করিয়া ক্রমে নানা বিচিত্র মঙ্গল পরস্পরের সঙ্গে সমবায় স্বত্রে সঙ্গত হইতে থাকিবেকেহ কাহাকেও প্রতিযোগিতা দ্বারা আঘাত করিবেন,— অথচ সমবায়ে প্রত্যেকেরই ক্ষুদ্র চেষ্টা বৃহদাকার প্রাপ্ত হইয়া কল্যাণকে খুব বড় ক্ষেত্রে প্রসারিত করিয়া দিবার স্বযোগ লাভ করিবে। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য সমস্তই নান বিচিত্র মঙ্গল অনুষ্ঠানে মিলিত হইবে। “সিভিলিজেসন” (সভ্যতা) জিনিসটাকে এমন করিয়া কৃষিসমাজে, পরিণত করিবার প্রস্তাবে সভ্যেরা চমকিত হইতে পারেন। কিন্তু সভ্যতা কি স্বাস্থ্য নয়, মঙ্গল নয়, T | | ২য় সংখ্যা । ] ংকলন ও সলালোচন—ভাগ্যচক্র । Sở s .----------SumitaBot (আলাপ) ১৮:২০, ২৫ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি) - আনন্দ নয়, ধৰ্ম্ম নয়—সেকি কেবলি উপকরণ-বৈদ্যুতিক রেলগাড়ী, থিয়েটার, নানা ভোগের বিচিত্র আয়োজন ? এই উপকরণবহুল বৰ্ব্বর সভ্যতাকে পোষণ করিবার জন্য বে নরমেধযজ্ঞ অহোরাত্র অনুষ্ঠিত হইতেছে, তাহার হিসাব কি কেহ রাখিতেছেন ? মিশর দেশে পিরামিড তৈরি করিবার জন্য বহুসংখ্যক লোকের প্রাণপণ পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল,—ইতিহাস রাজাদের সেই খেয়ালকে তখনকার কালের বর্বরতা বলিয়া নির্দেশ করে। আর হামল পৃথিবীকে অবরুদ্ধ করিয়া, আকাশের আলোককে স্নান করিয়া, বায়ুর প্রবেশপথকে প্রতিহত করিয়া, ছত্রিশতলা नाड़ी তোলায় কি কোন নিষ্ঠুরতা, কোন বর্বরতা নাই ? এই রকম সহস্র গঠিত অর্থহীন উপকরণ ও ভোগায়োজনের জন্য কি মানুষ মারা যাইতেছে না ? এদিকে বড় বড় বাড়ী, ইলেকটিক গাড়ী, স্নানাগার, মিউজিয়ম, উদ্যান দেখিতেছ,--অন্যদিকে লওনের সুম্স আছে, বেহালয় আছে, জেল আছে, বারিক আছে এবং গোলাগুলি প্রস্তুত করিবার প্রকাও প্রকাও কারখানা আছে, আর রাশি রাশি কুৎসিত লেখা প্রচার করিবার জন্য ছাপাখানা আছে। সময় আসিয়াছে যখন ভোট দিবার স্বাধীনতা অথবা ভাতে মারিবার স্বাধীনতাকে দূর করিয়া যথার্থ ভিতরকার মঙ্গলভিত্তিমূলক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে। ক্রমাগত বিচিত্র জাতি এবং বিচিত্র স্বার্থকে জোড়া দিবার চেষ্টায় রাষ্ট্রে ধৰ্ম্মবুদ্ধি কলুষিত হইয়া আসিয়াছে। আইন রাষ্ট্র রক্ষার জন্য বলিয়া, প্রত্যেক লোকের স্বতন্ত্র মঙ্গলকে দেখিবার কোন সুযোগ তাহার নাই। বিশ্বমঙ্গলের ভাবটিকে জাগ্ৰত করিতে হইবে । আধুনিক যুগের ইহাই প্রধান কাজ । ভবিষ্যতে এই উদেশ্বকে সফল করিবার জন্ত কৃষির উপর ভিত্তি স্থাপন করিয়া মানুষ ক্রমে অন্যান্য জিনিস তাহার অন্তর্গত করিয়া লইবে। একটা পরস্পর আদান প্রদানের ভাব, সৌভ্রাতৃত্বের ভাব-এ একমাত্র কৃষিপ্রধান সমাজেই ঘটতে পারে। কারখানার সভ্যতায় এটি ঘটে সম্বন্ধকে অস্বীকার করিয়া কেবল প্রতিযোগিতার বুদ্ধিকে ন—কারণ কৃষিজীবী গৃহী ; সে গৃহত্যাগ করিয়া মঙ্গল বড় করিয়া তোলে না। সেই কারণে, তাহার সঙ্গে যে কোন জিনিসই আসিয়া যুক্ত হয়, সমস্তই কেবল শান্তিময় একটি মঙ্গল হইয়া উঠে। এই পথেই যে পুনরায় মানুষকে । চেষ্টা প্রয়োগ করিতে হইবে, বর্তমান যুগে তাহার সময় আসিয়াছে । ভাগ্যচক্রে চতুর্থ পরিচ্ছেদ । সময় বহিয়া যাইতে লাগিল কিন্তু বার্টি যেখানে ছিল সেই থানেই থাকিয় গেল। দুই একবার সে অন্যত্র যাইবার কথা - তুলিয়া ছিল –হলাণ্ডে তার এক আত্মীয় আছে, সে বলিত সেথানে গিয়া সে স্বচ্ছন্দে থাকিতে পারে কিন্তু ফ্র্যাঙ্ক সে সব কথা কানেই তুলিতেন না। যাইবার কথা উঠিলেই তিনি বাটির মুখ চাপা দিতেন। এক এক সময় বাটির মনে ঘৃণার উদয় হইত—ছিঃ ! পরের গলগ্ৰহ হইয়া আছি ! সেই ঘৃণার ভাবটা সে যখন ফ্র্যাঙ্কের কাছে প্রকাশ করিত তখন ফ্র্যাঙ্ক তাহা হাসিয়া উড়াইয়া দিতেন। বলিতেন এ আবার একটা কথা ! বন্ধুর জন্য বন্ধুমাত্রেই এটুকু করিয়া থাকে-এ আর বেশি কি ! ধর আমার অবস্থা যদি তোমার মতো হইত এবং তুমি যদি আমার মতো স্বচ্ছল অবস্থায় থাকিতে তাহা হইলে তুমি কি আমাকে এ সাহায্যটুকু করিতে না —এটুকু কি তোমার ভার বোধ হইত ? কিন্তু জিনিসটার গুরুত্ব ফ্র্যাঙ্কের কাছে বেশি দিন গোপন রহিল না । এক একবার ফ্র্যাঙ্কের মনের ভিতর হইতে এই কথাটা উঠিত যে যেমন ভাবে জীবন কাটাইতেছি তাহা কি ঠিক হইতেছে। এক একবার সন্দেহ হইত আমরা দুজনে মিলিয়া যতটা বড়মানুষী করি আমি কি সত্যই ততটা বড় মানুষ ! বাট আসা অবধি তাহার টাকা জলের মতো খরচ হইয়া যাইতেছে! কিন্তু এ সমস্ত দুশ্চিন্তা ও অপ্রিয় সন্দেহ ফ্র্যাঙ্কের মনে বেশিক্ষণ টিকিতে পারিত না—তিনি এসব গুলোকে মনের মধ্যে আমোল দিতে পারিতেনই না। আপিমের নেশার মতো বার্টির উপর তাহার একটা নেশা জন্মিয়া গিয়াছিল। বাট না হইলে তার আর এখন কিছুতেই চলেনা। বাট পরামর্শ না দিলে