পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ মাতু-ঋণ ఫి(? বনাই করুক, কোট শার্টের সব ক’টা বোতাম বেশ নিয়ম-মত ভেঙে রেখে দেয় ।” যামিনী বাজন থামাইয়া বলিল, “ধোপাট আমি জুট্ৰইনি। তোমার ষাড়ের মত গল জাহির করবার আর কি জায়গা ছিল না ?” মিহির বলিল, “কোথায় যাব শুনি ? মায়ের ঘরে ত প্রবেশ নিষেধ, তার পেত্নীর মত আয়াটি পথ আগলে বসে আছে। আর তুমি এদিকে এমন বিকট আওয়াজ করছ যে, আকাশ ফাটিয়ে না চেঁচালে কোনো কথা শোনানই যায় না। স্কুলে যেতে হ’লে শার্টগুলোর বোতাম ত লাগান দরকার ?” যামিনী বিরক্তভাবে বাজনা বন্ধ করিয়া উঠিয়া পড়িল । নিজের ঘর হইতে সু চ সুত আনিয়া মিহিরের শার্ট কোলে করিয়া বোতাম লাগাইতে বসিল । একটা বোতামও নাই । সমস্ত কৃতিত্বট ধোপার বলিয় তাহার মনে হইল ন, কিন্তু মিহিরের সঙ্গে কথা বলাই ঝকৃমারি ; একটা কথা বলিতে গেলে একশ’ট আসিয়া পড়িবে। - সুতরাং নীরবে কাজ শেষ করিয়া মিহিরের শার্ট মিহিরকে ফিরাইয়া দিয়া, সে আবার পিয়ানোর কাছে আসিয়া বসিল । কিন্তু মন হইতে সঙ্গীতের আবেগ তাহার একেবারে বিদায় হইয়া গিয়াছিল, কিছুতেই আর বাঙ্গাইতে ইচ্ছা করিল না। সে উঠিয়া পড়িয় রান্নাঘরে চলিল। বাবার এবং মিহিরের খাবার জোগাড় ঠিক মত হইয়াছে কি না দেখিয়া, সে ধীরে ধীরে উপরে উঠিতে লাগিল। মায়ের ঘরের কাছে আসিয়া আধখোলা দরজার পথে একবার ভিতরে উকি মারিয়া দেখিল । মা পিছন ফিরিয়া শুইয়া আছেন, একেবারে নিশ্চল ভাবে । হয়ত ঘুমাইতেছেন, মনে করিয়া যামিনী আর ঘরে ঢুকিল না। নিজের ঘরে গিয়া, চুল খুলিয়, স্বানের আয়োজন করিতে লাগিল। দোতলার স্বানের ঘরে দশটা বাজিবার আগেই গুল বন্ধ হইয়া যায়। তোলা জলে স্বান করিতে যামিনীর মোটেই ভাল লাগে না । সুতরাং শীতগ্রীষ্ম-নির্বিশেষে সে স্নানটা দশটার মধ্যেই সারিয়া রাখিতে চেষ্টা করে। সিড়িতে জুতার শক শোনা গেল। ষামিনী বুঝিল পিতা কার্য্যে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইয়া নীচে নামিতেছেন । র্তাহার খাবার সময় একবার কাছে বসিতে হইত, পত্নী বা কন্যা একজন কেহ কাছে বসিয়া ন৷ থাকিলে নৃপেন্দ্রবাবুর খাওয়াই ভাল করিয়া হয় না। তিনি এ সকল বিষয়ে এত অন্যমনস্ক যে চাকরবাকর শুধু মুন ভাত দিয়া গেলেও, বিন! আপত্তিতে খাইয়া চলিয়া, যান। কিন্তু যামিনী তখন তেল মাখিয়া ফেলিয়াছে, নীচে যাইবার মত অবস্থায় আর নাই, মুতরাং তোয়ালে, সাবান প্রভৃতি গুছাইয়া লইয়া সে মানের ঘরেই চলিয়া গেল । স্বান করিয়া বাহিরে আসিয়াই নীচের খাবার ঘরে মিহিরের কণ্ঠস্বর শোনা গেল। কিছু একটা গোলমাল ঘটিয়াছে, তাহাই লইয়া সে পাচক এবং ছোট্ট র উপর মহ। তর্জন-গর্জন মুরু করিয়াছে। পাছে মা জাগিয়া ওঠেন এই ভয়ে যামিনী আবার তাড়াতাড়ি নীচে নামিয়া গেল । তাহাকে দেখিয়াই মিহির আবার চেচাইয়া উঠিল, “একট, পচা ডিমকে এত ঘটা ক’রে ভাজবার কি দরকার ছিল শুনি ? এই দিয়ে মানুষ কখনও খেতে পারে ?” যামিনী দেখিল ডিমটার চেহারা সত্যই সুবিধাজনক নহে। অন্য কিছু তৈয়ারি করিয়া দিবার সময়ও আর নাই। অগত্যা বলিল, “কি আর করা যাবে বল ? এখন ত সময়ও নেই যে আর কিছু ক'রে দেবে ? মায়ের অসুখ হয়ে সবই গোলমাল হয়ে গেল।” যামিনী নরম হইয়া গিয়াছে দেখিয়া মিহির ঝগড়া, বাধাইবার বিশেষ সুবিধা করিতে পারিল না। স্কুলের সময়ও হইয়া যাইতেছে। হাড়ি-মুখ করিয়া উঠিয়া পড়িয়া, বলিল, “কি যে কাজের মানুষই তুমি তৈরি হচ্ছ! একদিন মায়ের অসুখ হ’লে বুঝি বাড়িমৃদ্ধ খেতে পাবে না ?” যামিনী উত্তর দিল না। মিহিরও বাহির হইয়া। চলিয়া গেল। খাইবার লোক একমাত্র সে-ই বাকী আছে, মা সম্ভবতঃ আজ কিছুই খাইবেন না। রাল্লার চাক্ষরটাকে ডাকিয়া বলিল, “আমাকেও যা হয়েছে দিয়ে দাও, শুধু শুধু একগাদা আর কার জন্তে রাধছ ? অায়াকে ডেকে মায়ের ভাত উপরে পাঠিয়ে দিও। মাছটাছ যা বাজারঃ