পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&p-ties ট্রেলে একরাত্রি ১১৩ পরাজয়ের কাহিনী অতি জলন্তভাবে বিবৃত করিয়া সমাজে ধৰ্ম্মভাবের প্রচলন বজায় রাখিবার অমূল্য সহায়তা করিয়াছেন। পাশ্চাত্য জগতের চিত্রকলা-রূপসীর আত্মা আজ তাহার বহু যুগের পুঞ্জীভূত বিলাসবেশভূষার জটিলতার ভারে প্রপীড়িত হইয়া পরিপ্রেক্ষিতের ভেন্ধিবাজী ও আলোছায়াপাতের মরীচিকাময় বেড়াজালের আবেষ্টনের পীড়নে ক্লান্ত ও অবসন্ন হইয়া সহজ সরল আত্মপ্রকাশের আগ্রহে তাহার বিলাস হৰ্ম্মারাজি পরিত্যাগ করিয়া আফ্রিকা ও আমেরিকার বনজঙ্গলে মানবজাতির আদিম ললিত্যহীন সরলতার মধ্যে সহজ সরল আত্মপ্রকাশের উপযোগী যে-চিত্রভাষার অনুসন্ধানে ব্যর্থপ্রয়াসে উন্মাদের স্থায় খুজিয়া বেড়াইতেছে, বুলার পল্লীর স্বমধুর চিত্ৰলেখা-লক্ষ্মী আজ তাহার সলজ অবগুণ্ঠন ঈষৎ উন্মোচন করিয়৷ সেই অতি-বাঞ্ছিত অনুপম ও একাধারে প্রাঞ্জল অথচ শক্তিময়, লাবণ্যময়, প্রাণময়, কৃত্রিমতাবিহীন এবং ভাবব্যঞ্জনায় ও রসবাঞ্ছনায় ভরপুর চিত্রভাষার সন্ধান বিশ্বমানবকে মিলাইয়া দিবে। ট্রেনে এক রাত্রি শ্ৰীস্বধীরকুমার দাশগুপ্ত পূজোর ছুটিতে রাচি থেকে কলকাতা চলেছি—থার্ডক্লাস গাড়ীতে। ইচ্ছে ছিল আর একটু উপরের কোঠায় উঠি, কিন্তু টাকার থলিট অনেক ঝেড়েকুড়েও ইন্টারমিডিয়েটের পয়সা বেরুল না। মূরী জংসনে ছোট গাড়ী থেকে বড় গাড়ীতে বদল করতে হয়, সেখানে গিয়ে অনেক কষ্টে গাড়ীর ভিতর খানিকটা জায়গা দখল করা গেল—বসবার মত নয়, কোনও রকমে এক পায়ে ভর দিয়ে দাড়াবার মত। গাড়ী চড়া নয় ত যেন একটা দুর্ভেদ্য দুর্গ জয় করা। ভিতরের নিরীহ যাত্রীরা ছাতি, লাঠি, ছকোর নল ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্র জানাল দিয়ে বার ক’রে বসে আছে, যেন এক একটি মেশিন-গান মুখ বার ক’রে রয়েছে। দরজার কাছে দাড়িয়ে একটা শিখ ও একটা মাড়োয়ারী দ্বার রক্ষায় নিযুক্ত। বাকে ঝাকে যাত্রী এসে দরজার ওপর আঘাত করছে—‘এই যানে দেও’ । তারা কিন্তু নিৰ্ব্বিকার । নেহাৎ বিরক্ত করলে অনিচ্ছাসত্ত্বে ঠোট দুটি নেড়ে বলে,— আরে ভাগে, দুসর গাড়ীমে যাও। যেন প্লাটফরমের এই ধাত্রীতরঙ্গের ধাওয়া-আসার সঙ্গে তাদের কোনযোগ নেই। তাদের পৌছে দেওয়া ছাড়া এই এত বড় এঞ্জিনস্বদ্ধ গাড়ীটারও যেন আর কোন প্রয়োজনই নেই। আমরা যখন পাচ ছয়জন মিলে গাড়ীটাকে আক্রমণ করলুম তখন কিন্তু ব্যাপারটা অন্যরকম দাড়াল। শিখ ও মাড়োয়ারী দুজনের শক্তিতে কুলোল না। আরও দু-এক জন তাদের সাহায্যে এগিয়ে এল। বাকী লোকগুলো বিভিন্ন ভাষায় অথচ একশ্বরে আমাদের কার্য্যের তীব্র প্রতিবাদ আরম্ভ করলে। যতগুলি লোক স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় গাড়ীর ভিতর স্থানলাভ করেছে তারা যেন সব এখন একদেশের লোক অন্যদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। কিন্তু জয় আমাদেরই হ’ল। সজোরে দরজা ঠেলে ছড়মুড় ক’রে ভিতরে ঢুকে পড়লাম, ভিতরের অধিবাসীবৃন্দ আমাদের মোটেই ভালভাবে অভ্যর্থনা করলে না। একটি মাড়োয়ারী স্ত্রীলোক—বোধ হয় দ্বাররক্ষক মাড়োয়ারী প্রভুটির স্ত্রী হবেন—বেঞ্চির উপরে স্থানাভাবে ছটাে বেঞ্চির মাঝখানে একটা প্রকাও ব্লিছানা পেতে

  • " l