পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖՀ հ টানিতে কহিল, আর খুড়ো আমার কি একদণ্ড বসে থাকবার উপায় আছে ? আজ হাট-বার, চলেছি ও-পাড়ায় তাগাদায় ; বেটার বাপু-বাছা ব’লে নেবার সময় ত নেয়, তারপর আর চিংহাত উপুড় করবার নাম করে না। তা খুড়ে, তোমার পয়সা কট আজ দিয়ে ফেল না ? কালত শুনলাম ঘোষেদের ওখানে কিছু পেয়েছ । —আর ভাই সে কথা বল কেন ? ধনীই বল আর গরিবই বল কারু হাত দিয়ে আজকাল কিছু গলে না। তোমার পয়সাটার জন্যই ঘোষেদের ওখানে গায়ে জর নিয়েও খাটলাম, তা আজ-কাল ব’লে কেবল ভাড়াচ্ছে । আর কট দিন সবুর কর, হাতে পয়সা হ’লে আমি নিজেই দিয়ে আসব, তোমার আসতে হবে না। —ই, তা ন৷ আর কিছু ! তিন বেল হেঁটেই যা পাচ্ছিা! তা পয়সা দিতে পারবে না অত খাওয়ার সর্থ যায় কেন ? মঙ্গলবারের মধ্যে আমার পয়সা চাই-ই, কোন ওজর শুনব না। ই খুড়ে,–এও দিন দিন নয়, মনে থাকে যেন।--অশ্বিনী রাগিতে রাগিতে চলিয়া গেল । চরণ তামাকট শেয করিয়া কাপড়ের খুট খুলিয়া একটাক সওয়া-ন-আন পয়সা গণিয় কাছায় শক্ত করিয়া বাধিয়া রাখিল ; তারপর গা মোড়ামূড়ি দিয়া উঠিয়া পড়িল। গোয়াল হইতে গরু কয়টা বাহির করিয়া তাদের জাব দিল, পরে গাড়ু লইয়া মাঠের দিকে চলিয়৷ গেল । নিত্যকালী বাসন কয়খানা ধুইয়া এক ঘড়ী জল লইয়া ঘাট হইতে আসিয়া পড়িল । ইতিমধ্যে মেজ ছেলে হারু উঠিয়া পড়িয়াছে। তাহার আজ দেড়মাস যাবৎ জর হইতেছে, পিলেও বাড়িয়া গিয়াছে। ছোট মেয়েট কয়েক দিন হইল এই রোগেই মারা গিয়াছে। তাহাকে তবু যদু কবরেজের দুইটা বড়ি খাওয়ান হইয়াছিল। সেই পয়সাই কবরেজকে দেওয়া হয় নাই, সে কি আর অযুদ্ধ দিবে ? দুই দিন হইল ছেলেটার জরের বড় বাড়াবাড়ি দেখা যাইতেছে । আজ শনিবার, শমসের কবরেজকে ডাকিয়া একটা ঝাড়া দেওয়াতে পারলে ভাল হয়। জলের ঘড়া রাখিয়া দিয়া নিত্যকালী ঘুমন্ত ছেলে S99ు মেয়েদের জাগাইয়। দিল, পরে বিছানার মাদুরখানা উঠাইয়া ঘরট ঝাট দিয়া ফেলিল। রোগ ছেলেট। মুদায় কাদিতেছিল, ঘুম হইতে উঠিয়া আর দুটিও তাহার সঙ্গে যোগ দিল ; বড় মেয়েটি গোবর-জল আর মাটি লইয়া রান্নাঘর লেপিতে লাগিয়া গেল । চরণ মাঠ হইতে ফিরিয়া আসিল । হাত মুখ ধুইয়৷ রোগ ছেলেটার গায়ে হাত দিয়া দেখিল জর আছে কি ন। জর খুবই আছে, ভোরের দিকে বোধ হয় একটু বেশী হইয়। আসিয়াছে। সোয়া-পাচ আনার গান্ধীমাদুলীতে দেখা যাইতেছে কোন ফলই হইল না। ছেলেগুলিকে কাদিতে দেখিয়া স্ত্রীকে ডাকিয়া কহিল, ও পেচীর ম, ওদের কিছু খেতে দাও না, দুটো মুড়ি থাকে ত হারুকে দাও । পেচীর মা ওরফে নিত্যকালী বিড়বিড় করিয়৷ আপন মনে বকিতেছিল, এইবার মুখ ছুটাইবার একটা সুযোগ পাইল । ঝঙ্কার দিয়া উঠিল, “আছে বার্সি আকার ছাই, তাই খাও অখন । তিন দিন ধরে বলছি চাল বাড়ন্ত, তা মিনসের কানেই ওঠে না। কেবল রাতদিন বসে বসে তামাক গাজ খাওয়া । ছেলেট। এদিকে বাচে না । আমার মরণ নাই, মড়ার যম আমাকে দেখে ন । চরণ আজ ছয় দিন হইল একটান গাজাও টানিতে পারে নাই, গাজার দোকানে জোর পিকেটিং চলিতেছে। গাজার অভাবে তাহার পেট ফুলিয়। গিয়াছে, অনিদ্রার তাহাও একটি কারণ। গাজ খাওয়ার উল্লেখ মাত্র আগুনে খি পড়িল, “কি, যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা, সকালবেল উঠেই গাল মন । চৌদ্ধ হাত কাপড়ে কাছা নাই তাদের আবার জোর গলায় কথা।" নিত্যকালীর চুলের মুঠি ধরিয়া চরণ পিঠে বেশ দু-ঘ বসাইয়া দিল, সে স্বর করিয়া কাদিতে লাগিল, ছেলে তিনটার কান্না আরও বাড়িয়া গেল । চরণ মেয়েকে ডাকিয়৷ বলিল, কি রে পেচ, কিছু আছে ? পেচী বলিল, আছে বাবা, তুমি ওদের নিয়ে বস, আমি দিচ্ছি। চরণ ছেলেদের লইয়া দাওয়ায় বসিয়া পড়িল । পেচীর ঘরলেপা হইয়া গিয়াছিল, সে হাঃ ধুইয়া একটা থালায় কিছু পাস্ত ভাত ও তার জিনগুৰ্ণ