পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\L8 3. “পালিব খোদার আঞ্জা সদা প্রাণপণে, সোধব ওস্তাদ আর যত গুর জনে ৷” “ফেরেস্তা, ঞ্জিন, বেহেস্ত, দোজখ, আসমান, জমীন, চন্দ্রস্বর্য্য, আগুন, পানি, মানুষ, গরু,—সবই তিনি পয়দা করিয়াছেন।" (৩ পৃ: ) "মে মহেরবান আল্লাহতালার দয়ায় আমরা পাইয়াছি,—একমাত্র তাহাকেই সেজদ ( ==সাপ্তাঙ্গ প্রণাম ) করিবে এবং উাহারই এবাদং ( ss আরাধনা) করিবে।" ( ৪ পৃ: ) পূৰ্ব্বোদ্ধত রূপ মুসলমানী “বাংলা” শব্দ মক্তবমাদ্রাসায় যে-শিশুরা পড়ে তাহদের পক্ষেও অসহ মনে করিয়াই বোধ হয় লেখক ঐ গল্পের শেযে “শব্দাৰ্থ” দিয়াছেন :– পয়দা কৃষ্টি, দোজখ-নরক. বেহেস্ত-স্বৰ্গ, আসমান-আকাশ। “যাহারা পোদাতালাকে এক জানিয় তাহার এবাদৎ(=আরাধন) না করিবে, তাহার গোনাহগার = পাপ | হইবে এবং অথেরে খোদার গঞ্জবে = ক্ৰোধে পড়িয়া দোজপেয় আগুনে জলিতে থাকিবে (১৯পূ:) "পাক পবিত্র ৷ কোরাণেব ধৰ্ম্মই একমাত্র সত্যধৰ্ম্ম ।...কোরাণ শরীফ পড়িলে সওয়াব = পুণ্য হয়, মন পবিত্র থাকে ও প্রাণে শান্তি পাওয়া যায় । বাটতে কোর-আন শরীফ পাঠ করিলে শয়তান পলাইয়া যায় এবং বালা মণিবত = আপদ-বিপদ | কাটিয়া যায়। প্রতোহ পাক সাফ | -পবিষ্কার পরিচ্ছন্ন ] হইয় কোরণ শরীফ পাঠ করা উচিত।” । ১২ পৃ: | “হজরতমুদ। এলেমে কিমিয়। --রসায়নবিদ্যা জাণিতেন "ssপৃ: ”তুমি মালদার + ধনী ৷ হইয়াছ” আবার-“সে খুব ধনী হইল।” [ ] “কিন্তু সে বড়ই কৃপণ ছিল। এতিম |= পিতৃহীন মিস কিন্‌ {=ভিক্ষুক গরীব, ফকার কাহাকেও এক পয়সা খয়রাত { =দান ৷ করিত না।" | ৪৪ পৃ: | “বর্থীলের [ = কৃপণের | মাল ( = ধন । কোন কাজে লাগে માં " । . 6 જૂ: | “তাঙ্কু [ = স্থায্য ] উঠিবার পূৰ্ব্বে নিয়েত [ = সংকল্প | করিয়া তাম্বু ডুবিয়া যাওয়া পৰ্যন্ত উপবাস করাকে রোজ বলে।" উদ্ধৃত বাক্যগুলি দেখিয়া পাঠক স্বভাবতই জিজ্ঞাসা করিতে পারেন, উহা কি বাংলা ভাষা, না বাংলা অক্ষরের সাহায্যে আরবী শিক্ষার চেষ্টা ? “পাক কোরাণ" না বলিয়া “পৰুিত্র কোরাণ" বলিলে, অথবা “সওয়াৰ হয়” এর পরিবর্তে “পুণ্য হয়” । অথবা "পাকসাফ" না বলিয়া “পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন” বলিলে বোধ হয় ভাষাটা “হিন্দুর বাংলা", অতএব মুসলমানের অপাঠ্য, হইয়া পড়িবে। অথচ শিক্ষিত মুসলমানেরা “হিছর বাংলা” সম্বন্ধ একেবারে অজ্ঞ, এ-কথা যে সত্য নহে তাহার প্রমাণ এই পুস্তকেই অনেক আছে। “খোরাক” প্রবন্ধে—“আমরা যাহা আহণ করি","রোগীর খাদ্য","ভাল খাদ্য","স্থখাদ্য", “পরিপাক হয়” ইত্যাীি আছে। অথচ প্রবন্ধের নাম

  1. ~~

". ○○○○ “থোরাক” । দুই পৃষ্ঠা ব্যাপী প্রবন্ধের মধ্যে"খোরাক" কথাটি মাত্র দুইবার এবং "খাদ্য” পাচ বার ব্যবহার করা হইয়াছে। ঐরূপ —“তিনি ফজরে উঠিয়া” ( ৩৫ পৃ: ) ; আবার "সকালে উঠিয়া আমি” (৩৪ পূ: ), এবং “এই ভাবিয়া তিনি ...প্রাতে" (৩৬ পূ:)। "এইরূপ খাব দেখিলেন” (৩৫ পৃ: ), তিন লাইন পরে- “আবার স্বপ্ন হইল”। “কাবা শরীফ” প্রবন্ধে—“তীর্থ স্থান”,“পবিত্র কাব্যগুহু","পবিত্র জমজম", “খোদাতায়ালার দয়ায়।” বড় অক্ষরে ছাপা শব্দগুলি আরবী ভাযায় না দেওয়ায় ভাষা নিশ্চয়ই অশুদ্ধ কি অনিষ্টকর হয় নাই । জোর করিয়া অনাবশ্ব)ক পরিমাণে আরবী শব্দ ঢুকাইবার চেষ্টার ফলে বহু স্থানে সংস্কৃতমূলক শব্দের সহিত আরবী ফাসী শবের হাস্যকর সমাবেশ হইয়াছে। যথা – "পানির নাম জীবন শুইল কেন ?" | ৪১ পূঃ | “ এই পানি পান করিলে রোগ জন্মিলে ।” | ৪২ পূ: | "মেহেরবান আল্লাহতায়ালার দয়ায় পু: | "কোরাণ শরীফ" প্রবন্ধে —“পবিত্র কেতাব কোরাণ শরীফ" এবং “পাক ( = পবিত্ৰ ) কোরাণ, “পাপ পুণা” ও “শেরেক বেদাং ( – ভালমন্দ ) এবং “সওয়াব’ ( = পুণ্য) হয়। ১১ পৃষ্ঠায় “খুনজথম করিয়া কাটাইত” বাক্যে “খুন-জথম কথাটি প্রচলিত বাংলা অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। কিন্তু ১৭ পূঃ “শকার্থে"—“রক্ত—খুন", এইরূপ আছে। আর এক স্থানে —“ছেলের একটি পশমণ্ড কাটে নাই ।” ( ৩৭ পূ: ) । আমাদের ভাযায় মানুষের চুলকে পশম বলে ন!—কোন কোন পশুর লোমকে পশম বলে । মক্তব-মাদ্রাসরি তৃতীয় শ্রেণীর বাঙালী শিশুগণকে বাঙালীর বাংলা সম্বন্ধে যথাসম্ভব অজ্ঞ রাখিয়া বাংলা অক্ষরের সাহায্যে আরবী-ফার্সীতে পণ্ডিত করিয়া তুলিবার প্রবল প্রয়াস সম্বন্ধে র্যাহারা ইহার পরও সন্দিহান, র্তাহারা নিম্নলিখিত “শব্দার্থ“গুলি লক্ষ্য করুন :– “প্রদীপ—চেরাগ [ ৯পূ: ; অহঙ্কারে--দেমাকে [ ১• পৃ: 1; মাংস–গোস্ত (২২ পৃ: ; গুজন—মুরকিগণ ৩ি৪ পৃঃ] ; ধাৰ্ম্মিক— ীিলদার (৩৮ পৃঃ ] : স্বপ্ন—থাষণ ঐ 1; বিদ্যা—এলেম [ ৩৯ পৃ: 1; স্নান—গোসল{৪৩পৃঃ] ; কৃপণ–বর্থীল ৪ি৬পৃঃ] ; ধনী-মালদার।” এইরূপ অ-স্বাভাবিক উপায়ে অ-বাঙালা শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করাইবার উদেখা আর কিছুই নহে—কেবল সরকারী চাকুরী, কাউন্সিলের সভ্যসংখ্যা, ;