পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ প্রভাপাদিত্যের কথা אצ( অন্তচর আবদুল লতীফ খাঁর ভ্রমণ-কাহিনী ও ইসলাম খার অন্যতম সেনাপতি মির্জা সহনের প্রণীত বাহারিস্তান হইতে প্রতাপাদিত্যের সে-সময়ের কথা জানিতে পার! যায় । ইসলাম খ। রাজমহলে আসিলে, প্রতাপের দৃত শেখ বদী তাঙ্গর কনিষ্ঠ পুত্র সংগ্রামাদিত্যকে লইয়া নানা উপহারসঙ্গ তাঙ্গার সহিত সাক্ষাৎ করেন । সুবেদার রাজকুমারের সচিত সদ্ব্যবহার করিয়া তাহাকে বিদায় দিয়া প্রতাপদিত্যকে সাক্ষাৎ করিতে বলেন। লতীফ লিথিয়াছেন যে, এই সময়ে প্রতাপাদিতোর মত সৈন্য ও অর্থ বলে বলী রাজ বঙ্গদেশে আর কেহ ছিলেন না। র্তাহার যুদ্ধসামগ্রীতে পর্ণ প্রায় সাত শত নৌকা ও বিশ হাজার পাইক এবং পমর লক্ষ টাকা আয়ের রাজা ছিল। ইসলাম খাঁ রাজমহল হইতে ঢাকায় যান ও তথায় রাজধানী স্থাপন করেন। অনেক জমিদার তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া প্রতাপাদিত্য শেখ বদীর সহিত উপহার লইয় হন। স্ববেদার প্রতাপাদিতোর সম্মান করিয়া ভাটির জমিদারদের বিরুদ্ধে তাহার সহিত যোগদানের কথা বলিয়া বিদায় করিয়া দেন। প্রতাপ কিন্তু যথাসময়ে সুবেদারের সহিত যোগ দেন নাই । ইহাতে সুবেদার যারপরনাই ক্রুদ্ধ হন। শেষে যখন সংগ্রামদিতাকে কতকগুলি রণপোত সহ পাঠাইয়া সুবেদারের নিকট ক্ষমা চাহিয়া পাঠাইলেন, তখন সুবেদার ক্রোধে অন্ধ হইয় সেই সকল রণপোত এমারতের জিনিষপত্র বহিয়া ভাঙিয়া ফেলিতে আদেশ দিলেন এবং সেনাপতি ইনায়েৎ খ ও মির্জা সহনকে প্রতাপাদিত্যের রাজ্য দখল করার জন্য পাঠাইয়া দিলেন। ইনায়েং খ প্রধান সেনাপতি হইয়া স্থলসৈন্যের এবং সহন রণতরী ও তোপ লইয়। যাত্রা করিলেন । এই সহনই তাহার বাহারিস্তান গ্রন্থে এই সকল বিবরণ নিজেই লিখিয়া গিয়াছেন। তাহার, ঢাকা হইতে নানা নদনদী অতিক্রম করিয়া ক্রমে ইচ্ছামতী ও যমুনার সঙ্গমস্থলে আসিয়া উপস্থিত হইলেন । এইখানে সালিখা থানায় প্রতাপের সৈন্যের পথিমধ্যে ছিলেন । %ਿਣ

立 勢 fতাকে সহিত র্তাহাদের সাক্ষাৎ হইল। প্রতাপ অবশ্ব আত্মরক্ষার জন্য র্তাহাদিগকে বাধা দিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। প্রতাপের পুত্র উদয়াদিত্য রণতরী, হস্তী, অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্য লইয়া অগ্রসর হন। কমল থোজী ও কতলু খার পুত্র জমাল খাঁ তাহার সহকারি-স্বরূপে গমন করেন। কমল পোজ নৌসেনার ৪ জমাল খ স্থলসৈন্যের ভার গ্রহণ করিয়াছিলেন। উভয় পক্ষের যুদ্ধ বাধিলে ক্রমে মোগলেরা জয়লাভ করিতে আরম্ভ করে । কমল খোজা নিহত হন । উদয় ও জমাল ক্রমে হটিয়া যাইতে আরম্ভ করেন। অবশেষে মোগলের ধূমঘাটে গিয়া উপস্থিত হয় । ইসলাম থা প্রতাপাদিত্যের দমনের জন্য সৈন্য পাঠাইয়া হকীম থাকে রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে পাঠাইয়াছিলেন। রামচন্দ্র ধূত হইয়া ঢাকায় নজরবন্দী রূপে অবস্থান করিতে বাধ্য হন। হকীম খাঁ তাহার পর যশোরে আসিয়া মোগল-সৈন্যের সহিত যোগ দেন । প্রতাপের সেনাপতি জমাল খাও র্তাহার পক্ষ পরিত্যাগ করিয়া মোগলদিগের সহিত মিলিত হয়। এইরূপে মোগলদিগের বলবৃদ্ধি হইয় উঠে। মোগলের দুর্গের নিকট উপস্থিত হইলে, কিছুক্ষণ উভয় পক্ষের গোলাবৃষ্টিব পর প্রতাপ অনন্তোপা হইয়া ইনায়েতের হস্তে আত্মসমর্পণ করেন। ইনায়েং তাহাকে ঢাকায় লইয়া গেলে ইসলাম খ) প্রতাপকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া কারাগারে নিক্ষেপ করেন। এদিকে মির্জা সহন যশোরে থাকিয়া নানারূপ অত্যাচার করিতে লাগিলেন। উদয়াদিত্যের কি হইল জানা যায় না, তিনি যুদ্ধে প্রাণবিসর্জন দিয়াছিলেন বলিয়৷ শুনা যায়। প্রতাপেরও পরিণাম কি হইয়াছিল তাহাও জানা যায় না। র্তাহাকে পিঞ্জরাবদ্ধ করিয়া আগরায় পাঠাইতে র্তাহার যে বারাণসীতে দেহত্যাগ ঘটিয়াছিল, ইহাঁর কোন ঐতিহাসিক সমর্থন নাই। ইসলাম খার সময়েই যে প্রতাপের পতন ইহা বাহারিস্তান সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ করিয়া দিয়াছে। বসু-মহাশয়ও সেই কথা বলিয়াছেন ।