পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

^Ro8 S99áు Nকাপিল সাংখ্যবাদকে এই প্রকার পরিবর্তিত করিয়া প্রকৃষ্ণ বেদাস্তের সহিত তাহার সমন্বয় করিয়াছেন। সপ্তম অধ্যাঙ্গে গীতার দার্শনিক তত্ত্ব বা বিজ্ঞানের আলোচনা আছে। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুং, ব্যোম এই পঞ্চ মহাভূত ও মন, বুদ্ধি, অহঙ্কার ব্রহ্মোৎপন্ন প্রকৃতির এই অষ্ট বিভাগ স্বীকৃত হইয়াছে। ইহাই ব্রহ্মের অপরা প্রকৃতি। জীবাত্মা বা কাপিল সাংখ্যের পুরুষ সমষ্টি ব্রহ্মের পরাপ্রকৃতি। এই দুই প্রকৃতিই পরম ব্রহ্মের মায়াসন্থত। প্রকৃতির যে অষ্ট বিভাগ দেখান হইয়াছে সমস্ত বহির্জগৎ ও মানসিক ব্যাপারসমূহ তাহাদের অন্তর্গত। এই সমুদায় জড়পদার্থ। মন স্বক্ষ জড়বস্তুমাত্র, পুরুষই কেবল চেতনাশীল এবং তঁহারই চেতনায় এই সমস্ত উদ্ভাসিত হয়। তিলক মনে করেন, মূলপ্রকৃতির ভেদ দেখাইতে গেলে মূল প্রকৃতিকে ছাড়িয়া তাহার অন্তর্গত পদার্থগুলি দেথাইতে হইবে এজন্য মহান, অহঙ্কার ও পঞ্চতন্মাত্র এই সাতটি মাত্র ভেদ হয়, “কিন্তু এরূপ করিলে পরমেশ্বরের কনিষ্ঠস্বরূপ বা মূল প্রকৃতি সাত প্রকার বলিতে হয়। অষ্টধা প্রকৃতির বর্ণনাকেই বজায় রাখা গীতার অভীষ্ট। তাই মহান, অহঙ্কার ও পঞ্চতন্মাত্র এই সাতের মধ্যেই অষ্টম তত্ত্ব মনকে পূরিয়া দিয়া পরমেশ্বরের কনিষ্ঠস্বরূপ অর্থাৎ মূল প্রকৃতিকে অষ্টধা করিয়াই গীতায় বর্ণিত হইয়াছে (তিলক বাংলা অনুবাদ, ১৮৪ পূ: ) । আমার মতে গীতায় ৭৪ শ্লোকে এই যে অষ্ট বিভাগ দেখান হইয়াছে তাহা সাংখ্য ব। বেদাস্তাকুযায়ী বর্গীকরণ নহে; প্রকৃতিজাত জড় জগতের বিভাগ মাত্র। এখানে পঞ্চ স্থূল ভূত ও মন, বুদ্ধি, অহংকার রূপ স্বক্ষ জড়পদার্থের কথাই বলা হইয়াছে, শঙ্কর ও তিলক প্রভৃতি টীকাকার উদ্দিষ্ট তন্মাত্রাদির কথা নহে। কেন একথা বলিতেছি সপ্তম অধ্যায়ের ব্যাখ্যাকালে তাহার বিচার করিব। সাংখ্যোক্ত বর্গীকরণের কথা ১৩৫ শ্লোকে আছে। শ্ৰীকৃষ্ণ এই বর্গীকরণ মানিয়া লইয়াছেন। গুণত্রয় বিভাগ কপিল সাংখ্যের নিজস্ব । সত্ত্ব, রজঃ ও তমের বিস্তারিত আলোচনা গীতার চতুর্দশ অধ্যায়ে আছে। এই গুণত্রয়কে ভিত্তি করিয়াই শ্ৰীকৃষ্ণ সমস্ত ব্যাপারের ভালমন্দ বিচার করিয়াছেন । ত্রিগুণ তত্ত্বই শ্ৰীকৃষ্ণের কষ্টিপাথর। শ্ৰীকৃষ্ণ কাপিল সাংখ্যের দ্বারা যে সমধিক প্রভাবান্বিত হইয়াছেন তাহাতে সন্দেহ নাই।