পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাতৃ-ঋণ স্ত্রীসীতা দেবী br পথে চলিতে চলিতে প্রতাপ কত কথাই যে ভাবিয়া লইল, তাহার ঠিক-ঠিকানা নাই। চিস্তাকে লাগাম ছাড়িয়া দিতে তাহার নিজেবই ভয় করিত, কিন্তু যৌবনধৰ্ম্ম তাহাকে এই পথে নিতাই লইয়া যাইত। অনেক কথা মনের দ্বারে আসিয়া উকিঝুকি মারিত, প্রতাপ জোর করিয়া তাহদের ঠেকাইয়া রাথিত, আবার মাঝে মাঝে সুমধুর কল্পনার স্রোতে নিজেকে একেবারে ভাসাইয়া দিত। নিজের কাছে নিজেই লজ্জিত হইত, নিৰ্ব্বোধ, মূৰ্খ বলিয়া নিজেকে ধিক্কার দিত, কিন্তু কল্পনাকে সংযত করিতে পারিত না। নৃপেন্দ্রবাবুর বাড়ি পৌছিয়া দেখিল, মিহির সামনের রাস্তায় হকিষ্টিক হাতে ঘোরাঘুরি করিতেছে, ইটের টুকরার উপর দিয়া হাত পাকাইয়া, ঘরে বন্ধ থাকার দুঃখ ভূলিবার চেষ্টা করিতেছে। প্রতাপ জিজ্ঞাসা করিল, “কি, রাত্তির বেলা হঠাৎ হকি পলার সর্থ হ’ল যে ?” মিহির ঠোট উন্টাইয়া বলিল, “কি করব ? ঘরের ভিতর আর টিকবার জো নেই। একটা আরশোলা উড়ে গেলেও সবাই হৈ হৈ ক’রে তেড়ে আসে, তাতেই নাকি মায়ের ঘুম ভেঙে যাবে।” প্রতাপ হাসিয়া ভিতরে চলিয়া গেল। নৃপেন্দ্রবাবু আপিস-ঘরে বসিয়া কাজ করিতেছিলেন, প্রতাপকে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইয়া বলিলেন, “আজ অনেকটা ভালই জাছেন, আর কিছু করতে হবে না, শুধু ঠিক সময়ে আয় যাতে ওষুধ-বিস্তুদ দেয়, সেইটুকু চোখ রাখলেই হবে।" নৃপেন্দ্রবাবু আবার নিজের কাজে ডুব দিলেন। প্রতাপ বসিয়া বলিয়া অতিষ্ঠ হইয়া উঠিল, কাহাতক এই রকম স্থা করিয়া বসিয়া থাকা যায় ? উঠিয়া গিয়া মিহিরের হকি খেলায় যোগ দিবে কি-না ভাবিতেছে, এমন সময় টুং টং করিয়া একটা ঘণ্টা নীচেই কোথায় বাজিয়া উঠিল। নৃপেন্দ্রবাবু চশমাট চোখ হইতে খুলিতে খুলিতে বলিলেন, “চলুন, খাবার দিয়েছে। আপনার অনেক দেরি হয়ে গেল বোধ হয়। গিন্নি পড়ে অবধি সব কাজেরই বড় বিশৃঙ্খলা হয়েছে। মেয়েটারও পরীক্ষা, সে ভাল ক’রে কিছু দেখাশোনা করতে পারে না।” প্রতাপ নিরুত্তর অবস্থাতেই তাহার পিছন পিছন খাবার-ঘরে উপস্থিত হইল। যামিনী তাহাদেরই সঙ্গে খাইতে বসিবে কি-না সেই চিন্তাতেই সে ব্যস্ত ছিল। টেবিলে শুভ্র আচ্ছাদন, প্লেট, চুরি, কাটা, চামচ সব ইংরেজী কায়দায় সজ্জিত। প্রতাপ একটু ঘাবড়াইয়া গেল। এভাবে খাইতে সে কোনদিন অভ্যস্ত নয়, শেষে কি জিবটিব কাটিয়া একটা কেলেঙ্কারি কাণ্ড করিবে ? সৰ্ব্বনাশ, যামিনীর সম্মুখে এই রকম একটি ব্যাপার ঘটিলেই হইয়াছে আর কি ? সে তাহা হইলে প্রতাপকে একটি আস্ত জানোয়ার ঠাওরাইবে । ভাবিতেই শীতের দিনে প্রতাপের কপাল ঘামিয়া উঠিল। একটু আমৃত আমৃতা করিয়া সে নৃপেন্দ্রবাবুকে বলিল, “আমার কাট চামচেয় খাওয়া কোনদিন অভ্যেস নেই। আমি হাতেই খাব।” নৃপেন্দ্রবাবু টেবিলেও একখানা বই হাতে করিয়া হাজির হইয়াছিলেন। বইয়ের পাতা হইতে চোখ তুলিয়া হাসিয়া বলিলেন, “বেশ ত, বেশ ত, আমার কোন আপত্তি নেই। আমিও যে হাতে খাই না, সেটা নিতাস্ত দায়ে পড়েই। অনেকদিন পৰ্য্যন্ত আমার পেটই ভরত না ।" এমন সময় যামিনী আর মিহির আসিয়া ঘরে ঢুকিল। প্রতাপ একবার দরজার দিকে চাহিয়াই চোখ ফিরাইয়া লইল। ভদ্রমহিলার দিকে চোখ ५ अनु, त्रुि তাকানটা তাহার বাঙালী ভদ্রতার ীি র সভ্যাস