পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ তাহার ঘরের দরজা খোলা, থাকিবে কেন ? কিন্তু এত নীরবে সে কি করিতেছে ? প্রতাপেরই মত বসিয়া নানা কথা ভাবিতেছে হয়ত। বিশেষ কাহারও কথা সে ভাবিতেছে কি ? এত সুন্দরী, এমন মনোহারিণী সুশিক্ষিত তরুণী, এতদিন কি কেহ তাহার কাছে প্রণয়নিবেদন করে নাই ? যামিনীদের সমাজে পূৰ্ব্বরাগের চলনই আছে, সুতরাং করিয়া থাকাই সম্ভব। কে তাহারা ? প্রতাপের মাথ৷ দপ দুপ করিতে লাগিল । না, না, এ সব ভাবিয়া হইবে কি ? সে কি জানে না যে, যামিনীর মনোজগতে কোনদিনই তাহার স্থান হইবে না ? কিন্তু হয়, বুদ্ধি দিয়া সে যাহা বোঝে, হৃদয় দিয়া তাহ বুঝিতে পারে কই ? যত চোখ ফিরাইয়া লইতে চেষ্টা করে ততই যেন তাহ চুম্বকারুষ্ট লৌহখণ্ডের মত ঐ আলোকোদ্ভাসিত কক্ষদ্বারের দিকে ছুটিয়া যায়, মন যত অন্য দিকে লইয়। যাইতে চায়, ততই তাহ মধুমত্ত মধুকরের মত একটি অতিপ্রিয় নামের চারিদিকে গুঞ্জন করিয়া ফেরে। প্রতীপ চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া অতি লঘুপদক্ষেপে সিড়ির মুখের কাছটাতে পায়চারি করিয়া বেড়াইতে লাগিল । ( 3 ) শীতের সকালে ঘুম সহজে কাহারও ভাঙিতে চাহে ন, কিন্তু গৃহস্থের ঘরের বেী-ঝির সে অধিকার নাই যে একটুখানি মধুর আলস্যচর্চা করিবে । পিসিমা বৃদ্ধ৷ তাঙ্কার আজন্মের অভ্যাস ছাড়িতে পারেন না, কাক-কোকিল ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই উঠিয় বসেন। অগত্যা বকেও তাহাই করিতে হয়, বুড়ী শাশুড়ী উঠিয়া পাট ট্রর করিয়া দিবেন, আর সে আরাম করিয়া শুইয়া থাকিবে, তাহা ত হয় না ? যদিও ইহার জন্য বিরক্তিও তাহার মনে অনেকখানি সঞ্চিত হইয়া আছে। বধু সবেমাত্র উঠিয়া মুখেচোখে জল দিতেছে, এমন সময় সদর দরজায় ঠক ঠক্‌ করিয়া শব হইল। কে খাবার এখনই মরিতে আসিল ? নীচের ভাড়াটেদের কেহ নাকি ? তাহার। ত দিব্য নাক ডাকাইয়া নিস্ত্র দিতেছে, এখন তাহদেরও দরোয়ানী বেচারী ভদ্রলোকের মেয়ে टॉशरकई कब्रिटङ इहेष्व बांकि ? अङाख् दिब्रख् 을 - -3 - মাতৃ-ঋণ ఫిలిపి ভাবে অগ্রসর হইয়া গিয়া বধু হড়া করিয়া দরজাটা একটান দিয়া খুলিয়াই দেখিল বাহিরে প্রতাপ দাড়াইয়। আছে । একটু অবাক হইয়া বলিল,“ওমা, ঠাকুরপো যে,এত সাততাড়াতাড়ি হাজির ? সারারাত জেগে একেবারে হয়রাণ হয়ে গেছ নাকি ? সত্যি এ তাদের অন্যায় বাপু, এমন ক’রে মানুষকে পেয়ে বসতে নেই। ছেলে পড়াতে রেখেছে ব’লে ত মাথ। কিনে নেয়নি ?” প্রতাপ অত্যন্ত মানভাবে হাসিয়৷ ভিতরে ঢুকিয়া পড়িল । বলিল, “ন, হয়রাণ হইনি, আমাকে বিশেষ কিছু করতে হয়নি, বসেই ছিলাম। তবে বাড়ির সকলেই উঠে পড়েছে, এখন আর আমার বসে থাক। ভাল দেখায় না, তাই চলে এলাম।” বলিয়া সে উপরে উঠিয় গেল । ঘরে ঢুকিয় দেখিল, রাজুর তখনও মাঝরাত্রি, আপাদমস্তক মোট লেপে ঢাকা,নাকের ডগাটুকু মাত্র দেখা যাইতেছে। প্রতাপ একটু ইতস্ততঃ করিয়া নিজের বিছানাট। টানিয়া পাতিয়া শুইয়া পড়িল । শরীর ত সৰ্ব্বদ মনের বশ নয়, ক্লান্তি তাহার খানিকট হইয়াই ছিল। ঘুমাইবার তাহার বিন্দুমাত্রও ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু নিজের অজ্ঞাতসারেই সে মিনিট-দুইয়ের মধ্যে ঘুমাইয়। পড়িল । ঘুম ভাঙিল তাহার কামুর চীংকারে । সকালে প্রায়ই দুধ খাওয়া লইয়। বাড়িতে একটা কুরুক্ষেত্র বাধিয়া যায় । কাতু য'ড়ের মত গলা করিয়৷ চীৎকার করে, কাল্পর মা তাহার পৃষ্ঠে চড়চাপড় নির্বিচারে বর্ষণ করেন এবং পিসিমা তাহাকে ক্রমাগত বকিয়া যান । কান্ত চেচাইতে গিয়াই কিন্তু নিজের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে, চীৎকারের ফঁাকে ফাকে অনেকখানি দুধই তাহার পেটের ভিতর চলিয়া যায়। প্রতাপ উঠিয়া পড়িল । বউদিদি চা আনিয়া দিয়া, ফিশ ফিশ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাল বড়লোকের বাড়ি কেমন নেমস্তন্ন খেলে, ঠাকুরপো ?” প্রতাপ বলিল, “মৰ্ম্ম নয়, তবে চাকরবাকর কি জার তোমার মত রাখতে পারে ?” বউদিদি মুচকি হাসিয়া রাজুর খবরের কাগজের বাতিক আছে। .T. :: - - .