পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাতৃ-খণ 는 যামিনী আয়াকে মৃদু কণ্ঠে কি একটা বলিয়া, নিজের ,'র চলিয়া গেল। আয়াও তাহার সঙ্গে গেল। প্রতাপ যাবার চেয়ারে বসিয় নৃপেন্দ্রবাবুর দেওয়া কাগজখান। পকেট হইতে বাহির করিয়া পড়িতে লাগিল । তারও ঘট-চার তাহাকে জাগিয়া থাকিতে হইবে । একথাম বই কি মাসিক পত্র থাকিলে মন হইত না, মাঝে মাঝে উণণইয়া দেখা যাইত । মিহিরের ঘরের দরজ খোলা, সেখানে গিয়া খোজ করা যায়, প্ৰঙিয়া যাইবার আশঙ্কা আছে । আয় বাহির হইয়া আসিল, তাহার হাতে ধূমায়িত পযুfল| বিস্মিত প্রতাপের সামনে পেয়ালা পিরীচ ন মাষ্টয়া রাখিয়া সে বলিল, “মিস বাবা কফি ভেজ দিয়া” বলিয়। সে ফিরিয়া গুহিণীর ঘরে গিয়া প্রবেশ করিল। প্রতাপের তখনকার মনোভাব অবর্ণনীয়। স্বয়ং ইন্মানী অমৃতের পাত্রহস্তে আবিভূতি হইলে ও সে এতখানি অভিভূত হইত কিনা সন্দেহ । পেয়ালাটি ”শ করিতেও তাহার মন উঠিতেছিল না, চিরকাল যদি উই রাখা যাইত, তাহ হইলে প্রতাপ উহা সযত্নে লুকাইয়া ংগিত । কিন্তু তাহাও হইবার নয়। যামিনীর দানের অমৰ্য্যাদা করা তাহার পক্ষে সম্ভব নয়, সুতরাং কফি খাষ্টতে একেবারেই অনভ্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও সে পেয়ালাটি তুলিয়া আস্তে আস্তে চুমুক দিতে লাগিল। কফি তাহার মৃথে তিক্ত ও বিস্বাদ লাগিতে লাগিল, কিন্তু নিজের কাছেও নিজে সে তাহা স্বীকার করিল না। ঘামিনী তাহার পথ; এতটুকুও যে স্মরণ করিয়াছে, তাহার কষ্ট লাঘব পরিবার জন্য নিজে পরিশ্রম করিয়া কফি প্রস্তুত করিয়া পঠাইয়াছে, এই চিন্তাই তাহার সমস্ত দেহমনকে যেন অমুতে অভিষিক্ত করিয়া দিতে লাগিল। কি শুভক্ষণেই স আজ রাত্রি জাগিতে আসিয়াছিল । কফির পেয়ালাটি শেষ করিতেই তাহার আধ ঘণ্টা কাটিয়া গেল। এখনও মন উহাতে কাহার চম্পকাল্গুলির স্বস্ত্ৰাণ লাগিয়া আছে। প্রতাপের ইচ্ছা করিতে লাগিল, উহা বুকপকেটে লুকাইয়৷ লুইয়া চলিয়া যায়। কিন্তু জগতে কটা ইচ্ছাই বা পূর্ণ হয় ? অগত্য পেয়ালাটা নামাইয়া টেবিলেই রাখিয়া দিতে * ॐल । তবে নৃপেন্দ্রবাবুর ঘুম বাকি রাত্রিটুক আয় ভিন্ন আর কাহারও সাড়াশক পাওয়া গেল না । সাড়ে পাচট আন্দাজ সময় নৃপেন্দ্রবাবু সশব্দে গলা পরিষ্কার করিতে করিতে বাহির হইয়। আসিলেন। প্রতাপকে উঠিয় দাড়াইতে দেখিয়া বলিলেন, "বসুন, বস্থন, সারারাতটা দ ঠায় বসেই কাটিয়ে দিয়েছেন বোধ তাড়াতাড়ি একট চা-ট করে দিক ?” প্রতাপ বলিল, “ত্যাঞ্জে ন', আমি বাড়িই ঘাই, একটু গড়াগড়ি দিয়ে উঠে তারপর চা-টা খাব । এত সকালে চা কোনদিনই ত খাই না।” নৃপেন্দ্রবাবুকে আর ভদ্রতা করিবার অবসর না দিয়৷ সে তাড়াতাড়ি সিড়ি দিয়া নামিয়া পড়িল। যামিনীর থরের দিকে একবার চাহিয়া দেখিল, দ্বার তথন ও বন্ধ । খবরের কাগজ হাতে প্রতাপের ধ্যান আর কতক্ষণ চলিত, তাহার ঠিকানা নাই, কিন্তু রাজু কাগজপানীয় একটান দিয় তাহাকে সচেতন করিয়া দিল । বলিল, “একটা কলমের দিকে ঠিক আধঘণ্ট তাকিয়ে আছ যে দেখি ? বসে বসেই ঘুমচ্ছ নাকি ?" প্রতাপ চমকিয়া উঠিয়া কাগজখানা রাজুর হাতে ছাড়িয়৷ দিল । বলিল, “সারারাত জেগে এখনও মাথাট ভার হয়ে আছে, কিছু কি আর চোখে দেখতে পাচ্ছি ? যাই, সকাল সকাল স্নানটা করে নিই।” রাজু বলিল, "এই ঠাণ্ডায় স্নান ? তোমার মাথাই খারাপ দেখছি। নিতান্তই যদি স্নান কর, তাহলে বউদিকে বল একটু গরম জল করে দিতে।" বউদিদির উপর আতখানি আবদার করিবার ভরসা প্রতাপের হইল না, সে নীচে নামিয়া গিয়া চৌবাচ্চার ঠাণ্ড কন্‌কনে জলই টিনে করিয়া মাথায় ঢালিতে লাগিল । ঠাণ্ডায় তাহার মস্তিষ্কট যেন জমিয়া আসিতে লাগিল, কিন্তু মাথার ভারটা যেন কিছু কমিয়া গেল, তন্দ্রার ঘোরটাও ছুটয় গেল । স্নান করিয়া বাহিরে আসিয়াই পড়িল পিসিমার সামনে। তিনি বিশ্বিত হইয়া বলিলেন, “ও কিরে এই শীতের দিনে এত ভোরে চান করলি (মহুখ করবে যে ?” । .*. হয় ? আপনাকে