পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬ ు? . so ફેંકરારો છે S99డు সম্মুথেই গ্রাম দেখা যাইতেছে । চলিতে চলিতে ক্রমে তাহা স্পষ্ট দেখা যাইতে লাগিল। কিন্তু স্পষ্টতর হইবার পূৰ্ব্বেই সন্ধ্যার ছায়ায় মিশিয়া মিলাইয়া গেল । ফুটিয়া রহিল কেবল গ্রামের দু-একটি আলে। 2 অন্ধকারের গায়ে গায়ে খদ্যোতের দল ভাসিয়া বেড়াইতেছে । একখানি বাড়ির আঙিনার মাঝখানে আগুন দেখা গেল। গৃহস্থের ছেলে-মেয়েগুলি তাহার চারিধার ঘিরিয়া কলরোল তুলিয়াছে। গোয়াল হইতে সাজালের ধোয়ার গন্ধ নাকে লাগিতেছে। কানাই পুষ্করিণীর তীর দিয়া চলিতে চলিতে জলে ছলাং করিয়া শব্দ হইল। সে জলের দিকে তাকাইয়া দেখে, ঢেউয়ে ঢেউয়ে তারার ছায়া দুলিতেছে যেন নানা রঙের উজ্জল ফুলের রাশি। সম্মুখের ঘরখানির পরেই তাহার ঘর। পার হইতে হইতে হাক দিল, “সৈরভি ! ও সুরে৷ ” বহুদিনের পরিচিত কণ্ঠ । “সৈরভী” গোয়াল হইতে হাম্ব রবে সাড়া দিল । লক্ষ্মী তখন আঙিনার এক প্রাস্তে প্রদীপ রাখিয়া মাথ৷ কুটিতেছে, প্রবাসী কানাইয়ের জন্য, “ঠাকুর তাকে ভাল রেখে।” কিন্তু কানাইয়ের স্বরটা কানে লাগিতেই প্রার্থনার মাঝে চমকাইয়া উঠিল। কানাই আবার ডাকিল, “সৈরভি !” না ভুল নয়। সত্যই কানাই আসিয়াছে। কিন্তু এমন হঠাৎ যে ? গোয়ালের সম্মুখ দিয়াই ভিতর-বাহিরের পথ। লক্ষ্মী ছুটিয়া গিয়া ঘরের বারান্দা হইতে কেরোসিনের কুপাট হাতে করিয়া গোয়ালের সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল । মাথার ঘোমটাটি একটু দীর্ঘ। তাহার ফাকে স্বন্দর মুখখানির নিম্নভাগ ও স্নিগ্ধ-উজ্জল চোখদু’টির আধথান দেখা যাইতেছে । সৈরভাও ঘাড় ফিরাইয়া দাড়াইয়াছিল ; আলোয় তাহার চোখ দু'টি চকু চকু করিতে লাগিল । বহিরাঙ্গনে পা দিয়াই কানাই দেখে সম্মুখে আলো হাতে লক্ষ্মী দাড়াইয়। লক্ষ্মী কয়েক পা আগাইয়া আসিয়া হাতের আলোটি আঙিনায় রাখিয়া গলবস্ত্রে কানাইয়ের পায়ের ধূলা লইতে গেলে কানাই একপাশে সরিয়া দাড়াইল। কহিল, “কি যে কর। চল, ঘরে চল—” লক্ষ্মীর হাতখানি তবুও তাহার পা-দু’টি স্পর্শ করিয়৷ মাথায় উঠিল। তারপর হাত দুখানি বাড়াইয়া দিয়া কহিল, “দাও, বোঝাটা আমার হাতে।” “এত ভারী তুমি টানতে পারবে ন—কেমন আছ লক্ষ্মি ?” “ভালই। তুমি কেমন আছ ?” “ভাল ।” “হঠাৎ এলে যে—?” “ছুটি পেলাম।” আলো হাতে লক্ষ্মী আগে আগে চলিল। গোয়ালে “সৈরভী” ছট্‌ফট্‌ করিতেছে। কানাই হাসিতে হাসিতে কহিল, “আসছি রে, আসছি।” ভিতরে গিয়া ঘরের বরান্দায় উঠিতে উঠিতে লক্ষ্মী ডাকিল, “ওরে ধন, ধতু-–” রাখালের নব নামকরণে কানাই কৌতুক অনুভব করিল। কহিল, “মধে! আবার ধনু হ’ল কবে থেকে ?” লক্ষ্মী কানাইয়ের প্রশ্নের উত্তর দিল না ; কহিল, “কই রে ? এলি ?” ধন ঘরের বাহির হইয়া আসিল ৷ কৃশ ছেলেটি, ফসর্ণ রং, বৎসর আষ্টেক বয়স। মুখখানি অতি স্নান । কানাই তাহার দিকে তাকাইয়। অবাকু ধনাও তাহাকে দেখিয়া দরজার কাছটতে চুপ করিয়া দাড়াইল । মাদুরখানা বারান্দায় বিছাইতে বিছাইতে লক্ষ্মী কহিল, g"হাদা ছেলে, দোর ধরে দাড়িয়ে রইলে কেন ? মেসোর পায়ের ধূলো নাও—” কানাইয়ের বিস্ময় আরও বাড়িয়া উঠিল। মেলুy; লক্ষ্মীর কোনো ভগ্নী ছিল বলিয়া ত এতদিন তাহার জান ছিল না। তবুও ভাবিল, হয়ত লক্ষ্মীর কোন দুরসম্পৰ্কীয় ভগ্নীর ছেলে ; মাছরের উপর বসিতে বসিতে ধনাকে অভয় দিয়া ডাকিল, “আয় এদিকে । শোন, ভয় কি রে?” - ধনা এক পা, এক পা করিয়া সরিয়া আসিয়া কানাইয়ের পায়ের কাছে টিপ করিয়া প্রণাম করিল। কানাই কহিল, “এ তোমার কোন বোনের ছেলে গো ?” “ওর কাছেই জিজ্ঞেস কর, কার ছেলে ও—” ... ...