পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭૭ હૈં মূৰ্ত্তির স্বমুখে এসে দাড়ায় । ধুতুচিট। সেখানে নামিয়ে রেখে ও দু-হাত এক ক’রে চোখ বুজে গণেশের স্বমুখে দাড়িয়ে ধান করে । তারপর এসে চৌকিতে বসে এক ছিলিম তামাক খায়। এই সময়টা ওর একটু তাড়-হুড়োয় কাটে। সন্ধ্যার সময়ে কাজ থেকে ঘরে ফেরবার পথে সকলেই কেনা-কাট ক’রে নিয়ে ধায় তাই । মাত্র ঘণ্টখানেক, তারপর সব ঠাণ্ডা। মৃদী শ্রাস্ত হয়ে পড়ে । জিনিষ ওজন করা, পয়সার হিসেব, ধারের হিসেব লেখা একহাতে সব ক’রে উঠতে ওর টম বেরিয়ে আসে। উঠে ঘটির জলে মুখ হতে পা ধুয়ে, হাড়ির ঢাক খুলে খানকয়েক বাতাসা আলগোছা মুখে ফেলে দেয় । তারপর একঘটি জল পান করে তবে যেন বুকে জোর পায় । দু-টুকরে। কাট। সুপারি গামলা থেকে তুলে মুখে দিয়ে তামাক সাজতে বসে। তামাকের হাতটা ধুতে-না-পুতেই সব একে একে আসতে আরম্ভ করে ; এ-পাড়া ও-পাড়া থেকে নানা সঙ্গীর সব এই সময়টুকু একটু গল্পগাছা করবার জন্তে মুদী-খুড়োর বা 'পের পাশে এসে বসে। দিনাস্তে পাচজনের সঙ্গে একটু কথাবার্তা ন৷ কইতে পেলে মুদীরও প্রাণ পাচে না । তাই এই সময়ের তামাকের খরচট অন্যায় ব’লে ও কোন দিন মনে করে না। খরচও খুব বেশী নয়। দা-কাট। তামাক ও নিজে হাতেই তৈরি করে নেয়। এই সময়টা ওদের কোন দিন গীতাপাঠ হয়, নইলে রামায়ণ মহাভারত, কি বটতলার উপন্যাস, আর তা নইলে দেশ-বিদেশের গল্প । ওদের মধ্যে মুদীই হ’ল জ্ঞানে বিদ্যায় বুদ্ধিতে এবং অভিজ্ঞতায় সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ; কাজেই সকলে বেদব ক্যের মত শ্রদ্ধা ক’রে শোনে । গীত। নিয়ে মুদী অনেক ভেবেছে,—এই ভাবে ও তার ব্যাখ্যা করে ।-- শ্ৰীকৃষ্ণ ভগবান, না সঞ্জয় ? ওরা বলে,--শ্ৰীকৃষ্ণু । কিন্তু মুনীর কাছে ধমক খেয়ে জিজ্ঞেস করে,— তবে কে? - মুদী বলে,-এই যে, তোর মধ্যে দিয়ে ভগবান কাজ করাচ্ছেন ত ? নানা রকম কাজ,-রায়েদের কাদি স্বন্ধ ওর কথা ఏకD5Dశు কলাগাছগুলো তুই সেবারে কাটলি ত ? তারপর মিথ্যে সাক্ষ্যি দিয়ে গেলি, জেলে । তারপর দেখ, চাষআবাদ করচিস, ভাল মাতুষ হয়ে গেছিস, বিয়ে-থ করেছিস—দিনরাত্তির হে হরি হে হরি করছিস্ ত ?— কিন্তু এসব এতদিন ধ’রে তোকে সেই জগদীশ্বর করাচ্ছেন, তা বুঝতে পারিস্ ? তেমনি সঞ্চয় হ’লেন দেবতা । তিনি শ্ৰীকৃষ্ণকে দিয়ে দেখ না যুদ্ধ করিয়ে ছারখার করিয়ে দিলেন, আবার ষোল হাজার গোপিনীর সঙ্গে বিয়ে পৰ্য্যস্ত দিয়ে দিলেন । অথচ দেখ, সেই শ্রীকৃষ্ণই কিনা সমস্ত গীত বইখানা ভৰ্বি ক’রে কেবল, হে সঞ্জয়, হে সঞ্জয় ক’রেই গেলেন। মিলিয়ে দেখ, তুই ঠিক তেমনি ক’রে হে হরি, হে মধুস্থদন করিস কি না ! ভাল ক’রে মন দিয়ে মিলিয়ে দেখ,—তোর যত কীৰ্ত্তিকলাপ, সবই আমরা জানি ত, কিন্তু যে-ভগবানকে তুই ডাকি তার কোন খবর তুই জেনেচিম ? তা কেউ পারে না ! ঠিক তেমনি, শ্ৰীকৃষ্ণের যত কিছু লীলা সবই আমরা জানি ত, কিন্তু সঞ্জয়ের কিছু জানি কি ? বল তোরা ! ওরা সবাই সভয়ে মাথা নেড়ে বলে,—ণা জানিনে । মুদী আত্মগৰ্ব্বে স্ফীত হয়ে বলে,—কি ক’রে আর জানবি বল,—চিরট। কালই মুক্‌ধু হয়ে রইলি বইত নয়! ওরা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করে, শ্ৰীকৃষ্ণ যদি ঠাকুর ন৷ হবে তাহ’লে সবাই পূজে ক’রে কেন ? মুদী বলে, নয় কে বললে ? ঠাকুর বইকি। উদ্দেশ্যে একটা নমস্কার ক’রে বলে,—কিন্তু ছোট ঠাকুর, বড় হলেন সঞ্জয় । কেষ্টোর পূজো আমার শেষ হয়ে গেছে, এখন আমি সঞ্জয়ের পূজো করি । তেত্রিশ কোটি দেবতা, সকলকেই ত একে একে মানতে হবে, তোদের মত শুধু দু-দশ ঠাকুর আঁকড়ে সারা জীবনট পড়ে থাকলে ত চলবে না —এটাকে মুীর একটা গবেষণা বলা যেতে পারে । যে-দিন রামায়ণ পড়া হয় সে ত মুদীর পক্ষে একটা শুভদিন। রামায়ণ পড়তে পড়তে সমুত্রের এবং সেতুবন্ধের জন্যে যে-সব পাথর এখনও সেখানে জমা করা পড়ে আছে তার বর্ণনা দেয়। e. স্বচক্ষে দেখে এসেচে কি না – ছেলেবেলায় ও একবার: