পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૧ ના S9లిఖి, জুঢ়বে, রুটি জুটুবে না। ডিম, কল। আর চা দিতে পারব। আম্বন দয়া ক’রে ।” অজয় প্রচণ্ড আপত্তি তুলিল, কিন্তু যুবক কিছুতেই তাহাকে ছাড়িয়া দিল না, কহিল, “শুনুন, আমাকে একেবারে অপরিচিত ভাববেন না। আপনি অজয়বাবু ত ? স্কটিশচার্চ থেকে আমরা একসঙ্গে ইন্টারমিডিয়েট দিয়েছিলাম, আমি তারপর সিটিতে চলে যাই । ইউনিভার্সিটি ইন্‌ষ্টিটিউটে আপনার গান অনেকবার আমি শুনেছি । আপনি আমাকে চেনেন না, কিন্তু আমি আপনাকে বিলক্ষণ চিনি ।" আপনাকে বিলক্ষণ চিনি । অজয়ের মনে আবার কোন অলক্ষ্য স্বত্র ধরিয়া মাধুর্য্যের স্পর্শ লাগিয়া গেল । নিবিড় বন্যস্তরাল হইতে বেী-কথা-কও ডাকিতেছে, পাশে রৌদ্রপ্লাবিত তৃণতটে যেন অযুত মরকতমণির ছড়াছড়ি । দুইখানি ক্ষীণ হস্তের নিপুণ একটি কবরী-রচনা মনে পড়িয়া তাহার বুক দুর দুরু করিয়া কঁাপিতে লাগিল। যুবককে পূৰ্ব্বে কোথাও দেখিয়াছে কিনা মনে আনিবার কোনও চেষ্টা সে করিল না, দেখে নাই কিন্তু যুবক তাহাকে চেনে ইহা ভাবিতেই তাহার ভাল লাগিল । তাহার আমন্ত্রণকে ইহার পর সে আর প্রত্যাখ্যান করিল না । দীঘির পাড় ঘুরিয়া গিয়া একটি ছোট মাঠ । তারপর বেত এবং বঁাশ-ঝাড়ের মধ্য দিয়া শীতস্তব্ধ ছায়াচ্ছন্ন পথ । একটা ভাঙা মন্দির বায়ে রাখিয়া আরও একটু অগ্রসর হইয়া গিয়া ঘনবিন্যস্ত সুপারিবনের মধ্যে কয়েকটি পরিপাটি খড়ে-ছাওয়া ঘরের সমষ্টি। যুবক কহিল, “এই আমাদের বাড়ী !” বাহিরে আটচালা প্রকাণ্ড চতুষ্পাঠী। ভিতরের সরঞ্জাম দেখিয়া বুঝা গেল, বৈঠকখানা হিসাবেই সেটির এখন বেশী ব্যবহার। চতুষ্পাঠীর পর সদরের উঠান। একপাশে ঠাকুরঘর। অজয়কে লইয়া বিপরীত দিকের ঘরটিতে ঢুকিতে গিয়া যুবক কহিল, "চলুন, আগে বাবার সঙ্গে আপনার পরিচয় ক’রে দিই।” কিন্তু ঠাকুরঘরের দরজার নীচে উঠানে আসিয়া গাড়াইয়াই অজয়ের ইচ্ছা করিতে লাগিল, যেদিকে দুচোখ যায় ছুটিয়া পলায়ন করে। যুবকের পিতা সেই ব্রাহ্মণ যাহাকে একটু আগে নিজের স্পৰ্দ্ধিত নাগরিক অসহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়া সে পথের মাঝখানে স্তস্থিত করিয়া রাখিয়া গিয়াছে । যুবক ডাকিল, “বাবা!” ভিতর হইতে তৎক্ষণাৎ উত্তর আসিল, “কি, ভদ্র ?" “তুমি একটুখানি বাইরে এস আমার এই বন্ধুf তোমায় প্রণাম করবেন।” প্রৌঢ় ত্রস্তে বাহির হইয়৷ আসিলেন, অজয়কে দেখিয়াই কহিলেন, “এস, বাবা এস । তোমাকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল তুমি স্বভদ্রের পরিচিত কেউ হবে । ওকেই তুমি খুঁজছিলে ত?” লজ্জায় ধিক্কারে অজয়ের মাথার মধ্যেটা তখন ঝি, ঝিম্ করিতেছিল, তাড়াতাড়ি প্রৌঢ়ের পায়ের কাছে - সেটাকে নামাইয়া সে রক্ষা পাইল । প্রণাম সারিয়া উঠিয়৷ দেখিল একটি স্নিগ্ধ সৌজন্যের প্রসন্ন অমায়িক হাসিতে র্তাহার মুখটি প্রোজ্জল হইয়া উঠিয়াছে। কিন্তু উঠান অতিক্রম করিয়া সুভদ্রের ঘরের দিকে যাইতে যাইতে তাহার মনে পড়িল, ব্রাহ্মণ পূজা শেষ না-করিয়াই বাহির হইয়৷ আসিয়াছিলেন, তাড়াতাড়িতে জুতা নী-ছাড়িয়াই সে তাহার চরণস্পর্শ করিয়া তাহাকে প্রণাম করিয়াছে। পশ্চাতে চাহিয়া দেখিল, ব্রাহ্মণ ফিরিয়া ঠাকুরঘরে ঢোকেন নাই, স্মিতহাস্তে মুখ ভরিয়া বারান্দ হইতে স্বানের ঘটিটি উঠাইয়া লইতেছেন। অজয়কে নিজের ঘরে খাটের উপর বসাইয়া সুভদ্র চায়ের ব্যবস্থা করিতে চলিয়া গেল। ওষুদ্রগুলিকেও সব যথাস্থানে পৌছিয়া দেওয়া চাই। বাড়ী বাড়ী গিয়৷ নিজে হাতে করিয়া দিয়া আসিবে ইহাই স্থির ছিল, কিন্তু অতিথি জুটিয়া যাওয়াতে চাকরদের শরণাপন্ন হইতে হইল । অজয় দেখিল, সুভদ্রের ঘরটি ঠাকুরঘরেরই মত পরিপাট এবং পরিচ্ছন্ন। ধবধবে বিছানাটিতে কেহ যে কখনও শুইয়াছে এমন মনে হয় না। বেড়ার গায়ে ঝুলান একটি মাঝারি-গোছের আয়নার সামনে একটুকরা শাটনে ঢাকা একটি কাঠের তাকের উপর মুভত্রের দাড়ি কামাইবার সরঞ্জাম, নখ কাটিবার যন্ত্র, চুলের তেল, চিরী: 减