পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२ S99āు হয়। উপনিষদে পুনঃপুন দেখা যাইবে যেখানেই স্মৃষ্টির কথা, সেইখানেই তাহার পূৰ্ব্বে তপস্যার কথা । বিন৷ তপস্যায় কৃষ্টি, অর্থাৎ কল্যাণ হৃষ্টি, একথা উপনিষদে পাওয়া যাইবে না। সেইজন্যই দৈবী সৃষ্টি আসুরী হষ্টির মত সুইজ নহে ] এই দুই শুষ্টির অন্তসারে স্রষ্টাও দুই প্রকার ; প্রেয়স্কাম ও শ্রেয়স্কাম । আস্থর সৃষ্টির কৰ্ত্ত প্রেয়স্কাম, তিনি তাহার ৮ষ্টির দ্বার প্রথমত নিজের, তারপর অনোর ইন্দ্রিয়প্রীতিমাত্র চাহেন । তাঙ্গার পর কতদূর কি দেখিবার আছে, কি ন-আছে, ঐ পতির পরিণাম কি, তিনি তাহ। তলাইয়। দেখিতে পারেন না। কিন্তু শ্রেয়স্কাম স্রষ্ট অন্তরূপ । তিনি নিজের সৃষ্টির দ্বারা নিজের ও অন্তের, সকলেরই শ্ৰেয়, অর্থাং কল্যাণ কামনা করেন ; তিনি এমন একটি বস্তুকে পাইতে ইচ্ছা করেন শাহ আশ্রয় করিয়া কেহ বস্তুত বৰ্ত্তিয়! থাকিতে পারে, তাহার সত্তটি থাকে ; এবং তিনি জানেল, যদি তাহ হয় তবে যথার্থ পাতি বা আনন্দ আপন হইতেই আসিয় পড়ে—যদিও সেই পতি বা আনন্দের আকারট। অন্য হয় । সৃষ্টিশক্তি ঠিক সমান থাকিলেও, দেখা যায়, দুই স্রষ্টার ঠিক একই বস্তুর সৃষ্টিতে বহু ভেদ হইয় পড়ে । ইহার একমাত্র কারণ এই যে, যদিও উভয় স্রষ্টারই স্থষ্টির বাহ অংশ নিৰ্ম্মাণে শক্তি সমান, তথাপি তাহার আস্তর অংশের জ্ঞানে তাহার। উভয়ে সমান নহেন । চিত্রের রেখাঙ্কন বা বর্ণবিদ্যাস প্রভৃতিতে দুই চিত্রকরই সমান-সমান হইতে পারেন, কিন্তু চিত্রের ভাব ও কল্পনায় উভয়ের মধ্যে বহু থাকে। তাই চিত্ৰণীয় বস্তু এক হইলেও দুই চিত্রকরের দুই চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়। দেখা যায়, যে বস্তু সামাজিকের চক্ষুতে স্বভাবত লজ্জা ব। জুগুপ্তার উদ্রেক করে, চিত্রকরের তুলিকার টানে তাহাও তাহার কোথায় উড়িয়া যায়। নারীর নগ্নমুৰ্বির দিকে তাকাইতে পারা যায় না, কিন্তু গ্ৰীক ভাস্করগণের নিৰ্ম্মিত এমন অনেক ঐরুপ নারীমূর্তি দেখিতে পাওয়া যায়, যাহার নগ্নত নগ্নতা বলিয়াই মনে হয় না। বিশ্বভারতীর বিদ্যাভবনের বারাণ্ডায় আমার শ্রদ্ধেয় বন্ধু ও সহকৰ্ম্ম শ্ৰীযুক্ত ੇਸ਼ਾਂਸ਼ বস্ব মহাশয়ের অধ্যক্ষতায় বিভিন্ন দেশের ভেদ এক-একথানি চিত্রের প্রতিলিপি অঙ্কিত হইয়াছে ! তাহাদের মধ্যে একখানি মিশর দেশের । এই চিত্রের ভিতরে বাদ্যযন্ত্র হস্তে তিনটি নারীমূৰ্ত্তি অঙ্কিত। মধ্যকার মূৰ্ত্তিটি একেবারে নগ্ন । কিন্তু ঐ নগ্ন মূৰ্ত্তিটি নগ্ন বলিয়। মোটেই মনে হয় না ; ইহ দেখিয়া বিন্দুমাত্র সঙ্কোচ বা লজ্জার উদ্রেক হয় না। চিত্রকরের কি অদ্ভুত প্রতিভা, কি অদ্ভূত কুশলতা ! অপর পক্ষে, কোনো কোনো চিত্রকরের হস্তে যাহা প্রকৃতি-সুন্দর তাহাও নিতান্ত বিকৃত হইয়। পড়ে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, তাহার কারণ সব সময়ে ইহা নয় যে, এই চিত্রকরের কেমন করিয়া তুলি ধরিতে হয়, কেমন করিয়া রং দিতে হয়, ই ত্যাদি জানেন না ; এ বিষয়ে র্তাহারা খুবই দক্ষ হইতে পারেন, কিন্তু তাহাদের ক্রটি এই যে, তাহার অঙ্কনীয় বস্তুর কেবল, দেহই দেখিতে পান, তাদের প্রাণের কোনই সন্ধান করিতে পারেন না । বলাই বাহুল্য, সাহিত্যের প্রয়োজন আছে, খুবই আছে ; ঠিক খাদ্যের মত, খাদ্য না পাইলে আমাদের চলে ন। কিন্তু খাদ্য কি ? যাহ থাইতে ভাল লাগে তাহাই থাদ্য নহে । কারণ, এমন বহু সুস্বাদু দ্রব্য আছে, যাহা থাইলে উপকার তে হয়ই না, বরং বিশেষ অপকারই হয় । তাহাই খাদ্য, যাহা শরীরের নান। কাজকর্মে ও শ্রমে স্বভাবতই যে ক্ষয় হয় তাহা দূর করিয়া ঐ ক্ষতির পূরণ করে, তাহার পুষ্টিসাধন করে, যদি শরীরের বৃদ্ধির বয়স থাকে, তবে সেই বৃদ্ধিরও সাধন করে, আর তাহ দ্বারা শরীর ও মন উভয়েরই স্বাস্থ্য বিধান করে। এরূপ খাদ্য যে স্থস্বাদু হয় না তাহ কে বলিবেন ? কিন্তু খাদ্যের ঐ তত্ত্বটি ভুলিয়া গিয়া যিনি কেবল রসনার তৃপ্তিকেই খাদ্যখাদ্য নির্ণয়ের উপায় মনে করেন, তাহার যে নিতান্ত ভুল করা হয় তাহ ন বলিলেও চলে। অনেকগুলি উত্তেজক মশল প্রচুর পরিমাণে দিলেও রান্না ভাল হয় না, আবার সেরূপ না করিলেও তাহা ভাল হয় । যে পাক করে তাহারই দক্ষতার উপর ইহা অনেকটা নির্ভর করে । এইরূপই দক্ষ চিত্রকর অত্যন্ত্র অত্যাবশ্বক রেখাপাতে যেচিত্র অঙ্কন করিতে পারেন, বা সুকবি কতিপয় মাত্র শব্দের যোজনায় যে-কাব্য রচনা করিতে পারেন কুচিত্রকর বা কুকবি বহু রেখাপাতেও বা বহু শাসন্নিবেশেও সেইরূপ