পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ বিবিধ প্রসঙ্গ—বঙ্গের প্রতি অবিচারের উপর অপমান ২৯৭ শুধু যে স্বদেশী জিনিষ দেখাইবার চেষ্ট হইয়াছে তাহ। নহে। কতকগুলি মাটির মূর্কুিসমষ্টি কালের অনুক্রমে পরে পরে বর্ণনাসমেত সাজাইয়া ভারতবর্ষে হিন্দুত্বের রক্ষা ও বিকাশ দেখাইবার চেষ্ট হইয়াছে। যাহারা এই কাজটির পরিচালক র্তাহাদের কোন কোন ঐতিহাসিক মতের সহিত অনেক বিশেষজ্ঞের মত মিলিবে না। কিন্তু এরূপ চেষ্টা ব্যর্থ নহে, এবং ভারতবর্ষের ইতিহাসের কোন কোন যুগের কেন্দ্রগত সত্য পরিচালকগণ ঠিক ধরিয়াছেন মনে হয়। গত ১৩৩৮ সালের প্রধান প্রধান ঘটনা ও উক্তি তারিখ অনুসারে এবং চিত্র ও বর্ণনা সহকারে যে দেখান হইয়াছে, তাহাও বেশ হইয়াছে। কোন ব্যক্তিরই ঘটনা-নিৰ্ব্বাচন বা নিৰ্বাচিত প্রত্যেক ঘটনা সম্বন্ধে তাহার মন্তব্য অপর সাধারণের মনঃপূত হইবে আশা করা উচিত নয়। এই জন্য মোটের উপর জিনিষটি কিরূপ হইয়াছে দর্শকদিগকে তাহাই বিবেচনা করিয়া উপভোগ করিতে ও উপকৃত হইতে হইবে। হুগলী জেলার সাহিত্যসংগ্রহ আর একটি উপদেশপ্রদ ও দর্শনীয় জিনিষ । সমালোচনার কথা আমরা কেবল একটি বলিব ! পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকের অভ্রান্ত নহেন। র্তাহীদের অনেকের মনে ভারতবর্ষ সম্বন্ধে—সমুদয় প্রাচ্য দেশ সম্বন্ধে—কোন কোন প্রতিকুল ভাব ও সংস্কার অাছে। কিন্তু আমাদেরও, অন্ত সব জাতির মত, নিজের দেশ সম্বন্ধে পক্ষপাতিত্ব আছে। প্রতিকূল ভাব ও পক্ষপাতিত্ব উভয়ই বর্জন করিয়া কোন দেশের ইতিহাস বা অন্যবিধ কোন বিবরণপুস্তক লেখা অতি কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজ পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকেরা করিতে পারিয়াছেন, বলিতেছি না। কিন্তু একথা অবশ্যম্বীকাৰ্য্য, যে, তাহারা খুব বেশী পরিশ্রম করেন, যাহা আমাদের মধ্যে খুব কম লোকেই করিয়া থাকেন। ইহাও স্বীকাৰ্য্য, যে, আমরা প্রাচীন ভারতবর্ষ সম্বন্ধে যত জিনিষের বড়াই করি, তাহার অধিকাংশ পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের আবিষ্কার। অতএব তাহাদের সমালোচনা করিতে হইলে পরিশ্রম করিয়া তদনন্তর শ্রদ্ধা ও গাম্ভীর্ষ্যের সহিত তাহা কবা দরকার । তাহাদিগকে جيا«--سـسمي8% তুড়ি দিয়া উড়াইয়া দেওয়া চলিবে না। প্ৰবৰ্ত্তক-সংঘের মেলা ও প্রদর্শনীর বর্ণনা উপলক্ষ্যে যিনি একটি মুদ্রিত অভিভাষণ পাঠ করেন, তাহার স্বদেশপ্রীতি প্রশংসনীয়, কিন্তু তাহার পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের প্রতি কটাক্ষে ও তাহার ভঙ্গীতে আমরা প্রীত হই নাই। পাশ্চাত্য লেখকদিগের নিকট আমাদের ঋণের একটি দৃষ্টান্ত উক্ত অভিভাষণটি হইতেই দিতেছি । লেখক অহঙ্কার করেন, যে মোহেনজো-দাড়ো হইতে প্রমাণ হইয়াছে, শৈব- . ধৰ্ম্ম পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ধৰ্ম্ম । সম্ভবতঃ ইহা লেখকের আবিষ্কার নহে ; মার্শাল সাহেব তাহার তিন ভলুমে সম্পূর্ণ মোহেন্‌জা-দাড়ে পুস্তকের প্রথম ভলুমের উপক্রমণিকার ৬ ও ৭ পৃষ্ঠায় ইহা লিথিয়াছেন এবং তাহ হইতে এপ্রিল মাসের মডার্ণ রিভিউতে (৩৬৭ পৃষ্ঠায় ) ইহা উদ্ধৃত হইয়াছে । সম্ভবতঃ লেখক ইহা ঐ পত্রিকায় দেখিয়াছেন। অভিভাষণটির সমালোচনা করা আমাদের উদেশ্ববহির্ভূত, নতুবা আরও অনেক কথা বলা যাইত। প্রবর্তক-সংঘ যে খদ্দর প্রস্তুত করেন, তাহার সম্পর্কে অনেক মুসলমান কারিগরের অন্নসংস্থান হয়। বাঙালী মুসলমানেরা ইহা যেন মনে রাখেন। বঙ্গের প্রতি অবিচারের উপর অপমান ভারতবর্ষে যতগুলি প্রদেশ আছে, বাংলা দেশ হইতে তাহার কোনটির চেয়ে কম সরকারী আয় হয় না। অথচ, বাংলা দেশের ৫ কোটি লোকের জন্য বাংলা গবন্মেণ্টকে যত টাকা দেওয়া হয়, বোম্বাই মাজাজ পঞ্জাব প্রভৃতিকে তাহাদের লোকসংখ্যা বঙ্গের চেয়ে কম হওয়া সত্বেও, বেশী টাকা দেওয়া হয়। একটা কৌশল দ্বারা বাংলা দেশকে বঞ্চিত করা হইয়া আসিতেছে। সরকারী আয়ের যে-যে উপায়গুলি হইতে বেশী বেশী ও ক্ৰমবৰ্দ্ধনশীল অর্থ আসে, সেগুলি ভারত-গবন্মেণ্ট নিজের বলিয়া চিহ্নিত করিয়াছেন ; যেমন পাটের শুষ্ক, ইন্‌কাম্ ট্যাক্স, বাণিজ্য-শুদ্ধ (customs) ইত্যাদি। ইহাতে যে । বাংলা দেশের প্রতি অবিচার হইয়া জালিতেছে, বাংলা দেশের কৃষি শিল্প শ্বাস্থ্য শিক্ষা প্রভৃতির উন্নতি 够