পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

જીર8 " SSD9āు সুর জেগে উঠছে সে আবৰ্ত্তনে ! এ স্বর তিমিরময় স্তব্ধতার কষ্টি, তারই আলোড়নে উৎসারিত। এ শব্দকে স্তব্ধতা চায় না, এ ধ্বনিকে নীরব করতে চায়। কিন্তু নবজাত স্বরধ্বনি আপন আনন্দে অন্ধ তমিশ্রময় নিস্তব্ধতার কঠিন শিলাকে খান খান করে ভাঙতে চায়। শব্দের সঙ্গে নিস্তব্ধতার দ্বন্দ্ব চলেছে ; তাই, কখনও গানের স্বর ক্ষুব্ধ, কর্কশ, লড়াই করছে ; কখনও সে সুর করুণ, অশ্র জলসিক্ত, অন্ধ নীরবতা ভেদ করে একটি শব্দের কমল ফোটাবার বেদনায় আতুর । শেষে নিশকতার জয় হ’ল। গান শেষ না হয়ে সহস থেমে গেল। মহানীরবতা এ অশাস্ত স্বরধ্বনিকে আপনার মধ্যে সংহত বিলীন করে নিলে, সমুদ্র যেমন আপন বন্ধের চঞ্চল গুরঙ্গকে আবার আপনার অতলতায় শাস্ত করে। তারপর, সে সঘন অন্ধকারে কি ভয়াবহ নিস্তব্ধতা ! যেন প্রলয়শেষে মহানিশার মহাভয়ঙ্কর নিশ্চল চির প্রশাস্তি ! এতক্ষণে ভয় পেলাম। সে নীরবতায় গ। সির সির করে উঠল । ভৌতিক ! কথাটা মনে হতেই হাত-পা কাপতে লাগল। যতক্ষণ গানের শব্ব ছিল, যাদুমন্ত্রে মুগ্ধ ছিলাম, অন্ধকার ছিল ঐন্দ্রজালিক স্বরে ভর। কিন্তু গান থামতেই চেতনায় সহজবুদ্ধি ফিরে এল। সে বুদ্ধি বললে, গানটা ভৌতিক ! বেশ অনুভব করলাম, হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে, দেহের রক্ত চলাচল ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর ; এ নিস্তব্ধতায় শুধু একমাত্র শব্দ হচ্ছে আমার বক্ষের স্পন্নধ্বনি, সে ধ্বনি এ নীরবতায় ছন্দ-হারা ; বুকের এ ধুকধুকানির শব্দ মৃদ্ধ হতে মুছতর হচ্ছে, ধীরে ধীরে এ মহানি:শব্দতায় বিলীন হয়ে যাবে, গানের স্বর যেমন নীরব হয়ে গেল । শব্দ, একটু শব্দ না হলে আমি মরে যাব ! ঠিক সেই সময় ঝড় উঠল ; নদী পার হয়ে বাড়ি কাপিয়ে দরজা জানলা দুলিয়ে ঝোড়ো হাওয়া হা হা শবে মাতালের মত ঘরে ছুটে এল, ভান্‌ গকের ছবিটা ঋম্বন ক'রে পড়ে গেল, তারপর এখ এচও শখ গুনে জামি । লাফিয়ে উঠলাম মনে হ’ল মঞ্চ' ইৰ এক প্রকাও বনকে : ... t . . . . . .'; . . . . . .” নিৰ্ম্মল করে তুলে, গাছপালাগুলিকে তাণ্ডবনৃত্যে নাচাতে নাচাতে নিরুদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছে ! আমি নিশ্চয় করে বলতে পারি, ঠিক সেই সময় সে ঝড় যদি না উঠ ত, সে গাছভাঙার ভয়ঙ্কর শব্দ যদি না আস্ত তাহলে আমি তিমিরময় মহানীরবতার ভারে মূৰ্ছিত হয়ে পড়তাম, হয়ত বুকের স্পন্নধ্বনিও নীরব হত । ঝড়ের বাতাসের সঙ্গে আমি নেচে উঠলাম, মরিয়া হয়ে বারান্দায় ছুটে বার হয়ে গেলাম, দেহের রক্তস্রোত আবার দ্রুত তালে নাচতে লাগল ঝড়ের মত্ত নৃত্যের ছন্দে । চীৎকার করে উঠলাম, আছি, আমি আছি ! ঝড় তার প্রত্যুত্তরে হাঃ হাঃ ক’রে অট্টহাস্য ক’রে উঠল। হাত ছুড়ে চীৎকার ক’রে ছুটোছুটি আরম্ভ করে দিলাম পাগলের মত,--নিজেকে কোনরকমে বঁচিয়ে রাখতে হবে । ঝড়ের বাতাসে বারান্দায় মাঠে কতক্ষণ দাপাদাপি করেছিলাম জানি না, একটা মোটরের হর্ণ শুনে আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম। চিরপরিচিত সে শব্দ কি মধুর লাগল ! মোটরের তীব্র আলো বাড়ির দরজার দিকে এগিয়ে এল ! আলো ! আলো ! জয়, তিমিরবিদারক আলোর জয় ! আলো দেখে এত আশা এত আনন্দ হ’তে পারে জীবনে কখনও অনুভব করিনি। অধীর হয়ে মোটরকারের হেড-লাইটের দিকে ছুটে গেলাম। রাতেব অজানা ভৌতিক পৃথিবী দুঃস্বপ্নের মত মিলিয়ে গেল । গল্পটা এইখানে শেষ করা যায় ; কিন্তু আমি ভূতে বিশ্বাস করি না, আর তা নিয়ে নিষ্ফল তর্ক তোমাদের সঙ্গে করতে চাই না, সেজন্য বাকিটুকু বলতে হচ্ছে। ড্রাইভার আমার পাশ কাটিয়ে বাগানের দক্ষিণে সদর বারানার সামনে গাড়ী থামালে। কালো দাড়িওয়ালা চাকরটা কোথায় ছিল, সে তাড়াতাড়ি বারান্দার ইলেকট্রিক জালো জালিয়ে মোটরকারের দরজা খুলে বললে,-এক ল’ব জায়া! গাড়ী থেকে এক তরুণী নামূল ; মনে হ’ল তাকে