পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

壱Iエ বা যুদ্ধবাহিনীর অগ্রভাগ চালনা করিবার দাবি লইয়া উভয় বংশের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার উপক্রম হইয়াছিল। প্রতাপের মৃত্যুর বহু বৎসর পরে শক্তসিংহ সম্বন্ধীয় গল্পটি বর্তমান আকার ধারণু করিয়াছে ; ইহা শক্তাবত চারুণদের মস্তিষ্কপ্রস্থত। কথিত আছে, একদিন চুঙাবত-কীৰ্ত্তি-অসহিষ্ণু শক্তসিংহ চুণ্ডাবত-চারণদের "দস সহস মেবার কা বর কেবাড়” অর্থাং চুণ্ডাবতকুল মেবারের দশ হাজার ( শহরের ) বড় কেবাড় বা তোরণ–এই স্পৰ্দ্ধ শুনিয়া আক্ষেপ করিয়াছিলেন র্তাহীর জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নাই। ইহাতে শক্তসিংহের চারণপ্রধান বলিয়া উঠিল, “কেন, আপনিই ত সেই কেবাড়ের অর্গল ।” বোধ হয় আরও দু-এক পুরুষ পরে এই অর্গল শব্দের টীকা ভাষ্য হইতে গোরাসানী ও মুলতানী এবং তাঁহাদের অগগল-স্বরূপ শক্তসিংহের হলদীঘাটের যুদ্ধে উপস্থিতির কাহিনী হষ্টি হইয়াছে । এইবার আমরা মহারাণা প্রতাপ ও সম্রাট আকবরের দ্বাদশবর্ষব্যাপী যুদ্ধের প্রধান ঘটনাগুলি আলোচনা করিব । বিঃ সঃ ১৬৩৩, জ্যৈষ্ঠ শুক্ল দ্বিতীয়ায় ( ১৮ই জুন, ১৫৭৬ ) হলদীঘাটের* যুদ্ধে শত্রুর কৌশলে পরাজিত হইয়া মহারাণা প্রতাপ গোগুন্দার দিকে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন । এই যুদ্ধে মেবার-সৈন্তের অপেক্ষা মোগলেরাই বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছিল, মোগল-পক্ষে ১৮০ মুসলমান নিহত ও ৩০০ আহত হইয়াছিল। উভয় পক্ষে রাজপুতের সংখ্যাই বেশী ছিল—রাজপুত মরিয়াছিল মোট ৩২০ জন। মোটামুটি রাণার পক্ষীয় ২০০ জন যোদ্ধা বোধ হয় এই যুদ্ধে প্রাণত্যগ করে, ইহাদের মধ্যে ছিলেন ঝালাবীদা, ঝাল মানসিংহ, র্তবর রাম শ ও উহার তিন পুত্র, রাবত নৈনসী, রাঠোর রামদাস, রাঠোর শঙ্করদাস, ডোড়িয়া ভীমসিংহ ইত্যাদি সর্দার । মোটের উপর চিলিয়ানওয়ালার যুদ্ধে যেভাবে ইংরেজের জয়ী হইয়াছিলেন, হলীঘাটে মুসলমান

  • উভয় সৈঙ্গের যুদ্ধ হইয়াছিল খমনোর নামক গ্রামে। উদয়পুরের নাথদ্বারা হইতে ৮ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই গ্রাম অবস্থিত ; হলীঘাট ও খমনোরের মধ্যে ব্যবধান অনুন তিন মাইল ।

হলদীঘাটের যুদ্ধ ও মহারাণ। প্রভাপের শেষজীবন \ురి পক্ষেরও সেরূপ অনিশ্চিত জয় ও অধিকতর ক্ষতি হইয়াছিল। যাহা হউক প্রতাপ স্থির করিলেন যে মোগলসৈন্তের সহিত সন্মুখ-যুদ্ধ করা হইবে না, কারণ যুদ্ধে বিজয়ী হইলেও ইহাতে তিনি সৈন্য-সংখ্যায় দুর্বল হইয়া পড়িবেন ; তিনি গোগুন্দা ত্যাগ করিয়া পৰ্ব্বতশ্রেণী আশ্রয় করিলেন, আরাবল্পীর প্রত্যেক গিরিশঙ্কট সুদৃঢ় করিয়া ভীলদের উপর উহার রক্ষার ভার দিলেন। যুদ্ধের. পরদিন মানসিংহ গোগুন্দা দখল করিলেন। কিন্তু এইখানে মোগল-সৈন্মের এক রকম অবরুদ্ধ হইয়া পড়িল, রসদ বন্ধ ; সৰ্ব্বদা রাণার আক্রমণের ইহার উপর পাৰ্ব্বত্য প্রদেশে দারুণ বৃষ্টি। শাহী ফৌজ কয়েক দিন ধরিয়া রুটির অভাবে শুধু পাকা আম ও মাংস খাইতে লাগিল ; ইহার ফলে অনেকের পীড়া ( আমাশয় ? ) দেখা দিল । তিন মাস পরে সম্রাট আকবর স্বয়ং আজমীরঞ্চ পৌঁছিলেন (২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৭৭৬ খৃ)। ইহার পূৰ্ব্বেই মানসিংহ গোগুনা ত্যাগ করিয়া মেবারের সমতল ভূমিতে আসিয়াছিলেন। সৈন্তের দুৰ্দ্দশার কথা শুনিয়া সম্রাট মানসিংহ ও আসফ থাকে আজমীর আসিতে আদেশ করিলেন । পুরস্কারের পরিবর্তে তাহাদের ভাগ্যে মিলিল তিরস্কার ও অপমান। বাদশ কিছু দিনের জন্য র্তাহাদিগকে দরবারে প্রবেশ নিষেধ করিলেন ( Lowe’s Muntakhab-tut-tawarikh, ii. p. 247 ). মহারাণা প্রতাপকে দমন করিবার জন্য এবার স্বয়ং আকবর আসরে নামিলেন । ১৫৭৬ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে আকবর আজমীর হইতে গোগুন্দ৷ পৌছিয়া, কুতবউদ্দীন খ, রাজা ভগবানদাস এবং কুমার মানসিংহকে প্রতাপের বিরুদ্ধে পাঠাইলেন ; র্তাহীদের প্রতি আদেশ ছিল পাৰ্ব্বত্য প্রদেশে যেখানেই থাকুক প্রতাপের পশ্চাৎ অমুসরণ করিয়া তাহাকে বন্দী করিতেই হইবে। এদিকে গুজরাট সীমাস্তে প্রতাপের শ্বশুর নারায়ণ দাসকে দমন করিবার ভয় ; জন্য কুলিজ খ, তৈমুর বদখশী প্রভৃতি সেনাপতির f Akbarnamna, iii. 259. y