পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ురి8 S99áు পরিমাণ উচু চৌকীর উপরে পত্তল এবং পাতার উপরে থালা রাখা হয় । তিনি বলেন, ইহা প্রতাপের শপথ পালনের জন্য নহে ; ইহাই প্রাচীন কাল হইতে ভোজনের রীতি। মহারাণাদের বিছানার নীচে ঘাস উদয়পুরে কেহ কখনও দেখে নাই, নাকড়ি বাদ্য প্রতাপ রাজা হইবার পূৰ্ব্বে আকবর কর্তৃক চিতোর অধিকারের সময় হইতে শিশোদিয়া সৈন্তের পিছনে বাজাইবার প্রথা চলিয়া আসিতেছে । দাড়ি কামানোর কথা লইয়া মহামহোপাধ্যায় গৌরীশঙ্করজী অনেক গবেষণা করিয়াছেন । আজকাল রাজপুতদের মত গালপাট্র ও দাড়ি রাখিবার ফ্যাশন সম্রাট ফরোখসিয়রের রাজত্বকাল* হইতে আরম্ভ হইয়াছে, উহার পূৰ্ব্বে নয়। মহারাণ। প্রতাপের প্রাচীন চিত্রে কোথায়ও দাড়ির নাম-নিশানা নাই । অর্থাভাবে যুদ্ধ পরিচালনা অসম্ভব মনে করিয়৷ মহারাণ প্রতাপের মেবার ত্যাগ করিবার ইচ্ছা ও ঐ সময়ে ভাম শাহের নিজের সঞ্চিত অনেক টাকা মহারাণীকে দান করা ইত্যাদি কথা অবিশ্বাস্ত ও কাল্পনিক বলিয়া গৌরীশঙ্করজী প্রমাণ করিয়াছেন । মেবার-রাজ্যের গুপ্তধন অনেক স্থানে প্রোথিত ছিল । কথিত আছে, ভাম শাহ মরণের সময় তাহার স্ত্রীর হাতে একটা বহি দিয়া বলিয়াছিলেন যেন তাহার দেহত্যাগের পর ওটা মহারাণার কাছে পৌছাইয়৷ দেওয়া হয়, উহাতে গুপ্তধনের সমস্ত বিবরণ লিখিত ছিল । মহারাণ। প্রতাপ সিংহ উন্নতদেহ ও বলিষ্ঠ পুরুষ ছিলেন । তিনি আজীবন যুদ্ধ করিয়াছেন অথচ কথিত আছে তাহার শরীরে কোন শস্ত্রচিহ্ন ছিল না ; তিনি কোন যুদ্ধে বিশেষ রকম আহত হইয়াছিলেন বলিয়। জান৷ যায় না। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্কে একদিন একটি বাঘ শিকার করিবার সময় তিনি খুব জোরে ধমু কষিয়াছিলেন, ইহাতে তাহার তলপেটে ও অন্ত্রে বিশেষ চোট পাইয়াছিলেন। কিছুদিন রোগে কষ্ট পাইয়৷ বি: স: ১৬৫৩ মাঘ মাসের শুক্ল একাদশীতে ( ১৯শে জানুয়ারি, ১৫৯৬ খৃ: ) মহারাণার দেহান্ত হয়। চাবণ্ড হইতে অনুমান দেড় মাইল দূরে • রাজপুতানেক ইতিহাস, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৭৭২ । 經 -- বণ্ডোলী গ্রামের নিকট একটি ছোট নদীর ধারে তাহার দাহক্রিয়া সম্পন্ন হইয়াছিল । প্রতাপের প্রবল প্রতিদ্বন্দী দিল্লীশ্বর আকবরের মেবারজয়ের জন্য প্রবল আয়োজন, একাধিক অভিযান ও উহার নিস্ফলতাই মহারাণা প্রতাপের কৃতকাৰ্য্যতার মাপকাটি। মহারাণার দুৰ্জয় সঙ্কল্পের সম্মুখে আকবরের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হইল, মেবার-স্বাধীনতার অনিৰ্ব্বাণ প্রদীপ আরাবল্লীশিখরে জলস্ত রাখিয়া প্রতাপ বীরত্ৰত উদ্‌যাপন করিয়া গেলেন। মহারাণ। প্রতাপের ত্যাগ ও বীরত্বে মেবারের নৈতিক প্রভাব সমস্ত রাজপুতানায় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। বাবরের হাতে পরাজিত হইয়া মহারাণ। সংগ্রামসিংহ রাজপুতানার যে রাষ্ট্রীয় সাৰ্ব্বভৌমত্ব হারাইয়াছিলেন পচিশ বৎসর ভারতসম্রাটু আকবরের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা রক্ষণ করাতে মেবারের সেই প্রনষ্ট অধিরাজত্ব রাজপুত জাতির মনের উপর পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইল। সপ্তদশ শতাব্দীতে ধে বিরাট হিন্দু-জাগরণ মোগল-সাম্রাজ্যকে ধূলিসাৎ করিয়াছিল উহার মূলে প্রতাপের মহান আদর্শের প্রেরণা কম ছিল না। প্রতাপ ন জন্মিলে মেবারে মহারাণ রাজসিংহ জন্মিতেন কি-না সন্দেহ, রাজসিংহ না থাকিলে মেবার ও মড়বারে আওরঙ্গজেবের প্রচণ্ড নীতি প্রতিহত হইত না । বিকানীর-রাজ রায়সিংহের ছোট ভাই কবি পৃথ্বীরাজ মহারাণ। প্রতাপ সম্বন্ধে কয়েকটি কবিতা রচনা করিয়াছিলেন । এই কবিতাগুলি মহারাণা প্রতাপ ও পৃথ্বীরাজের মধ্যে পত্র ব্যবহারের ধরণে লিখিত । ইহা হইতে ঐতিহাসিকরা ভ্রম করেন সত্যই পৃথ্বীরাজের তেজপূর্ণ কবিতা পাঠ করিয়৷ দারিদ্র্যক্লিষ্ট প্রতাপের হৃদয়দৌৰ্ব্বল্য দূর হইয়াছিল ; এবং আকবরের কাছে অধীনতা স্বীকার সঙ্কল্প তিনি ত্যাগ করেন । এমন কি, গৌরীশঙ্কর জীর মত ঐতিহাসিক ইহাকে ইতিহাস বলিয়। ভ্রম করিয়াছেন। প্রতাপের জীবনীর এক স্থলে উষ্মবিশতঃ পণ্ডিতজী লিথিয়াছেন, “প্রতাপ বাদশাহী থেলাত পরিধানের কথা দূরে থাকুক তিনি আকবরকে বাদশাহও বলিতেন না, তুর্ক বলিতেন।” ইহার প্রমাণ ! প্রমাণ শুধু পৃথ্বীরাজের কাছে লিখিত মহারাণার রচিত পদ ( নাল; }