পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و بيع وينا কবিরাজের কালো বড়ি, যে যাহা বলে তাহাই করিতেছে, তবুও কিছুতেই আরাম হইতেছে না। বিরাজ দিন দিন আরও শুকাইয়া যাইতেছে । আজকাল উঠিতে-বসিতেও তাহার কষ্ট হয়। মনে তাই স্থখ নাই । ঘরের মাচুষটি এমন হইলে কি চলে ? সংসারের যাহা কিছু পাট-বাট সব করে ঐ এক ফোট মেয়ে। এক দণ্ড স্থির হইয়৷ বসিতে পায় না। বিরাজ বারান্দার এক কোণে নিজীবের মত বসিয়া বসিয়া দেখিত আর নিজেকে ধিক্কার দিত ; বলিত, “ম, তোর কত কষ্ট হচ্ছে ।” যশোদা বলিত, “তা’ও যদি মা, তোমার মত সব গুছিয়ে করতে পারতাম।” বিরাজ বলিত, “কোনটাই ত পড়ে থাকে না । আমি ম’লে—” “আবার ও-কথা বলছ ? তবে সব পড়ে থাকৃ—” বলিতে বলিতে যশোদা মায়ের পাশে গিয়া চুপ করিয়া বসিত। বিরাজ সস্নেহে তাহার গায়ে মাথায় হাত বুলাইয়া দিত। যশোদার মুখখানি হাসিতে ভরিয়া উঠিত। সে আবার কাজের পাকে চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইত। মেয়ে নয়, যেন লক্ষ্মী। ও মুখে হাসি না দেখিলে বড় কষ্ট হয় । তাহাকে পরের ঘরে পাঠাইয়া কি করিয়। তাহাদের চলিবে ? তাহার দুইজনে ও গাভী তিনটি অন্ন ও ঘাসজল বিনা হয়ত বাচিবেই না। দুগ্ধবতী কালো গাভী দুটিরও টান যশোদার উপর । অন্য কেহ খাওয়াইলে তাহাদের পেট ভরে না। সে ও আদর করিয়া উহাদের নাম দিয়াছে, কৃষ্ণ ও কালিনী । যদুর প্রতিদিনের পণ্যের অধিকাংশই যশোদা প্রস্তুত করিয়া দেয়। সকলে খাইয়া সুখ্যাতি করে । বলে, “যদু কারিকর ভাল।" সেও চুপ করিয়া থাকে। কিন্তু গত সন পূজায় শহরে চক্ৰবৰ্ত্তীবাবুদের গৃহে দধি জমাইতে গিয়া যদুর হাতযশ নষ্ট হইবার উপক্রম। ভাগ্যে তখন তাহার কাপিয়া জর আসিয়াছিল। বিরাজের বাবা ছিল পাক কারিকর। তাই বিরাজ অমন সুন্দর ক্ষীর-দধি বানাইতে পারে। মেয়েটাও মায়ের গুণ পাইয়াছে। ইদানীং ব্যবসায় বড় মন্দা । শহরের দুই চারিটি বড় ঘর তাহার বাধা খরিদদার, তাই কোন মতে চলে•••••• w Sలికలిāు চক্রবর্তীবাবুদের মেয়েটিকে যদুর বড় ভাল লাগিত । মেয়েটি তাহার যশোদার, মতই, বিশেষ করিয়া তাহার চোথ দুটি । তাহার হাক শুনিলেই অন্দরের अब्रजाइ আসিয়া হাসিমুখে দাড়াইত। সেও মাঝে মাঝে এক ভাড় দধি, এক হাত ক্ষীর তাহাকে খাইতে দিত। ছোটবাবু বলিতেন, “বেটা ভারি চালাক। অমনি ক’রে আমাদের খুশী রাখে । জিনিষও ভাল নয়, দরও গলকাট। দেব একদিন দূর করে।” শুনিয়া যদুর মনে বড় কষ্ট লাগিত । হোকু না সে গরিব, সাধ-আহলাদ কি তাহারও নাই ? এবার যন্ধু স্থির করিল, শহরের প্রসন্ন ডাক্তারকে একবার বিরাজকে দেখাইবে । পয়সা ত খরচ হইতেছে অনেক । গরিব লোক, দিন উপায়ে চলে। যদি সারে ত উহার ঔষধেই । লোকটা যেন স্বয়ং ধন্বস্তরী। একদিন দক্ষিণ পাড়ার মহেশখুড়ে আসিয়া কহিল, “যদু, যশির বিয়ের কি কবৃলি ? মেয়ে ত সোমত্ত হয়ে উঠল।” খুড়ে যেন কেমন ধারা মানুষ । ঐ ত মেয়ে । মুখে বলিল, “দেখছি—” “কোথায় ?” “পুরোন-কুষ্টের নিতাই ঘোষের ছোট ছেলেটার সঙ্গে । তারাও রাজী । কিন্তু তোমার বোয়ের অস্থখ—” "তাই ত’ বলি, এই বেলা শুভকাজটা চুকিয়ে ফেল। ছেলেটা ভাল, রামলাল পণ্ডিতের পাঠশালার সর্দার পোড়ে । ঘরও ভাল । ষড়ভাই ছোট আদালতের পিয়াদ, মেজভাই হরিশ-উকিলের মুহুরী । দু-পয়স আনে-নেয়, জমি-জমাও কিছু আছে। ও ছেলেটাও কোন না একটা চাকরি করবে। আজকাল ব্যবসায় আর সুখ নেই রে -” যদু তাহার কথার কোন উত্তর দিল না। মনে মনে ভাবিল, খুড়োর কথা যথার্থ। কিন্তু ঐ মেয়েকে সে কোন প্রাণে ঘর অন্ধকার করিয়া ছাড়িয়া দিবে ? উছাদের যে আর একটিও নাই! যাইবার কালে খুড়ো কহিল, "পরশু হাট আছে, এক ফোট