পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাত্র হওয়া ত পুরুষমাত্রেরই স্বাভাবিক। তোমার কপাল ভাল, তাই রোজ ক্লোজ কোয়াটাসে দেখতে পাণ্ড, আমরা রাস্তায় ঘাটে, কালেভদ্রে দু-এক দিন দেখি ” প্রতাপ ভাবিয়া পাইল না এ-সব কথার উত্তরে কি বলিবে। যদি রাগ দেখায়, উত্তর না দেয়, তাহা হইলে বাজু আরও জে পাইয়া বসিবে, এবং মনে মনে সন্দেহও করিবে অনেক কিছু। অথচ ধামিনীর কথা এমন লঘুভাবে আলোচনা করিতেও তাহার যেন বুকে শেল বিদ্ধ হইতে ছিল । তাহার নাম এমনভাবে মুখে আনিলেও যেন তাহার অপমান করা হয়। উহা যেন হৃদয়ের নিভৃত মন্দিরে লুকাইয়। রাখিবার জিনিষ, কল্পনার প্রদীপ জালিয়া আরতি করিবার জিনিষ, জীবনের শ্রেষ্ঠতম অর্ঘ্য নিবেদন করিয়া পূজা করিবার জিনিষ । কিন্তু এ হতভাগা যেন দেবীপ্রতিমাকে বঙ্গমঞ্চে টানিয়া আনিতে চায় । রাজুর উপর বিবক্তিতে তাহার চিত্ত ভরিয়া উঠিল । বৌদিদি চ। হাতে করিয়া প্রবেশ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হ’ল ঠাকুর পো ?” রাজু প্রতাপের হইয়। উত্তর দিল, “কি আর হবে ? ময়দানে বেশী ক’রে হাওয়া খেয়েছেন আর কি ? আর কেউ সঙ্গে ছিল না-কি ?” প্রতাপ উত্তর না দিয়৷ চায়ের পেয়ালাট। তুলিয়া আস্তে আস্তে চুমুক দিতে লাগিল। রাজু আর তাহাকে ন জালাইয়া চা থাইতে চলিয়া গেল। পিসিমা আসিয়া বলিলেন, “কি রে, জর হয়েছে না-কি ? তা একটু আদার রস দিয়ে চা-ট। খেলি না কেন ? আজ আর ইস্কুল-মিস্কুল যাস্নে যেন । যা ঠাণ্ডা পড়েছে, এতে ত ঘরে বসেই } মামুষের অমুখ করছে।” প্রতাপ বলিল, “ন। ইস্কুল আর যাব কি ক’রে ? কিন্তু একটা খবর দিতে হবে যে ? কাকে বা পাঠাই ?” পিসিম বলিলেন, “কেন, ঐ ত বিন্দেবনের নাতি তাদের ইস্কুলেই পড়ে। চিঠি লিখে দে, কাহ না-হয় ঝি গিয়ে তাকে দিয়ে আসবে।” প্রতাপ বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া চিঠি লিখিতে বসিল । স্কুলে না-হয় বৃন্দাবনের নাতির হাতেই চিঠি পাঠাইল, p سt-- جبرا भाङ्ग-क्षण چ8ی\ কিন্তু নৃপেনবাবুকে খবর দিবে কি করিয়া ? সেখানে ত কাকু যাইতে পারিবে না । চিঠিখান পাঠাইয়া দিয়া সে চুপ করিয়া শুইয়া ভাবিতে লাগিল। রাজু আজ যামিনীর কথা তুলিতে গেল কেন ? কেহ কি তাহার কাছে কিছু বলিয়াছে ? কেই বা বলিবে? নৃপেন্দ্রবাবুর বাড়িতে তিনি স্বয়ং এবং মিহির ভিন্ন পুরুষজাতীয় কোন জীব নাই, তাহার: কিছু রাজুর কানে কানে যামিনীর কথা বলিতে যান নাই। পাশের বাড়িতে অনেক লোক আছে বটে, যুবকও দু-একটিকে সে যাইতে আসিতে দেখিয়াছে, তাহাদের কাহারও সঙ্গে কি রাজুর জানাশোনা আছে ? কিন্তু হাসিঠাট্টা করিবার মত কে কি পাইল ? প্রতাপের হৃদয়ের ভিতর দূরবীক্ষণ লাগাইয়াত কেহ কিছু দেখিতে যায় নাই ? হয় ত শুধু শুধুই স্বন্দর, অবিবাহিত তরুণী, তাহার সম্বন্ধে আলোচনা এমনিই ছেলেমহলে হয় এবং গৃহে একজন যুবক শিক্ষক রোজ যায় আসে, এই সুযোগটা গল্প রচনার পক্ষে অতি চমৎকার, সুতরাং দুইয়ে দুইয়ে চার করিতে অনেকেই বাস্ত হইয়া উঠিয়াছে । কিন্তু এইভাবে আর কতদিন চলিবে ? প্রতাপ কি সংশয় ও দ্বিধার দোলায় দুলিয়াই জীবনট কাটাইয়া দিবে ? যামিনীর মত মেয়ে কতদিনই বা পিত্রালয় আলো করিয়া থাকিবে ? প্রতাপ যখন নিজের অযোগ্যতার চিস্তায় হাত পা গুটাইয়া বসিয়া, সেই সুযোগে কোনও উদ্যোগী পুরুষ আসিয়া কি এই লক্ষ্মীকে অপহরণ করিবে না ? এই দুর্ঘটনার প্রতিকার করিতে হইলে তাহার আর আলস্য বা সংশয় লইয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না। তাহার নিজের মন তাহার জানা আছেই, যামিনীর মন জানিতে হইবে এখন। যদি যামিনীর তাহার প্রতি বিরুদ্ধতা না থাকে, তাহ হইলে যামিনীর যোগ্য হইবার জন্ত মামুষের সাধ্যে যাহা কিছু আছে, তাহ প্রতাপকে করিতে হইবে ; এতখানি স্বপাত্র তাহাকে হইতে হইবে, যাহাতে জ্ঞানদাও তাহাকে অযোগ্য মনে না করেন। ভাবিতে ভাবিতে প্রতাপের রক্ত উত্তপ্ত হইয়া উঠিল । পুরাকাল হইলে এখনি রণতুরগে চড়িয়া সে বাহুবলে হৃদয়লক্ষ্মীকে জয় করিয়া আক্সিবার