পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ শাখাজাল-নিবন্ধ গাছপাল, আমি আর কাটাল গাছের সংখ্যাই বেশী, পুরু বাকল ফাটির চৌচির হইয়া গুড়িগুলি পড়িয়া আছে নেন এক-একটা অতিকায় কুমীর, ছাতাধর। সবুজ ফাঁকে ফাকে পরগাছ একদা মানুষেই যে ইহাদের পুতিয়া লালন করিয়াছিল আজ আর তাহ বিশ্বাস হয় না। কত শতাব্দীর শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষ মাথার উপর দিয়া কাটিয়া গিয়াছে, তলার অধীরে এইসব গাছপালা আদিমকালের কত সব রহস্য লুকাইয়। রাখিয়ছে, কোনদিন স্পৰ্য্যকে টুকি মারিয়৷ কিছু দেখিতে দেয় নাই।. এই রকম একটানা কিছুক্ষণ চলিতে চলিতে শঙ্কর পীড়াইয় পড়িল । --ওখানটায় ত ফাক বেশ জল চকচক করছে --ন ? অামিন বলিল—৪র নাম পঙ্কণীখি--- —খুব পাক বুঝি ? --ত হবে, কেউ কেউ আবার বলে পল্লী-দীঘির থেকে পঞ্চদীধি হয়েছে— ললিয়৷ ভজহরি গল্প আরম্ভ করিল । সেকালে এই দাখির কালে জলে নাকি অতি সুন্দর মারপন্থী ভাসিত । আকারে ৪ সেট প্রকাণ্ড, দুই কামর। ছয়ুপনি দাড় । এত বড় ভারী নৌকা, কিন্তু তলীর ছোট একখানা পাট একটুখানি ঘুরাইয় দিয়া পলকের মধ্যে সমস্ত ডুবাইয়া ফেলা যাইত। দেশে সে সময় শাসন ছিল না, চট্টগ্রাম অঞ্চলের মগের আসিয়া লুটতরাজ করিত, জমিদারদের মধ্যে রেশারেশি লাগিয়াই ছিল। প্রত্যেক বড়লোকের প্রসাদে গুপ্তদ্বার ও গুপ্তভাণ্ডার থাকি ত, মনিসম্ম লইয়া পলাই যাইবার অন্ততঃপক্ষে মরিবার অনেক সব উপায় সম্বন্ত লোকের হাতের কাছে ঠিক করিয়৷ রাপিতেন। কিন্তু নৌকার বহিরঙ্গ দেখিয়া এসব কিছু ধরিবার যে ছিল না। চমৎকার ময়ুরকষ্ঠী রঙে অবিকল ময়ূরের মত করিয়া গলুইট কুঁদিয় তোলা-শোনা যায় এক-একদিন নিঝুম রাত্রে সকলে ঘুমাইয় পড়িলে রাজারামের বড় ছেলে জানকীরাম তার তরুণী পত্নী মালতীমালাকে লইয়া চিত্রবিচিত্র ময়ূরের পেখমের মত পাল তুলিয়া ধীর বাতাসে ঐ নৌকায় দীঘির উপর বেড়াইতেন। এই মালতীমালাকে লইয়া এ অঞ্চলের অরণ্য-কাণ্ড চযিার অনেক ছড়া বধিয়াছে পুত্ৰ ੋਂ দিন তাহার বাড়ি বাড়ি সেক্ট"ৰ ছড় গাহিয়া নূতন চাউল ও গুড় সংগ্রহ করে, পরদিন দল বাধিয়া সেই গুড়-চাউলে আ!মেদি করিয়৷ পিঠা খায় । গল্প করিতে করিতে তপন তাহার সেই দীঘির পাড়ের কাছে অসিয়াছে । ঠিক কিনার অবধি পথ নাই, কিন্তু নছোঁড়বান্দ শঙ্কর ঝোপঝfড় ভাঙিয়। আগাইতে লাগিল । ভজহরি কিছুদূরে একটা নীচ ডাল ধরিয়া দাড়াই। রহিল। নল-খাগড়ার বন দীণির অনেক উপর হইতে আরম্ভ হইয়। জলে গিয়া শেষ হইয়াছে, তারপর কুচে শেওল৷ শাপলার ঝাড়। ঝুঁকিয়-পড়! গাছের ডাল হইতে গুলঞ্চলত ঝুলিতেছে। একটু দূরের দিকে কিন্তু কাকচক্ষুর মত কালো জল । সড়ি পাইয়। ক'টা ডাকপাথী নলবনে ঢুকিল । অল্প থানিকট ডাইনে বিড়ালঙ্গাচড়ার কাট ঝোপের নীচে এককালে যে বাধানো ঘাট ছিল এখনও বেশ বুঝিতে পারা যায়। সেই ভাঙাঘাটের অনতিদূরে পাতল। পাতল৷ সেকেলে ইটের পাহাড় । কতদিন পূৰ্ব্বে বিস্কৃত শতাব্দীর কত কত নিভৃত সুন্দর জ্যোৎস্ন রাত্রে জানকীরাম হয়ত প্রিয়তমাকে লইয়। ওখান হইতে টিপিাটপি এই পথ বহিয়া এই সোপান বহিয়া দীঘির ঘাটে ময়ুরপঙ্গীতে চড়িতেন । গভীর অরণ্যছায়ে সেই আসন্ন সন্ধ্যায় ভাবিতে ভাবিতে শঙ্করের সমস্ত সম্বিং হঠাৎ কেমন আচ্ছন্ন হুইয়| উঠিল । --ধ্যেং, আমার ভয় করে—কেউ যদি দেখে ফেলে ? —কে দেখবে আবার ? কেউ কোথাও জেগে নেই, চল মালতীমালা—লক্ষ্মীট, চল যাই— —আজ থাক, না না—তোমার পায়ে পড়ি আজকের দিনটে থাক শুধু— ঐ যেখানে আজ পুরাণে ইটের সমাধিস্তুপ ওখানে বড় বড় কক্ষ অলিন্দ বাতায়ন ছিল, উহারই কোনখানে হয়ত একদা তারা-খচিত রাত্রে ময়ুরপন্থীর উচ্ছ্বসিত বর্ণনা শুনিতে শুনিতে এক তম্বঙ্গ রূপসী রাজবধুর চোখের তার লোভে ও কৌতুকে নাচিয়া উঠিতেছিল, শব্দ হইব বলিয়৷ স্বামী হাঙ্গ বা পারে খুব খুলি লি নিশৰে ত্ৰীি