পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

تواجهوا S99áు আত্মা আছে ; তবে ইতর প্রাণীতে আত্মার প্রকাশ বা চেতন তত পরিস্ফুট নহে । জড়েও আত্মা অব্যক্ত অবস্থায় বর্তমান । আত্মার প্রকাশ যতই অপরিস্ফুট হইবে মনুষ্য বা প্রাণী ততই নিম্নস্তরের হইবে। হিন্দু— ধৰ্ম্মের চরম উদ্দেশ্য আত্মার স্বরূপ উপলব্ধি । এই আত্মার যখন সূক্ষ্ম ইন্দ্রিয় ও বাসনার আবরণ থাকে তখনই তাহা জীবাত্মা বলিয়া পরিগণিত হয় । এই আবরণ খসিয়া গেলে জীবাত্মার মুক্তি হয় তাহ পরমাত্মাতে লীন হয়। বাসনার আবরণের বশে জীবাত্ম। দেহ ধারণ করে । মতুষ্য যেমন ইচ্ছামত বাসগৃহ নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহার মধ্যে বাস করে সেইরূপ জীবাত্ম নিজ বাসনামত শরীর নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহাতে অধিষ্ঠান করিয়া বিষয় ভোগ করে । কঠোপনিষদে উক্ত হইয়াছে – উৰ্দ্ধে প্রাণ অার অধে অপশনকে যিনি করেন চীলনী । মধ্যস্থিত সে বামনে সকল দেবতা করে উপাসনা ৷ ভ্রংসামান এই দেহে অধিষ্ঠাতা দেহি যারে বলা হয়। দেহ হতে মুক্ত হ’লে তিনি অবশিষ্ট কিবা তাতে রয়। না বা প্রাণে না অপানে জীব করে কভু জীবনধারণ। উভয়ে আশ্রিত অন্তে যেই হয় সেই জীবন কারণ ॥ কঠ-৫।৩-৫ অর্থাৎ বামন বা পূজনীয় আত্মাই দেহ, প্রাণ, ইন্দ্রিয় ( দেবতা ) ইত্যাদির অধিপতি। তাহারই বশে প্রাণ ইত্যাদি চলিতেছে । তিনি দেহত্যাগ করিলে দেহে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এই সমস্ত কথা মানিয়া লইয়া পুনজন্মবাদের বিচার করা যাক । জীবাত্মা স্বীয় বাসন ভোগের জন্যই দেহ সৃষ্টি করে। অতএব যতদিন বাসনার বিনাশ না হইবে ততদিন জীবাত্মা সুযোগ পাইলেই দেহ সৃষ্টি করিবে । এক দেহ নষ্ট হইলে জীবাত্ম। অপর দেহ সৃষ্টি করিয়। তাহাতে আশ্রয় লইবে । কথাটা উদাহরণ দ্বারা স্পষ্ট হইবে । কোন বৃক্ষে দেখিলাম যে পক্ষীর নীড় রহিয়াছে কিন্তু পক্ষীকে দেখিতে পাইলাম না। এই নীড় ভাঙিয়া দিলাম। পক্ষিতত্ত্ববিৎ বন্ধু বলিলেন, পক্ষীর এই সময়ে শাবক হইবে সে জন্য তুমি যতবারই বাসা ভাঙ্গিয়া দাও না কেন সে পুনরায় উপযুক্ত দ্রব্যাদি সংগ্ৰহ করিয়া বাসা বাধিবে । যতদিন তাহার শাবকপালনের ইচ্ছা থাকিবে, ততদিন সে নীড় রচনা করিবেই। একটি বাস ভাঙিয়া দিবার পর পুনরায় g" কোন বাসাটি পার্থী তৈয়ার করিল তাহা বলা যাইবে না, কারণ পার্থীকে আমরা দেখিতে পাই নাই। জীবাত্মার পুনর্জন্ম এই প্রকারের ব্যাপার। এই জন্যই হিন্দুশাস্ত্রকারেরা বলেন কামনামুযায়ী আত্মা শরীরধারণ করে । ভাল বাসন থাকিলে উচ্চস্তরে জন্ম হয়। নিকৃষ্ট বাসনার বশে ইতর যোনিতে জন্ম হয়। বাসন ক্ষয় হইলে পুনর্জন্ম হয় না। ইহাই পুনর্জন্মবাদ ৷ শ্ৰীকৃষ্ণ জন্মান্তরবাদ স্বীকার করিয়াছেন । এই জন্মাস্তরবাদের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদী কতকগুলি কূট প্রশ্ন তুলিতে পারেন। আত্মাই যখন প্রাণের অধিষ্ঠাতা ও প্রাণ যখন আত্মার বশে চলে তখন মানিতে হয় আত্মার দেহত্যাগে প্রাণত্যাগ হয়। আমি যদি কোন ব্যক্তিকে কাটিয়া ফেলি তবে তাহার আত্ম। কি করেন ? উত্তরে বলা যাইতে পারে, প্রকৃতি হইতেই আত্মা প্রাণ ইত্যাদি দেহের সমস্ত জড় উপাদান সংগ্রহ করেন প্রকৃতি বিপর্যায়ে দেহ ছিন্ন হইলে প্রাণ নষ্ট হয় ও দেহ তখন বিষয়ভোগের উপযোগী থাকে ন বলিয়াই আত্মা তাহা ত্যাগ করে ও পরে সুযোগ-মত অন্ত শরীর গ্রহণ করে। প্রকৃতির নিয়মের বশেই সুযোগ খুজিয়া জীবাত্মাকে চলিতে হয়। আবার প্রশ্ন উঠবে, সকল প্রাণীতেই আত্মা আছে। এমিবা ( amoeba ) নামক প্রাণীতেও আত্মা আছে। একটি এমিবাকে শস্ত্রদ্বারা বিভক্ত করিলে দুইটি এমিবার উৎপত্তি হয় ; কোন কোন বৃক্ষের ডাল কাটিয়া পুতিলে আর একটি বৃক্ষ জন্মে। এই পরীক্ষায় শরীরের সঙ্গে সঙ্গে আত্মাও কি বিভক্ত হইয়া দুইটি আত্মায় পরিণত হইল ; কিন্তু নৈনং ছিনাস্তি শস্ত্রানি’-শস্ত্র আত্মাকে ছিন্ন করিতে পারে না । তবে এ দ্বিতীয় আত্মা কোথা হইতে আসিল । কবে, কোথায় অণুপ্রমাণ এমিবার শরীর ছিন্ন হইবে ও সেই শরীরেরই যোগ্য বাসনাযুক্ত আত্মা তাহাতে প্রবেশ করিবে, এই আশায় কি সে আত্মা অপেক্ষা করিতেছিল ? উত্তরে বলিতে হয়, জীবাত্মাও পরমাত্মার ন্যায় সৰ্ব্বব্যাপী, সেজন্য উপযুক্ত স্বযোগ পাইবা-মাত্র নিজ কামনাকুযায়ী শরীরে প্রবেশ করে । কখনও আবশ্বকাচুযায়ী শরীর একেবারেই লাভ করে, 愛