পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

EI드 একথা জোরের সঙ্গে আপনিই বোধ হয় প্রথম বলেছেন । ভারতের পশ্চিম-সীমাস্তে সিন্ধুতারে যেসভ্যতার প্রথম সূত্রপাত তারই কেন্দ্র ক্রমাগত পূবদিকে স’রে সরে ইন্দ্রপ্রস্থ, অবোধ্যা, বারাণসী, পাটলিপুত্র হয়ে আজকের দিনের কলকাতায় এসে শেষ পরিণতি পেয়েছে, আপনার লেখা পড়লে একথাটাকে কেবল থিওরী ব’লে একটও আর মনে হয় না। অন্ততঃ বাঙালী জাতের আত্ম সম্মান-বোধ একটু বাড়াবার জন্তেও এ-ধরণের থিওরীর প্রয়োজন ছিল ।” অজয় কহিল, “সম্প্রতি থিওরাটাকে বদলেছি । অল্প একটু আর্য্যাবৰ্ত্তে দুটি একেবারে আলাদা সভ্যতার উদ্ভব হয়েছিল এই বিশ্বাস এখন আমার হয়েছে। সিন্ধুতীরের বহুপ্রাচীন যে সভ্যতা, সিন্ধস্রোতেরই মত তার গতি ছিল দক্ষিণে, এখনকার দক্ষিণ-দেশীয়ের সেই সভ্যতাকে উত্তরাধিকারস্থত্রে পেয়েছে । আৰ্য্যসভ্যত যেটাকে আমরা বলি সেট গঙ্গাতীরের জিনিষ, তার সমস্ত চেহারাটাই সিন্ধুতারের সভ্যতার থেকে আলাদ । এই গাঙ্গেয় সভাতাই ছিল গঙ্গাস্রোতের মত পূৰ্ব্বাভিমুখী ।” বমাপ্রসাদ কহিল, “আমরা ক্লাব থেকে একট। কাগজ বের করব কিছুদিন থেকে ভাবছি। কাগজট যদি হয়, আপনার সব নতুন লেখা আমরা ছাপতে পারব, একটা সত্যিকারের বড় কাজ হবে ।” পাশের ঘর হইতে যুবকদলকে প্রায় তাড়াইয় লইয়। এই সময় স্বভদ্র আসিয়া ঢুকিল, টানাটানি করিয়া সকলকে বসাইয়া দিতে দিতে কহিল, “ন, প্রকাশ, কথা শোন ।. নৃপেন, তোমার অন্ততঃ একটু বুদ্ধিমুদ্ধি আছে ব’লে আমি ভাবতাম ।...তোমরা সবাই মিলে রেঞ্জ যদি এই রকম কর তাহলে ক্লাব-টবি করার মানে হয় না কিছু । এদিকটাও ত দেখছি একেবারে থলি। বৌদি, তোমার অন্য বন্ধুর সব গেলেন কোথায় ?” ঘরোয় ধরণে ঢাকাই শাড়ী পরা কিঞ্চিৎ স্থূলকায় গৌরবর্ণ একটি মহিলা চাবি-বাধা আঁচলট কাধে ফেলিয়৷ উঠিয়া পড়িলেন, বলিলেন, “ধ’রে রাখা কি যায় । ঘরের মধ্যে গরম হচ্ছে ব’লে বীণ| যেই উঠে বাইরে গেল, এক এক ক’রে সব-ক’জন সেইখানেই গিয়ে জুটেছে। চল, ూ -ృ\రి শৃঙ্খল Wobro দেখি, পাকুড়ে আনা যায় কিনা। বীণাকে ধরে আনতে পারলেই অবিশি হবে ।” অজয়ের কানের কাছে মুখ লইয়। রমাপ্রসাদ কহিল, “ইনি হচ্ছেন সুলতা দেবী । এর স্বামীকে আপনি চেনেন বোধ হয়, ডাক্তার প্রিয়গোপাল চট্টোপাধ্যায়, ব্যারিষ্টার, ডাবলিনের এলএল-ডি, অক্সফর্ডের বি-এ, বি-সি-এল, স্বভদ্রবাবুর কিরকম দূর সম্পর্কের ভাই । দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই আসলে অবিশুি বড় ...বাড়ীটা এদেরই তা জানেন বোধ হয় । ক্লাবের ঘরের জন্যে ভাড় একটা ঠিক করা আছে । প্রায় এক বছর হতে চলল, কিছুই আমরা এখনও দিয়ে উঠতে পারিনি যদিও - এত বড় একট। কাজে মাসে যাটটা টাকা বাড়ীভাড়াও যদি না জোটে তবে তার চেয়ে বড় কলঙ্ক দেশের ও সমাজের আর কি হ’তে পারে ? কাগজটা হ’লে প্রোপাগাণ্ড ক’রে দেখা যায় কিছু কাজ হয় কি না ।" বাহির হইতে পাল করিয়! সুলতার এবং সুভদ্রের কণ্ঠের অনেক কাকুতি-মিনতি কানে আসিতে লাগিল । বমাপ্রসাম কহিল, “আমি ক্লাবের সেক্রেটারী তা জানেন না নিশ্চয়ই । অবিশ্যি এরা থাকাতে আমার কাজের ভার অনেকখানিই হালকা হয়ে গিয়েছে। এদের এতই বেশ সৌজন্য যে বাড়াটা যে তাদেরই ক্লাবে এসেও সেট তারা ভূলতে পারেন না । বিশেষ ক’রে স্থলত দেবী । চেনা-অচেনা সমস্ত সভ্য-সভ্যাদের অতিথিঅভ্যাগত হিসেবেই তিনি সম্বৰ্দ্ধন ক’রে থাকেন।--ঐ আসছেন বোধ হয় আপনারই সন্ধানে । আচ্ছা বস্কন, আমি পালাই । ক্লাবের গত মাসের হিসেবটা আজ একটু দেখতে হবে ।” ততক্ষণ যুবকের দল ফরাস অধিকার করিয়া প্রায় উপাসনার ভঙ্গীতে গোল হইয়া বসিয়া গিয়াছে। গাড়ী-বারানা হইতে তরুণীরা আসিয়া পিয়ানোর দিক্কার চেয়ারগুলিতে বসিল, যাহার। বাকী রহিল তাহার পিয়ানোর উপর ঝু কিয় পিয়ানোবাদিনীর দুই পাশে এবং পিছনে ঘেষা-ধে ষি করিয়া সার দিয়া দাড়াইল । সুভদ্র করজোড়ে বিস্তর অকুনয়-বিনয় করিয়াও তাঁহাদের সেখান হইতে নড়াইতে পারিল না । তথন অগত্য গোটা